DMCA.com Protection Status
title="৭

এবার অভিন্ন নদীর পাকিস্তান মুখি পানির প্রবাহ বন্ধের হুমকি দিলো ভারত।

ক্যাপ্টেন(অবঃ)মারুফ রাজুঃ  এবার আন্তর্জাতিক আইননের বরখেলাপ করে পাকিস্তানি নদীর পানি প্রবাহ বন্ধ করে দেয়ার হুমকি দিয়েছে ভারত। দেশটির চিরশত্রু পাকিস্তানের নদীর পানি প্রবাহ বন্ধ করে দেয়ার হুমকি দিয়েছেন ভারতীয় পানিসম্পদ মন্ত্রী নিতিন গডকড়ি। খবর এনডিটিভি ও ইকোনমিক টাইমসের।

 

বৃহস্পতিবারই কেন্দ্রীয় জলসম্পদ মন্ত্রী নিতিন গডকড়ি হুশিয়ারি দিয়েছিলেন, ভারতের পেটের ভেতর দিয়ে বয়ে চলা পাকিস্তানের বড় তিনটি নদীর জলপ্রবাহ বন্ধ করে দেয়া হবে। শুক্রবার সেটাই আরও স্পষ্ট করলেন ভারতীয় মন্ত্রী। তিনি বললেন, ‘তিন নদীর জল বন্ধ করে ভারতের দিকে ঘুরিয়ে দেয়ার জন্য সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনার নির্দেশ দেয়া হয়েছে মন্ত্রণালয়কে। সেই অনুযায়ী কাজও শুরু হয়ে গিয়েছে। পরিকল্পনার রূপরেখা চূড়ান্ত হলেই প্রধানমন্ত্রীর দফতরে জানানো হবে। সবুজ সঙ্কেত পেলেই দ্রুত কাজ শুরু করা হবে।’

এর আগে কাশ্মীরের পুলওয়ামায় হামলার পরদিনই পাকিস্তানি পণ্যের আমদানি শুল্ক ২০০ শতাংশ বাড়িয়ে দিয়েছিল ভারত। তুলে নিয়েছে মোস্ট ফেভার্ড নেশন (এমএফএন) মর্যাদাও। পাকিস্তানকে একঘরে করার প্রচার চালাচ্ছে সারাবিশ্বে। সেনাবাহিনীতেও শুরু হয়েছে যুদ্ধপ্রস্তুতি। ১৪০টি যুদ্ধবিমান নিয়ে পরদিন রাতেই পাক-সীমান্তে মহড়া চালায় বিমানবাহিনী।

১৪ ফেব্রুয়ারি ওই হামলার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই পাকিস্তানে পাল্টা হামলার অনুমোদন দেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি নিজেই।

ভারতের হুমকি নিয়ে মাথা ব্যাথা নেই পাকিস্তানের

নদীর পানি প্রবাহ বন্ধের ভারতের এই শেষ অস্ত্রেও একচুলও কাবু হয়নি পাকিস্তান। এত বড় হুমকিতেও কার্যত নিরুত্তাপ।

পাকিস্তানের প্রভাবশালী দৈনিক ডন জানিয়েছে, এ নিয়ে বিরোধিতা করবে না ইসলামাবাদ। পাক পানিসম্পদ মন্ত্রালয়ের সচিব খাওয়াজা শুমাইলকে বরাত দিয়ে ডন জানায় , ‘এ নিয়ে কোনও মাথাব্যথা নেই পাক সরকারের । আন্তর্জাতিক পানিচুক্তি যদি তিন নদীর জল পাকিস্তানের দিকে আসা বন্ধ করে ভারতে ঘুরিয়ে দেওয়া সমর্থন করে, তাহলে তাঁদের কোনও আপত্তি নেই।’

টুইট বার্তায় পানিসম্পদ মন্ত্রালয়ের সচিব খাওয়াজা শুমাইল কর্মকর্তা জানান ‘কেন্দ্রীয় সরকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে যে পাকিস্তানে যে পানি সরবরাহ করা হতো এবার থেকে তা যাওয়া বন্ধ করে দেয়া হবে। আমরা পূর্ব পাড়ের নদীগুলির পানির দিক পরিবর্তন করে দিয়ে তা জম্মু-কাশ্মীর ও পাঞ্জাবের বাসিন্দাদের সরবরাহ করবো।’

তিনি আরও জানিয়েছেন ‘রবি নদীর ওপর শাহপুর-কান্দিতে বাঁধ নির্মাণের কাজ শুরু হয়েছে। সর্বোপরি উঝ প্রকল্পের মাধ্যমে আমাদের নদীর পানি জম্মু-কাশ্মীরের কাজে ব্যবহারের জন্য সংরক্ষণ করা হবে এবং রবি-বিপাশা নদীর বাকী পানি অন্য রাজ্যেও পাঠানো হবে।’

উপরের সমস্ত প্রকল্পই জাতীয় প্রকল্প হিসাবে ঘোষণা দেয়া হয়েছে বলেও টুইটে জানান তিনি।

সিন্ধুর উপত্যকায় মোট ৬টি নদী রয়েছে। ভৌগোলিক অবস্থানের কারণে তিনটিই ভারতের দিক থেকে পাকিস্তানে প্রবাহিত। এর মধ্যে পূর্ব দিকে রয়েছে ইরাবতী, শতদ্রু এবং বিপাশা।

পশ্চিম দিকের তিনটি নদী হল সিন্ধু, বিতস্তা এবং চন্দ্রভাগা। এই ছ’টি নদীর জলবণ্টন নিয়েই ১৯৬০ সালে ভারতের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহরু এবং পাক প্রেসিডেন্ট আয়ুব খানের মধ্যে চুক্তি হয়। সেটাই সিন্ধু জলবণ্টন চুক্তি।

এই চুক্তি অনুযায়ী, পশ্চিমের তিন নদী সিন্ধু, ঝিলম এবং চন্দ্রভাগার জল ব্যবহারের অধিকার পাকিস্তানের। এবং ভারতীয় ভ‚খণ্ডে কোনও ভাবেই ওই তিন নদীর প্রবাহে অন্তরায় বা প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করতে পারবে না ভারত। অন্য দিকে পূর্ব দিকের ইরাবতী, শতদ্রু এবং বিপাশা নদীর জল ব্যবহারের অধিকার ভারতের।

Share this post

scroll to top
error: Content is protected !!