ক্যাপ্টেন(অবঃ)মারুফ রাজুঃ অফিস সহকারী সানজিদা ইয়াসমিন সাধনার সঙ্গে আপত্তিকর ভিডিও ছড়িয়ে পড়ার পর সমালোচনার মুখে পড়া জামালপুরের সাবেক জেলা প্রশাসক (ডিসি) আহমেদ কবীর সেই নারীকে বিয়ের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বলে যে সংবাদ বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে তাকে ভুয়া বলে দাবি করেছে সাধনার পরিবার।
গতকাল মঙ্গলবার (২৭ আগস্ট) একাধিক সংবাদমাধ্যমে আহমেদ কবীর ও সাধনার বিয়ে সংক্রান্ত খবর ছড়িয়ে পড়ার পর তার পরিবার এটিকে ভিত্তিহীন দাবি করে।
কয়েকদিন ধরে চলমান সমালোচনার মধ্যে অনেকটা লোকচক্ষুর অন্তরালে চলে যান সাধনা। এর মধ্যে মঙ্গলবার বিকেলে নতুন গুঞ্জন ছড়িয়ে পড়ে। দেশের একাধিক গণমাধমের খবরে বলা হয়, চাকরি বাঁচাতে সাধনাকেই বিয়ে করতে যাচ্ছেন আহমেদ কবীর।
এরপর ওই গুঞ্জনের সত্যতা জানতে সাধনার মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হয়। তবে তাকে ফোনে পাওয়া না যাওয়ায় তার বাসায় যোগাযোগ করা হলে সাধনার মাকে পাওয়া যায়।
তিনি বলেন, এ ধরনের কোনও প্রস্তাব ডিসি কিংবা তার পরিবারের পক্ষ থেকে আমাদের দেয়া হয়নি। আর দেয়া হলেও আমরা তা মেনে নেব না। স্যারের সঙ্গে আমার মেয়ের বিয়ে কোনোভাবেই সম্ভব নয়। তার নিজের একটা পরিবার রয়েছে, অন্যদিকে আমার মেয়েরও সন্তান রয়েছে। তাই এই ধরনের কিছু সম্ভব নয়।
সাধনা এখন মানসিকভাবে খুব ভেঙে পড়েছেন বলে উল্লেখ করে নাসিমা বেগম বলেন, এই ঘটনার পর থেকে আমার মেয়ে মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছে। ও এখন কারও সঙ্গে কথা বলতে চাইছে না। আপনারা প্লিজ ওকে ডিস্টার্ব করবেন না। ওর একটা ছেলে আছে। ছেলেটাকে নিয়ে ওকে বাঁচতে দিন।
এর আগে গত ১৫ আগস্ট তাদের আপত্তিকর ভিডিওটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রকাশিত হওয়ার পর অল্প সময়ের মধ্যে ভাইরাল হয়ে যায়। সারাদেশ জুড়ে এখন এ নিয়ে চলছে নানা আলোচনা-সমলোচনা।
এরইমধ্যে ডিসি আহমেদ কবীরকে বিশেষ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওএসডি) হিসেবে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে বদলি করা হয়েছে। সেই সঙ্গে পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রীর একান্ত সচিব মো. এনামুল হককে জামালপুরের নতুন জেলা প্রশাসক হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয়েছে।
এদিকে ভিডিও ভাইরাল হওয়ার পর থেকে সাধনাকে কোথাও খুঁজে পাওয়া না গেলেও হঠাৎ করে গত সোমবার সকলের চোখ ফাঁকি দিয়ে জেলা প্রশাসকের অফিসে হাজির হন তিনি।এদিন সকালে বোরখা এবং হিজাব পরিবর্তন করে হঠাৎ করে অফিসে হাজির হন। এ সময় তার হাতে একটি ছুটির দরখাস্ত দেখা যায়। সবার চোখ ফাঁকি দিয়ে অফিসে হাজির হলেও সাংবাদিকদের চোখ ফাঁকি দিতে পারেননি সাধনা।
এ সময় সাধনা সাংবাদিকদের নিকট আকুতি-মিনতি করে জানান, ‘‘আমি সত্যি কথা বলছি, আমি কিছুই জানি না এগুলা কে করেছে। আপনারা তদন্ত করে বের করে এর বিচার করুন।’’বিচার চান কি না এমন প্রশ্নের জবাবে সাধনা বলেন, ‘‘আমি বিচার চাই, তবে স্যারের কোনো দোষ নাই এর মাঝে। স্যার নির্দোষ। কারণ স্যার আমার কোনো ক্ষতি করে নাই
সাংবাদিকদের নিকট আকুতি-মিনতি করে তিনি আরো বলেন, ‘‘আমি বাঁচতে চাই না, আমার সন্তানের জন্য আমাকে বাঁচান। আমাকে ধিক্কার না দিয়ে আমার সন্তানের জন্য আমাকে বাঁচার ব্যবস্থা করে দিন।