DMCA.com Protection Status
title="শোকাহত

সুইস ব্যাংকে বাংলাদেশীদের টাকা বাড়ছেঃ বর্তমান স্থিতি ৫৩৪৩ কোটি টাকা।

 ক্যাপ্টেন(অবঃ)মারুফ রাজুঃ সুইজারল্যান্ডের ব্যাংকগুলোতে বাংলাদেশীদের আমানতের পরিমাণ এই বছর আবার বেড়েছে। আগের বছর কমলেও ২০১৮ সালে সুইজ্যারল্যান্ডের ব্যাংকগুলোতে বাংলাদেশিদের আমানতের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে পাঁচ হাজার ৩৪৩ কোটি টাকা। আগের বছর ছিল চার হাজার ৬৯ কোটি টাকা। অর্থাৎ এক বছরে এত হাজার ২৭৪ কোটি টাকা বেড়েছে।

সুইজ্যারল্যান্ডের কেন্দ্রীয় ব্যাংক সুইস ন্যাশনাল ব্যাংকের (এসএনবি) ‘ব্যাংকস ইন সুইজ্যারল্যান্ড’ শীর্ষক প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে। গতকাল বৃহস্পতিবার প্রতিবেদনটি প্রকাশ করা হয়।

এ প্রসঙ্গে বাংলাদেশ ফিন্যানশিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের (বিআইএফইউ) প্রধান আবু হেনা মোহা. রাজী হাসান  বলেন, ‘এই অর্থের সবই যে অবৈধভাবে গেছে, তা বলা যাবে না। তবে কারো টাকা যদি সেখানে থাকে, সেটা নিয়ে এখানে তদন্ত হয়। আর তদন্তে কোনো তথ্য দরকার পড়লে এগমন্ট গ্রুপের সদস্য হিসেবে আমরা ওই দেশে চিঠি লিখি। তখন তারা দেখে, কার কী আছে না আছে।’

এসংক্রান্ত তথ্য কখনো চাওয়া হয়েছে কি না—এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘এর আগেও নিয়মিত লিখেছি। তবে নির্দিষ্ট ইস্যুতে কারো তথ্য অসম্পূর্ণ থাকলে তারা তা দিতে পারে না। আবার অনেক ক্ষেত্রে তারা তথ্য দিতে অপারগতাও প্রকাশ করে।’ এগমন্ট গ্রুপ হলো বিশ্বের বিভিন্ন দেশের ফিন্যানশিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের (এফআইইউ) সমন্বয়ে গঠিত একটি আন্তর্জাতিক ফোরাম, যারা মানি লন্ডারিং ও সন্ত্রাসে অর্থায়নসংক্রান্ত তথ্য নিয়ে কাজ করে।

তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা ড. এ বি মির্জ্জা আজিজুল ইসলাম বলেন, ‘বাংলাদেশ থেকে অর্থপাচারের মূল কারণ দুটি। প্রথমত, অনেকে এখানে অর্থ রাখা নিরাপদ মনে করেন না। দ্বিতীয়ত, বিনিয়োগবান্ধব পরিবেশ নেই।’

সুইজ্যারল্যান্ডের ব্যাংকগুলোর গ্রাহকদের তথ্য সাধারণত গোপন রাখা হয়। তবে আন্তর্জাতিক চাপে কিছু কিছু তথ্য এখন প্রকাশ করে দেশটির কেন্দ্রীয় ব্যাংক। তাদের প্রতিবেদনে উল্লেখ থাকে, কোন দেশের নাগরিকদের কত অর্থ জমা আছে। কিন্তু আলাদা করে কোনো ব্যাংক হিসাবের তথ্য প্রকাশ করা হয় না। সুইজারল্যান্ডে ব্যাংকের সংখ্যা ২৪৮।

গতকাল বৃহস্পতিবার এসএনবির ওয়েবসাইটে প্রকাশিত প্রতিবেদনে দেখা যায়, বাংলাদেশীদের আমানত দাঁড়িয়েছে ৬১ কোটি ৭৭ লাখ সুইস ফ্রাঁ; বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় পাঁচ হাজার ৩৪৩ কোটি টাকা।

সুইস কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ঘোষণা অনুযায়ী, নাগরিকত্ব গোপন রেখেছে—এমন বাংলাদেশিদের জমা রাখা অর্থ এই হিসাবের মধ্য রাখা হয়নি। গচ্ছিত সোনা কিংবা মূল্যবান সামগ্রীর আর্থিক মূল্যমানও হিসাবের বাইরে রাখা হয়েছে।

পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ২০১৬ সাল পর্যন্ত টানা ছয় বছর সুইস ব্যাংকে বাংলাদেশিদের আমানত বাড়ে। ২০১৭ সালে খানিকটা কমলেও এবার আবার বেড়েছে।

এদিকে ওয়াশিংটনভিত্তিক গবেষণাপ্রতিষ্ঠান গ্লোবাল ফিন্যানশিয়াল ইন্টিগ্রিটির (জিএফআই) এক প্রতিবেদন দেখা যায়, বাংলাদেশ থেকে ২০১৫ সালেই ৫৯১ কোটি ৮০ লাখ ডলার পাচার হয়েছে। আর ২০০৬ থেকে ২০১৫ সাল পর্যন্ত পাচার হয়েছে ছয় হাজার ৩২৮ কোটি ডলার।

Share this post

scroll to top
error: Content is protected !!