ক্যাপ্টেন(অবঃ)মারুফ রাজুঃ এই প্রথম একাদশ সংসদ নির্বাচনের প্রবল সমালোচনামূলক মূল্যায়ন এসেছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের জোট শরিক দল বাংলাদেশ জাসদের কাছ থেকে।
দলটি বলেছে, প্রশাসনের অতি উৎসাহী অংশ এই নির্বাচনকে চরম ভাবে কলঙ্কিত করেছে।
গত ১ ও ২ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশ জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের ( বাংলাদেশ জাসদ) জাতীয় কমিটির সাধারণ সভায় এই নির্বাচনকে এভাবে মূল্যায়িত করা হয় বলে দলটির এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে।
গত ৩০ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ভোট ডাকাতি হয়েছে বলে বিএনপি ও তাদের জোটসঙ্গীরা অভিযোগ তুললেও আওয়ামী লীগ বলছে, নির্বাচন ছিল অবাধ ও সুষ্ঠু।
বাংলাদেশ জাসদের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে তাদের সভার মূল্যায়ন তুলে ধরে বলা হয়, “দেশের সকল রাজনৈতিক দল ও জনগণ উদ্দীপনা ও আশা নিয়ে অংশগ্রহণ করলেও নির্বাচনের পরে বিষন্নতায় আক্রান্ত হয়েছে গোটা জাতি। এর মূল কারণ হচ্ছে প্রশাসনের এক শ্রেণির অতি উৎসাহী অংশ ভোটের পূর্ব রাত্রেই ভুয়া ভোটের মাধ্যমে ব্যালট বাক্স ভর্তি করে রাখাসহ নানা অনিয়ম সংঘটিত করেছে।”
আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে মহাজোটের জয় এই নির্বাচনে ‘নিশ্চিত’ ছিল দাবি করে বাংলাদেশ জাসদ বলেছে, “জনগণের ভোটের মাধ্যমে ১৪ দল তথা মহাজোটের নিশ্চিত বিজয় জেনেও যে মহল বিশেষ এ অপকর্ম সংঘটিত করেছে, গণতন্ত্রের ধারাবাহিকতা রক্ষার স্বার্থেই তাদের চিহ্নিত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া প্রয়োজন।
“কেননা এ কলঙ্কিত ঘটনার মাধ্যমে নির্বাচিত সরকারকে জনগণের মুখোমুখি দাঁড় করানো হয়েছে। এ কলঙ্কের দাগ মুছতে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। ভবিষ্যতে এ ধরনের নির্বাচনের পুনরাবৃত্তি যেন না ঘটে, তা নিশ্চিত করতে হবে।”
ঢাকার তোপখানা রোডে বাংলাদেশ শিশু কল্যাণ পরিষদ মিলনায়তনে বাংলাদেশ জাসদের সভাপতি শরীফ নুরুল আম্বিয়ার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এই সভায় বক্তৃব্য রাখেন দলের কার্যকরী সভাপতি মইনউদ্দীন খান বাদল, সাধারণ সম্পাদক নাজমুল হক প্রধান, স্থায়ী কমিটির সদস্য মুশতাক হোসেন, মোহাম্মদ খালেদ, আনোয়ারুল ইসলাম বাবু, নাসিরুল হক নওয়াব, মঞ্জুরুল হক মঞ্জু; সহ-সভাপতি আবু মো. হাশেম, কলন্দর আলী, গিয়াসউদ্দিন আহমেদ, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক করিম সিকদার, আবুল কালাম আজাদ বাদল, সাংগঠনিক সম্পাদক রফিকুল হক খোকন, বীণা শিকদার, হোসাইন আহমদ তফসির প্রমুখ।
সভায় দলীয় প্রতীকে উপজেলা পরিষদসহ সকল স্থানীয় সরকার নির্বাচন পদ্ধতি বাতিলের দাবি জানানো হয়।
এ দাবিতে বাংলাদেশ জাসদ আগামী ৭ ফেব্রুয়ারি দেশব্যাপী মানববন্ধন, সভা, শোভাযাত্রা, মত বিনিময় প্রভৃতির মাধ্যমে ‘দলীয় মার্কামুক্ত স্থানীয় সরকার নির্বাচন দিবস’ পালন করবে।
এছাড়া ১৬ ফেব্রুয়ারি দলের প্রয়াত নেতা কাজী আরেফ স্মরণে ‘কাজী আরেফ দিবস’ পালনের সিদ্ধান্তও নিয়েছে বাংলাদেশ জাসদ।
সভা থেকে আগামী অক্টোবরের আগে জেলা সম্মেলন এবং নভেম্বররে কেন্দ্রীয় সম্মেলন করার সিদ্ধান্তও নিয়েছে দলটি।