DMCA.com Protection Status
title="৭

রাজশাহীতে স্ত্রীর সম্ভ্রম বাঁচাতে গিয়ে শিক্ষক স্বামী লাঞ্চিত।

ক্যাপ্টেন(অবঃ)মারুফ রাজুঃ  গত ১০ই আগস্ট রাজশাহী শহরের জনবহুল এলাকা সাহেববাজার মনিচত্তরে বখাটেদের হাতে লাঞ্ছনার শিকার হয়েছিলেন স্ত্রী। প্রতিবাদ করতে গিয়ে সেই বখাটেরা লাঞ্ছিত করল স্বামীকেও। বেদম মারধর করা হলো তাকে। অসহায় অবস্থায় সকলে সাহায্য চাইলেন তিনি, কেউ এগিয়ে এল না।

বখাটেদের হাতে রাজশাহী শহরে লাঞ্ছনার শিকার হন রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ইলেক্ট্রিক্যাল এন্ড ইলেক্ট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং (ইইই) বিভাগের শিক্ষক রাশিদুল ইসলাম। ঘটনাটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে শেয়ার করেছিলেন ভুক্তভোগী শিক্ষক। তিনি বলেন ওই সময় আশপাশে মানুষের কাছে সাহায্য চাইলে তারা কোনো সাহায্য না করে নিশ্চুপ দাঁড়িয়ে দৃশ্য দেখছিলো  বলে জানান তিনি।

শিক্ষক রাশিদুল ইসলাম উল্ল্যেখ করেন, রাজশাহী শহরে এসব বখাটের কাছে আইন দিন দিন জিম্মি হয়ে পড়ছে।তাদের অত্যাচার মেনে নিন নয়তো দেশ ছেড়ে চলে যান। এদেশে আপানার চোখের সামনে আপনার মা, বোন অথবা বউ ধর্ষিত হলেও প্রতিবাদ করবেন না, আশেপাশে কাউকে পাবেন না। মার খেয়ে মরবেন। কারণ আপনি একটা জানোয়ার, আমিও একটা জানোয়ার, জানোয়ারে ভরা সমাজ আমাদের। সাহেববাজার মনিচত্তর এর মত জনবহুল এলাকাতেও আমার বউ হেনস্তার শিকার হয়। এক পাল ছেলের মধ্যে একজন আমার বউ কে পেছন থেকে কয়েকবার ইচ্ছাকৃত ধাক্কা দেয়। দুই-তিনবার সহ্য করলেও পরেরবার প্রতিবাদ করি।

 

প্রতিবাদ করায় শুরু হয়ে গেল, সোনার ছেলেদের দাপট শুরু। শেষে আমাকে সোনাদীঘি মসজিদের সামনে ৫-৭ মিলে ঘিরে ধরে মারা শুরু করে। এই পর্যন্ত না হয় মেনে নিলাম। কিন্তু ওখানে কম করে হলেও ৫০ জন আমার মার খাওয়া দেখছিল। একজনও এগিয়ে আসেনি। মার খাওয়ার এক পর্যায়ে আমি দর্শকদের উদ্দেশ্যে বলি, ‘বাঁচান আমাকে’, কোন রেসপন্স পাইনি। একজন মোটরসাইকেল থামিয়ে আমার মার খাওয়া দেখছিল, আমি সাহায্য চাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে মোটরসাইকেল চালিয়ে চলে গেল।

মার খেয়ে কাপুরুষ আমি দর্শকদের বলি, আপনারা আজ এগিয়ে এলেন না, একদিন আপনার বউয়ের সঙ্গে এমন হলেও কেউ এগিয়ে আসবে না। ও আমার বউ, গার্লফ্রেন্ড না, কাবীননামা দেখাতে হবে আপনাদের? এসময় একজন ভিড়ের মধ্য থেকে বলে বসল, হ্যাঁ, কাবীননামা নিয়েই চলাফেরা করতে হবে।

ধরেন, দ্বিতীয়বার আক্রমণে ওরা আমাকে মেরে ফেলল। কি করবেন? ফেইসবুকে কান্নাকাটি? জাত গেল জাত গেল রব তুলবেন? কোনোটাই করবেন না দয়া করে, এতে কিছু আসে যায় না। আর যারা করবে, তাদের গিয়ে থুথু দিয়ে আসবেন। ধরেই নিয়েছিলাম, পিএইচডি শেষ করে দেশে ফিরব, মা বাবা চান না বাইরে স্যাটেল হই। এই ঘটনার পর দ্বিতীয়বার ভাবব অবশ্যই। ’

প্রতিবাদ! কথাটাই আমাদের কাছে বিস্ময়ের। কোন ঘটনা দেখলে আমরা মনে করি এটা তো আমার সাথে হচ্ছে অন্য কারুরই সাথে হচ্ছে তা আমার অহেতুক ঝামেলায় জড়িয়ে লাভ কি? তেমনি ভাবে যখন আমার সাথে হয় তখন অন্যরাও একই কথা মনে করে।

Share this post

scroll to top
error: Content is protected !!