ক্যাপ্টেন(অবঃ)মারুফ রাজুঃ সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও দলীয় চেয়ারপারসন দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে রয়েছেন বলে অভিযোগ করেছে বিএনপি।
দলের চেয়ারপারসনকে জামিন না দিয়ে কারাগারে রাখা সম্পূর্ণরুপে সংবিধান ও মানবাধিকার পরিপন্থী বলে দাবি করা হয়েছে। একইভাবে অন্যায় এবং অবিচারের চরম বহিঃপ্রকাশের অশুভ উদ্দেশেই কেরানীগঞ্জের কারাগারে আদালত বসানো হচ্ছে বলেও দলটি অভিযোগ করেছে।
শনিবার রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ অভিযোগ করেন দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার জমিরউদ্দিন সরকার। এ সময় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, নজরুল ইসলাম খান, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, ভাইস চেয়ারম্যান ডা. এ জেড এম জাহিদ, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আব্দুস সালাম, নির্বাহী সদস্য ব্যারিস্টার মীর হেলালসহ আরও অনেকে উপস্থিত ছিলেন।
ব্যারিস্টার জমিরউদ্দিন সরকার বলেন, সর্বশেষ বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্য পরীক্ষায় জানা গেছে, ইনস্যুলিন ব্যবহারের পরেও ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ হচ্ছে না। তা বিপজ্জনক মাত্রায় অবস্থান করছে। ইতোমধ্যে তার মুখে ক্ষতের সৃষ্টি হয়েছে। এই ক্ষতের জন্য মুখের প্রচণ্ড ব্যথায় তিনি স্বাভাবিক খাওয়া-দাওয়া করতে পারছেন না। জাউ খেয়ে কোনরকমে জীবনধারন করছেন। এছাড়াও অনেক আগে থেকেই তিনি বাম কাঁধ ও হাতের ব্যাথায় ভুগতেন। এখন সেই ব্যাথা ডান কাঁধ ও হাতেও সম্প্রসারিত হয়ে মারাত্মক রূপ ধারণ করেছে। তিনি এখন দুই হাতেই নিদারুণ যন্ত্রণা ভোগ করছেন। কারাগারের দূষণযুক্ত পরিবেশে খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্য, সুস্থতা ও জীবন সবই অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠেছে। খালেদা জিয়া এখন জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে।
তিনি বলেন, নির্জন, নিঃসঙ্গ, নিরাপত্তাহীন পরিবেশের কারণে নিদ্রাহীনতা, উদ্বেগ, বিষন্নতাসহ মানসিক রোগাক্রন্ত হয়ে পড়ার সম্ভাবনা বহুগুণ বৃদ্ধি পায়। বিরূপ, নিপীড়নমূলক পরিবেশ ও অস্বাভাবিক মানসিক চাপের ফলে তার আকস্মিক হৃদরোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকিও বহুগুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। মারাত্মক জীবন-বিনাশী জীবানু দ্বারা ফুসফুসের সংক্রমন বা নিউমোনিয়ার সম্ভাবনা বেশ প্রবল হয়ে উঠেছে। এ ছাড়াও কারাগারে থাকার সময় সেখানকার পরিবেশের জন্য ভয়ংকর মাত্রার ভিটামিন-ডি ও ক্যালসিয়ামের শুন্যতা দেখা দিয়েছে, যা তার হাড়ের জন্যে মারাত্মক পরিণতি ডেকে আনতে পারে। এভাবে খালেদা জিয়াকে শারীরিক ও মানসিকভাবে নির্যাতন করে এক শোচনীয় পরিনতির দিকে ঠেলে দেওয়া হচ্ছে।
ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ বলেন, খালেদা জিয়া অত্যন্ত অসুস্থ। তাকে হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। এমতাবস্থায় তাকে কেরানীগঞ্জের কারাগারে নেওয়ার ষড়যন্ত্র চলছে। এটি মেনে নেওয়া হবে না। এটি মানবতাবিরোধী কাজ।
আন্দোলন না করে সংবাদ সম্মেলন করে খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবি জানালে ক্ষমতাসীন দল ব্যবস্থা নেবে কিনা সাংবাদিকদের- এমন প্রশ্নের জবাবে মির্জা আব্বাস বলেন, ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগকে কীভাবে কথা শোনাতে হয় সে ব্যবস্থাও এক সময় করব। প্যারোলে মুক্তির বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, প্যারোলের কোনো চিন্তা-ভাবনা নেই।