ক্যাপ্টেন(অবঃ)মারুফ রাজুঃ কাশ্মীর ইস্যু ভারতের অভ্যন্তরীণ বিষয়, এ নিয়ে বাংলাদেশে কেউ জলঘোলা করার চেষ্টা করলে আইন অনুযায়ী কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র্যাব) মহাপরিচালক বেনজীর আহমেদ।
শুক্রবার (৯ আগস্ট) দুপুরে রাজধানীর কারওয়ান বাজারে র্যাব মিডিয়া সেন্টারে ঈদ উপলক্ষে নেওয়া নিরাপত্তা ব্যবস্থার বিষয়ে জানাতে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা জানান।
কাশ্মীর ইস্যুতে দেশে উগ্রবাদে বিশ্বাসীরা মাথাচাড়া দিয়ে উঠতে পারে কি-না জানতে চাইলে র্যাব মহাপরিচালক বলেন, কাশ্মীর ইস্যু ভারতের অভ্যন্তরীণ বিষয়। এ নিয়ে আমাদের কোনো মন্তব্য নেই। আমাদের দেশে ‘আল্ট্রা-ইসলামিস্টের’ সংখ্যা খুব বেশি নয়। তারা ২৪ ঘণ্টাই আমাদের নজরদারিতে রয়েছে।
‘যে বিষয়টা আমাদের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট নয়, সে বিষয় নিয়ে কোনো সুস্থ বুদ্ধি সম্পন্ন মানুষ আমার দেশে জলঘোলা করার কোনো কারণ দেখি না। কেউ জলঘোলা করার চেষ্টা করলে তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
সম্প্রতি র্যাব-৭’র সাবেক অধিনায়ক (সিও) হাসিনুর রহমান নিখোঁজের অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, অনেক মানুষকেই তো খুঁজে পাওয়া যায় না। খুঁজে না পাওয়াটা শুধু বাংলাদেশে নয়, আমেরিকা, ব্রিটেন, ইউরোপেও মানুষ নিখোঁজ হয়। একজনকে খুঁজে না পাওয়া মানেই কোনো বাহিনীর ব্যর্থতা নয়। নিখোঁজ হওয়ার অনেক কারণ থাকতে পারে। তবে, বিষয়টি সম্পর্কে আমরা জ্ঞাত রয়েছি। আমাদের পক্ষ থেকে তার পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে। এ নিয়ে কাজ করছি। যদি কারও কাছে কোনো তথ্য থাকে, তাহলে আমাদের জানাবেন।
ঈদ নিরাপত্তার বিষয়ে বেনজীর আহমেদ বলেন, সামনেই আমাদের দু’টি বড় ইভেন্ট- ঈদুল আজহা ও ১৫ আগস্ট। ঈগের আগে, ঈদের দিন ও ঈদ পরবর্তী নিরাপত্তার বিষয়ে পৃথক পরিকল্পনা রয়েছে। সে অনুযায়ী পুরো পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করা হচ্ছে।
তিনি বলেন, হাটে ক্রেতা-বিক্রেতার নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে দেশজুড়ে র্যাব সদস্যরা কাজ করছেন। হাটে জাল টাকা ও অজ্ঞানপার্টির তৎপরতা রোধে তারা তৎপর রয়েছেন।
‘ঈদযাত্রা নির্বিঘ্ন করতে প্রতিটি বাস-লঞ্চ টার্মিনাল ও ট্রেন স্টেশনের নিরাপত্তা ব্যবস্থা মনিটরিং করছে র্যাব। তবে, উত্তর-পূর্বাঞ্চলে বন্যার জন্য এবার অনেক সড়ক ও রেলপথ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সে কারণে যান চলাচলে কোথাও কোথাও ধীরগতি রয়েছে। যতটুকু সম্ভব ঈদযাত্রা স্বাভাবিক রাখতে কাজ করছি আমরা।’
র্যাবের ডিজি বলেন, সারাদেশে মহাসড়কে ৪২টি দুর্ঘটনাপ্রবণ এলাকা শনাক্ত করা হয়েছে। সেসব স্থানে যেন ফের দুর্ঘটনা না ঘটে, সেজন্য আমাদের নজরদারি রয়েছে। তবে, এ বিষয়ে চালকদের ভূমিকার পাশাপাশি যাত্রীদেরও দায়িত্ব রয়েছে।
তিনি বলেন, জাতীয় ঈদগাহসহ গুরুত্বপূর্ণ সব ঈদগাহের নিরাপত্তায় সিসি ক্যামেরায় মনিটরিং থাকছে। এছাড়া, ডগ স্কোয়াডের মাধ্যমে সুইপিং করা হবে।
বেনজীর আহমেদ বলেন, ঢাকায় প্রায় ৫০ হাজার পশু কোরবানি হয়। যেখানে-সেখানে কোরবানি করে শহর নোংরা করবেন না। সময় এসেছে পুরো প্রক্রিয়া সংগঠিত করার। এজন্য সঠিক প্রক্রিয়া অনুসরণ করলে শহর পরিষ্কার থাকবে।
র্যাব কর্মকর্তা বলেন, ডেঙ্গুর বিষয়ে ব্যক্তি পর্যায়ে সচেতন থাকলে চ্যালেঞ্জ কঠিন হবে না। সবাই নিজের বাড়ি ও এলাকা পরিস্কার রাখলেই সমস্যার সমাধান সম্ভব। র্যাবের প্রত্যেক ব্যটালিয়নে একজনকে ডেঙ্গুর বিষয়ে অ্যাসাইন করা হয়েছে। তিনি প্রতিদিন সার্বিক বিষয়গুলো মনিটরিং করছেন। প্রতিটি প্রতিষ্ঠানে এমন একজনকে দায়িত্ব দিয়ে মনিটরিং করলে বিষয়টা সহজ হয়ে যাবে।