ক্যাপ্টেন(অবঃ)মারুফ রাজুঃ ভারতের লোকসভা নির্বাচনের প্রথম দফা ভোট শুরুর আগে চরম উচ্ছ্বসিত ছিল বিজেপি। ছিল মোদি হাওয়ায় ভর করে আবারও ক্ষমতার মসনদে বসার অপেক্ষায়।
দিল্লিতে বিজেপির এক নেতা তো দাবি করে বসলেন, প্রথম দফার ৯১ আসনের মধ্য থেকে গতবারের চেয়ে আরও চারটি আসন বেশি পাচ্ছে দল। ২০১৪ সালে বিজেপি ওই ৯১ আসনের মধ্যে জিতেছিল ৩২টিতে। এবার পাচ্ছে ৩৬টি। গত দুই দিন ধরে গেরুয়া শিবিরে এমন হিসাব ছিল।
আনন্দবাজার পত্রিকা বলছে, এক দিনের মধ্যেই বিজেপি শিবিরের ছবিটা অনেক পাল্টে গেছে। শুক্রবারও অনেক রাত পর্যন্ত জেগেছেন নেতারা। যে ১৮টি রাজ্য ও ২ কেন্দ্র শাসিত অঞ্চলে ভোট হয়েছে, সব জায়গা থেকে রিপোর্ট সংগ্রহ করেছেন। তার ভিত্তিতে এখন আর কোনো আসনের দাবি করছে না বিজেপি। অর্থ্যাৎ, প্রাথমিক লক্ষণ আদৌ বিজেপির পক্ষে স্বস্তির নয়।
এ প্রসঙ্গে দলের এক নেতার ব্যাখ্যা, ‘অধিকাংশ রাজ্যে গত লোকসভার থেকে কম ভোট পড়েছে। গতবারের ভোটে মনমোহন সিং সরকারকে সরিয়ে নরেন্দ্র মোদিকে ক্ষমতায় আনার একটি তাগিদ ছিল জনতার মধ্যে। মোদি-ঝড় ছিল গোটা দেশে। কিন্তু এবারে তেমন কোনো ঝড় কোথাও বইছে না। মোদিকে পরাস্ত করতে হবে, এমন ভাবনাও তেমন নেই। কিন্তু দেশজুড়ে মোদির পক্ষে জোরালো হাওয়া না থাকায় স্থানীয় বিষয়গুলো বড় হয়ে উঠেছে। স্থানীয় জাতপাতের অঙ্ক বড় ফ্যাক্টর হয়ে দাঁড়িয়েছে।’
ভোট শুরুর আগে থেকেই ভোটারদের বুথমুখী করতে জোর চেষ্টা চালিয়েছেন মোদি-অমিতরা। আরএসএসও মাঠে নেমে কাজ করেছে। কিন্তু প্রথম দফার ভোটের গতিপ্রকৃতি দেখে বিজেপি শিবিরে অনেকেই মনে করছেন, ভোটারদের বুথ পর্যন্ত নিয়ে যেতেও সক্ষম হচ্ছে না বিজেপি ও সংঘের কর্মীরা।
‘বিজেপি ইনসাইডার’ নামে একটি টুইটার অ্যাকাউন্ট রয়েছে দলের, যেটি সাধারণত বিজেপির অন্দরের খবর দেয়। তাদের অনুমান অনেক সময় মিলেও যায়। ওই টুইটার থেকেই একটি টুইটে বলা হয়, দলের সাম্প্রতিকতম অভ্যন্তরীণ সমীক্ষা অনুযায়ী, গোটা দেশে বিজেপি ১৫০-১৬০টি আসন পেতে পারে। দলের সব থেকে বেশি লোকসান হবে উত্তরপ্রদেশ, বিহার ও মহারাষ্ট্রে।
কংগ্রেস ঠিক এই ভবিষ্যৎবাণীটিই বহু দিন ধরে করে আসছে। তাদের মতে, গত ভোটে পাওয়া বিজেপির ২৮২টি আসন থেকে এক ধাক্কায় শ’খানেক কমে গেলে এনডিএর শরিকদের নিয়েও সরকার গড়তে পারবেন না মোদি।