ক্যাপ্টেন(অবঃ)মারুফ রাজুঃ ব্যবসায়ীদের জাতীয় সংগঠন এফবিসিসিআইয়ের সাবেক প্রেসিডেন্ট ,অবৈধ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নিকটাত্মীয় এবং স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংকের চেয়ারম্যান কাজী আকরাম উদ্দিন আহমেদ বলেছেন, ‘বাংলাদেশের কিছু লোভী লোকের কবলে পড়েছে অর্থনৈতিক সেক্টর। তাদের যে কত টাকা দরকার-এটি নিজেরা নির্ধারণেও সক্ষম হননি। আরো চাই, আরো চাই। সবকিছু পেতে চাই। এমন কিছু লোকের কারণে কয়েকটি ব্যাংকের হাজার হাজার কোটি টাকা লোপাট হয়েছে। এজন্য গোটা ব্যাংকিং সেক্টরকে দায়ী করা সমীচিন হবে না।’
কাজী আকরাম উল্লেখ করেন, ‘সরকারের পক্ষ থেকে যথাসাধ্য চেষ্টা চালানো হচ্ছে। লুটপাটকারিদের বিরুদ্ধে বিচার হচ্ছে। সর্বাত্মক চেষ্টা চালানো হচ্ছে সেই অর্থ উদ্ধারের’।
বাংলাদেশের স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংকের সাবসিডিয়ারি প্রতিষ্ঠান হিসেবে ‘যুক্তরাষ্ট্রে স্ট্যান্ডার্ড এক্সপ্রেস’ এর ৮ বছর পূর্তি উপলক্ষে ৯ জুলাই সোমবার সন্ধ্যায় স্থানীয় গণমাধ্যমের প্রতিনিধিগণের সাথে এক মতবিনিময় অনুষ্ঠানে কাজী আকরাম উল্লেখ করেন, ‘বাংলাদেশে কর্মরত ভারতীয়রা বার্ষিক ৬ বিলিয়ন ডলারের মত নিয়ে যাচ্ছে। এ অর্থ বৈধপথে ভারতে যায়, নাকি হুন্ডি অথবা হাতে হাতে যায়, সেটি আমার জানার কথা নয়। এজন্য কর্তৃপক্ষ রয়েছে, তারা সেটি তদারকি করেন। তবে আমি অনেকবার প্রস্তাব পেশ করেছি যে, ভারতীয়দের নিয়োগের প্রয়োজন হবে না-এমন সব দক্ষ কর্মী বাংলাদেশে তৈরী করার প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়া উচিত। তাহলে এই ৬ বিলিয়ন ডলার বিদেশে যাবে না। বাংলাদেশের মানুষেরাই তা ব্যবহারে সক্ষম হবে।’
যুক্তরাষ্ট্রের নেভাদা অঙ্গরাজ্যে লাসভেগাসে ৩ জুলাই পর্যন্ত ৫ দিনব্যাপী ১০১তম আন্তর্জাতিক লায়ন্স ক্লাবের বার্ষিক সম্মেলনে অনুষ্ঠিত নির্বাচনে কাজী আকরাম ‘আন্তর্জাতিক পরিচালক’ পদে নির্বাচিত হয়েছেন। ১২০ দেশের ২০ হাজার লায়ন এতে অংশ নিয়ে ভোটাধিকার প্রয়োগ করেছেন। এই নির্বাচনে বিপুল ভোটে নিজের বিজয়ী হবার প্রসঙ্গ উল্লেখ করে কাজী আকরাম বলেন, ‘সম্মেলনের ফ্লোরে ভারতের বিরুদ্ধেও নানা অভিযোগ দেখেছি। পাকিস্তানকে জঙ্গিরাষ্ট্র হিসেবে বলাবলি হয়েছে। অপরদিকে বাংলাদেশকে সকলেই একবাক্যে ‘উন্নয়নের মডেল’ হিসেবে বিবেচনা করেছেন।’
কাজী আকরাম বলেন, ‘একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে স্বাধীনতা লাভের পর বাংলাদেশ শুন্য থেকে যাত্রা শুরু করেছে। জাতির পিতা শেখ মুজিবের নেতৃত্বে যুদ্ধ বিধ্বস্ত দেশটি সম্মুখে এগিয়ে চলার পথে উঠতে যাচ্ছিল, ঠিক সে সময়েই ষড়যন্ত্রকারীরা বঙ্গবন্ধুকে নৃশংসভাবে হত্যা করে সবকিছু ভন্ডুল করে। এর ২১ বছর পর তারই কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনা সেই দেশটির হাল ধরেছেন। এখন বাংলাদেশকে মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়েছে। সামাজিক নিরাপত্তা সূচকেও বাংলাদেশ ভালো অবস্থানে রয়েছে। সেই দেশটি যাতে আরো বেগবানভাবে এগিয়ে চলে সে জন্যে প্রবাসীদের সরব থাকতে হবে।’
কাজী আকরাম বলেন, যমুনা সেতু নির্মাণের পরিপ্রেক্ষিতে উত্তর বঙ্গ থেকে মঙ্গার বিলুপ্তি ঘটেছে। এখন পদ্মা ব্রীজের নির্মাণ কাজ শেষ হলে বাংলাদেশে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির হারে বার্ষিক যোগ হবে ১.৫% করে। অর্থাৎ উন্নয়নের মহাসড়কে উঠা বাংলাদেশের এগিয়ে চলা ত্বরান্বিত হবে এবং সে জন্যেই শেখ হাসিনা ও তার সরকার এই সেতু নির্মাণের প্রকল্পকে চ্যালেঞ্জ হিসেবে নিয়েছেন।
কাজী আকরাম বলেন, ‘স্ট্যান্ডার্ড এক্সপ্রেস প্রবাসে সেবা প্রদানের ব্রত নিয়ে কাজ করছে। নিউইয়র্ক এবং ক্যালিফোর্নিয়ায় ৮টি শাখা রয়েছে।
এ সময় যুক্তরাষ্ট্রস্থ স্ট্যান্ডার্ড এক্সপ্রেসের সিইও এম এ মালেক জানান, বর্তমানে ৩২ হাজার প্রবাসী প্রতি মাসে গড়ে ৬ মিলিয়ন ডলার করে বাংলাদেশে পাঠাচ্ছেন এই ৮টি শাখা থেকে। গত ৮ বছরে পাঠিয়েছি ৩ বিলিয়ন ডলার।’
অনুষ্ঠানে স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংকের এমডি ও সিইও মামুন অর-রশীদ, ব্যাংকের পরিচালক কাজী খুররম আহমেদও শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন।