ক্যাপ্টেন(অবঃ)মারুফ রাজুঃ আমেরিকা প্রবাসী স্ত্রীর বিরুদ্ধে পরকীয়ার অভিযোগ তুলে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়ে চট্টগ্রামের এক তরুন চিকিৎসক ‘আত্মহত্যা’ করেছেন বলে জানিয়েছে পুলিশ। ওই চিকিৎসকের নাম ডাঃ মোস্তফা মোরশেদ আকাশ।
আজ বৃহস্পতিবার সকালে চট্টগ্রাম নগরীর চান্দগাঁও আবাসিক এলাকায় নিজ বাড়ি থেকে ওই চিকিৎসকের মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
মোস্তফার স্বজনদের বরাত দিয়ে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) ও হাসপাতালের পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ আলাউদ্দীন তালুকদার বলেন, ‘স্ত্রীর বিরুদ্ধে পরকীয়ার অভিযোগ এনে গত বুধবার রাতে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দেন মোস্তফা। এরপর আজ সকালে নিজ ঘরে তার মরদেহ পাওয়া যায়। তাৎক্ষণিকভাবে মোস্তফাকে হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।’
চিকিৎসক জানিয়েছেন, শরীরে ইনজেকশনের মাধ্যমে অতিরিক্তি ইনসুলিন পুশ করে মোস্তফা আত্মহত্যা করেছেন। তার শরীরে কোনো আঘাতের চিহ্ন নেই।
তরুন চিকিৎসক ডাঃ মোস্তফার ফেসবুক স্ট্যাটাস হুবহু তুলে ধরা হলো-
‘আমার সাথে তানজিলা হক চৌধুরী মিতুর ২০০৯ সাল থেকে পরিচয় প্রচণ্ড ভালবাসি ওকে । ও নিজেও আমাকে অনেক ভালবাসে আমরা ঘুরে বেড়াই, প্রেম করে বেড়াই আমাদের ভালবাসা কম বেশি সবাই জানে। অনেকে বউ পাগলাও ডাকত। ২০১৬ তে আমাদের বিয়ে হয় বিয়ের কয়েকদিন আগে জানতে পারি কিছুদিন আগে শোভন নামে চুয়েটের ০৮ ব্যাচের এক ছেলের সাথে ও হোটেলে রাত কাটায় আর কত কি লজ্জা লাগছে সব লিখতে। ততদিনে সবাইকে বিয়ের দাওয়াত দেওয়া শেষ আমাকে যেহেতু চট্টগ্রামের সবাই চিনে তাই বিয়ে ক্যান্সেল করতে পারিনি লজ্জাতে। ওর মোবাইল এ দেখি ভাইবারে দেখতে পাই মাহবুব নামে কুমিল্লা মেডিকেলের ব্যাচম্যাটের সাথে হোটেলে সেক্সের ছবি শতশত ছবি।
আমিতো বেঁচে থেকেও মৃত হয়ে গেলাম। তারপর ক্ষমা চাইলো শবে কদরের রাতে কান্না করে পা ধরে আর কখনো এমন হবে না। আমিও ক্ষমা করে দিয়ে ১ বছর ভালোভাবেই সংসার করলাম। তারপর ও দেশের বাইরে আমেরিকা গেল মাঝখানে একবার ঈদ পালন করতে আসল,সেপ্টেম্বরে ২০১৮ আবার চলে গেল ইউএসএমএলই এর প্রিপারেশন নিচ্ছিলো সাথে ফেব্রুয়ারিতে ২০১৯ এ আমার ইউএস এ যাওয়ার কথা। জানুয়ারি ২০১৯ জানতে পারি ও রেগুলার ক্লাবে যাচ্ছে, মদ খাচ্ছে প্যাটেল নামে এক ছেলের সাথে রাত কাটাচ্ছে। আমি বারবার বলছি আমাকে ভাল না লাগলে ছেড়ে দাও কিন্তু চিট করো না, মিথ্যা বলো না। আমার ভালোবাসা সবসময় ওর জন্য ১০০% ছিল।
আমি আর সহ্য করতে পারিনি। আমাদের দেশেতো ভালবাসায় চিটিং এর শাস্তি নেই। তাই আমিই বিচার করলাম আর আমি চির শান্তির পথ বেছে নিলাম। তোমাদেরও বলছি কাউকে আর ভাল না লাগলে সুন্দরভাবে আলাদা হয়ে যাও চিট করো না মিথ্যা বলো না। আমি জানি অনেকে বিশ্বাস করবে না এত অমায়িক মেয়ে আমিও এসব দেখে ভালোবেসেছিলাম। ভিতর বাহির যদি এক হতো। সবাই আমার দোষ দিবে সবকিছুর জন্য তাই ব্যাখ্যা করলাম।
আমার শাশুড়ি এর জন্য দায়ী এসবের জন্য, মেয়েকে আধুনিক বানাচ্ছে। একটু বেশি বানিয়ে ফেলেছে। উনি চাইলে এখনো সমাধান হতো।
ও মা তুমি মাফ করে দিও, তোমার স্বপ্ন পূরণ করতে পারলাম না। মায়ের ভালোবাসার কখনো তুলনা চলে না।
বারবার বলছি ভাল না লাগলে আলাদা হয় যাও চিট করো না,মিথ্যা বলো না বিশ্বাস ভাঙ্গিওনা।
হাজার হাজার ছবি আছে আরো খারাপ খারাপ দিলাম না যারা বিলিভ করবে এতেই করবে, না করলে নাই। এই ৯ বছরে বয়ফ্রেন্ড স্বামী-স্ত্রীর মতো আমার সাথে সবই করে গেল।
ও আমাকে আর কি ভালোবাসলো? কিসের বিয়ে করলো? আমি শেষ পর্যন্ত চাইছি সব চুপ রেখে সমাধান করে ওকে নিয়ে থাকতে। আমার শ্বশুর আর শাশুড়িকে বারবার বলছি উনারা সমাধান করতে পারত! আমার মৃত্যুর জন্য দায়ী আমার বউ, ৯টা বছর যাকে ১০০% ভালোবাসছি, ওকে প্ররোচনা দিছে মইন মিথি নামে দুই ফ্রেন্ড ওর মা বাবা আমাকে মানসিক কষ্ট দিয়ে মারছে। আমার এই বেঈমানি মেনে নিতে পারি নাই। তারপরও ভুলে আমি সুন্দর সংসার করতে চাইছি আমার শাশুড়ি শ্বশুর আর বউ নামের কলঙ্ক করতে দিল না। আমাকে প্রতিনিয়ত প্রেশার দিয়ে গেছে আমার বউ, আমার মার নামে যাতা বলে গেছে।
আমাকে ভাল না লাগ্লে ছেড়ে চলে যাইতে বলছি ১০০ বার। আমি বোকা ছিলাম তুমি সুখে থেকো। অনেকে ওর ফ্যান, বিলিভ করবে না আমি জানি। তবে এটাই সঠিক মরার আগে কেউ মিথ্যা বলে না আর বাইরে থেকে মানুষের ভিতরের চেহারা বোঝা যায় না। ও সুন্দরী, পড়ায় ভাল, গান পারে সত্য কিন্তু ও ভালো অভিনেত্রী ভালো চিটার। যাদের ইচ্ছা বিলিভ করবে যাদের ইচ্ছা নাই করবে না। তবে কাউকে ভালোবেসে চিটারগিরি করো না।’