ক্যাপ্টেন(অবঃ)মারুফ রাজুঃ প্রায় ২০ বছর একসঙ্গে থাকার পর বিএনপি নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোট ছেড়েছে আন্দালিব রহমান পার্থর বাংলাদেশ জাতীয় পার্টি (বিজেপি)। সোমবার সন্ধ্যায় পার্থ একটি জাতীয় পত্রিকাকে ফোন করে জোট ছাড়ার কথা জানান। তিনি বলেন, ‘এইমাত্র আমার দল ২০–দলীয় জোট থেকে বেরিয়ে গেল।’ জোট ছাড়া নিয়ে বিজেপি একটি বিবৃতিও পাঠিয়েছে।
জানা গেছে, আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে মন্ত্রী বানানোর অফার পাওয়ার পরই ২০ দলীয় জোট ছাড়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন আওয়ামী লীগের সঙ্গে ঘনিষ্ট পারিবারিক বন্ধনে আবদ্ধ পার্থ। শীগ্রই তিনি আওয়ামী লীগে যোগ দিতে পারেন। তারপরই তাকে টেকনোক্রেট মন্ত্রী বানানো হতে পারে।
১৯৯৯ সালে চার দলীয় জোটের সঙ্গে এবং পরে ২০–দলীয় জোটভুক্ত হয়ে রাজনীতি করে আসছিল বিজেপি। জোট ছাড়ার কারণ হিসেবে বিবৃতিতে বিজেপি বেশ কয়েকটি কারণ উল্লেখ করেছে। পার্থ বলেছেন, জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট গঠিত হওয়ার পর ২০–দলীয় জোট স্থবির হয়ে যায় এবং রাজনীতি ঐক্যফ্রন্টমুখী হয়ে পড়ে। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে সরকারের সঙ্গে সংলাপে বিএনপি বাদে ২০ দলের অন্য কারও সম্পৃক্ততা ছিল না। বিজেপির অভিযোগ, সংহতি ও সহমত পোষণের জন্যই ২০ দলের সভা ডাকা হতো।
জানা যায়, শেখ সেলিমের বোনের স্বামী হলেন পার্থর বাবা বিজেপির প্রতিষ্ঠাতা ও এরশাদ সরকারের সাবেক মন্ত্রী প্রয়াত নাজিউর রহমান মঞ্জুর। যিনি পরে বিএনপির নেতৃত্বাধীন চারদলীয় জোটে যোগ দেন। মঞ্জুর সম্পর্কে শেখ হাসিনার ফুফাতো বোনের স্বামী। মঞ্জুরের দুই ছেলে বিজেপির চেয়ারম্যান ব্যারিস্টার আন্দালিব রহমান পার্থ ও ডা. আশিকুর রহমান শান্ত।
শেখ মুজিবের ছোট ভাই ছিলেন শেখ নাসের। তার ছেলে হলেন বাগেরহাট-১ আসনের আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য শেখ হেলাল। তার মেয়ের জামাই হলেন ব্যারিস্টার আন্দালিব রহমান পার্থ। শেখ সেলিম ব্যারিস্টার পার্থের মামা ও শেখ হেলাল পার্থের শ্বশুর।
এদিকে পার্থর ২০ দলীয় জোট ছাড়ার পর তীব্র মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। কেউ তার সিদ্ধান্তকে সঠিক বলছেন, কেউ আবার বলছেন জোটের ক্রান্তিকালে এটা তার সুবিধাবাদি সিদ্ধান্ত। কেউ বলছেন বিএনপি ও গণফোরাম নেতারা নির্বাচন বয়কট করলেও সংসদে যোগ দেওয়ায় হতাশ হয়ে তিনি জোট ছেড়েছেন। তবে বিশ্বস্ত সূত্র মারফত জানা গেছে তিনি ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ থেকে মন্ত্রী হওয়ার অফার পেয়েই বিএনপি জোট ছেড়েছেন।
আওয়ামী লীগ নেতা তোফায়েল আহমেদের ভোলার আসনের প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী পার্থকে নিয়ে মোশারফ হোসাইন নামে একজন ফেসবুকে লিখেছেন, ‘তোফায়েলের শারীরিক অবস্হা তেমন ভালো না। এটাই তার শেষ সুযোগ, ভোলার ঐ এলাকার স্হায়ী টিকেট নেওয়ার। যদি আওয়ামী লীগ দয়া করে তাকে এই সুযোগ দেয়।’
মোঃ এমরান হোসেন সোহাগ নামে আর একজন লিখেছেন, ‘পার্থ জোট ছাড়ছে বলে বলছি না সে একটা মাইক পাইলে বা টিভি ক্যামেরা পাইলে তার দেশ প্রেম বাইড়া যায়! বাস্তবে তার বা তার দলের সাথে জনগনের কোন সম্পকই নাই।’
মোহাম্মদ হিরু নামে অন্য একজন লিখেছেন, ‘সঠিক সিদ্ধান্ত, পার্থ সাহেব কে বলব যদি আপনার রাজনিতি করার ইচ্ছা থাকে, তাহলে নিজ থেকে চেস্টা করুন। আপনি পাকিস্তানের ইমরান খানকে দেখে শিখুন।’