ক্যাপ্টেন(অবঃ)মারুফ রাজুঃ অবৈধ ভাবে ক্ষমতাসীন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের জাতীয় নির্বাচন পরিচালনা কমিটির কো-চেয়ারম্যান এইচ টি ইমাম বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে উপজেলা নির্বাচনে প্রশাসন ও পুলিশ একেবারে নিরপেক্ষভাবে পক্ষপাতহীনভাবে নির্বাচন পরিচালনায় সহায়তা করেছে।
নির্বাচন কমিশনে (ইসি) আজ রোববার বিকেলে সংসদ নির্বাচনে নিজ দলের ব্যয়ের হিসাব জমা দেওয়ার পর সাংবাদিকদের তিনি এসব কথা বলেন।
উপজেলা নির্বাচনের অনিয়ম নিয়ে কোনো কথা হয়েছে কি না?
এমন প্রশ্নের জবাবে এইচ টি ইমাম বলেন, ‘উপজেলা নির্বাচনে আমাদের দলের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা স্পষ্ট বলে দিয়েছিলেন, প্রশাসন এবং পুলিশ এরা কেউই কোনো রকম কোনো নির্বাচনে কোনো প্রভাব খাটাবেই না। এই বার্তাটি সবার কাছে চলে গেছে যে, তাঁরা একেবারে নিরপেক্ষভাবে পক্ষপাতহীনভাবে নির্বাচন পরিচালনায় সহায়তা করবেন। এই কাজটি তাঁরা করেছেন এবং নির্বাচন কমিশন সে জন্য অত্যন্ত সন্তুষ্ট।’
অনেক সংসদ সদস্য নৌকার প্রার্থীর বিপক্ষে ভোট চেয়েছেন, এ নিয়ে দলের অনেকের কাছে ব্যাখ্যাও চাওয়া হয়েছে বলে জানান এইচ টি ইমাম।
প্রধানমন্ত্রীর এ রাজনৈতিক উপদেষ্টা বলেন, 'আমরা আজকে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দলের আয়-ব্যয়ের হিসাব দাখিল করলাম। বাঙালির মুক্তিসংগ্রাম ও বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে নেতৃত্বদানকারী বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ আইনের শাসনে বিশ্বাসী একটি রাজনৈতিক দল। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ দেশের সর্বোচ্চ আইন সংবিধানসহ প্রচলিত সব আইন ও বিধিবিধানের প্রতি সব সময় শ্রদ্ধাশীল। আমরা মনে করি কেউই আইনের ঊর্ধ্বে নয়। রাজনৈতিক দলসহ দেশের সব ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানেরই রাষ্ট্র ও রাষ্ট্রীয় কর্তৃপক্ষের কাছে জবাবদিহি থাকা প্রয়োজন।'
এইচ টি ইমাম বলেন, 'নির্বাচনসংক্রান্ত সাংবিধানিক রেগুলেটরি কর্তৃপক্ষ নির্বাচন কমিশনের কাছে সব রাজনৈতিক দলের জবাবদিহি রয়েছে। আরপিও অনুযায়ী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণকারী সব রাজনৈতিক দলকে নির্বাচন কমিশনের কাছে নির্বাচনী ব্যয়ের হিসেব দাখিল করতে হয়। সব সংসদীয় আসনের নির্বাচন সম্পন্ন হওয়ার ৯০দিনের মধ্যে এই হিসাব দাখিল করার বিধান রয়েছে। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দলের ব্যয় নির্বাচন কমিশনে দাখিল করেছি। দলের প্রার্থীরা আইনের বিধানমতে ইতিমধ্যে স্ব স্ব রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে ব্যয়ের হিসাব দাখিল করেছেন।’
কত টাকা ব্যয়ের হিসাব জমা দিলেন?
জানতে চাইলে এইচ টি ইমাম বলেন, 'এটি এখন নির্বাচন কমিশনের সম্পত্তি। এটার পাবলিক ডকুমেন্ট তাদের কাছ থেকে পেয়ে যাবেন। ইসির ওয়েবসাইটেই পেয়ে যাবেন।'
এইচ টি ইমাম বলেন, ‘২০০৮ থেকে ২০১৪ সালে নির্বাচনী ব্যয় কিছুটা বেড়েছিল। প্রতিবারই খরচ আরও বাড়ে। অন্যান্য বছর যেসব প্রার্থী নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন, তাঁদের অনেককেই আর্থিক সহায়তা দেওয়া হয়েছে। এবারে আর সেটি করা হয়নি। সেদিক থেকে আমাদের ব্যয় কম। আবার এবারে আমরা আয় পেয়েছি বেশি, অনেকেই অনুদান দিয়েছেন।'
এইচ টি ইমামের নেতৃত্বে প্রতিনিধিদলে দলটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ, শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি, কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য এ বি এম রিয়াজুল কবীর কাউছার প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের ব্যয় হয়েছে ২ কোটি ৫৩ লাখ ৯২ হাজার ৭১২ টাকা। আর নবম সংসদ নির্বাচনে ব্যয় হয়েছিল ৩ কোটি ৬০ লাখ ২৬ হাজার ৯৭৪ টাকা। একাদশ সংসদে ১ কোটি ৫ লাখ টাকার মতো ব্যয় হয়েছে।