ক্যাপ্টেন(অবঃ)মারুফ রাজুঃ শেষ পর্যন্ত ভারতে আসামের বিতর্কিত চূড়ান্ত নাগরিক তালিকা (এনআরসি) প্রকাশ করা হয়েছে। বিতর্কিত এ তালিকা থেকে বাদ পড়েছেন ১৯ লাখ ৬ হাজার ৬৫৭ জন বাসিন্দা।
বাংলাদেশ সময় আজ সকাল সাড়ে দশটার কিছুক্ষণ পর এটি প্রকাশ করা হয়। চূড়ান্ত এই তালিকা থেকে বাদ পড়া এই বিপুলসংখ্যক মানুষের ভাগ্যে কী ঘটবে, তা নিয়ে শুরু হয়েছে আলোচনা।
চূড়ান্ত তালিকা থেকে বাদ পড়া ব্যক্তিদের বাংলাদেশে পাঠানোর চেষ্টা চালানো হবে বলে গুঞ্জন উঠেছে। যদিও মার্কিন সাময়িকী টাইম ম্যাগাজিন বিষয়টিকে দেখছে অন্যভাবে। এনআরসির চূড়ান্ত তালিকা থেকে বাদ পড়া লোকজনকে দেশের অভ্যন্তরের শিবিরেই ভারত বন্দী রাখতে পারে বলে শঙ্কা প্রকাশ করে একটি প্রতিবদন প্রকাশ করেছে পত্রিকাটি।
প্রতিবেদনে বলা হয়, বাংলাদেশ আসামের এ পরিস্থিতিকে ভারতের ‘নিজেদের বিষয়’ হিসেবে বর্ণনা করেছে। মিয়ানমার থেকে আসা প্রায় ১০ লাখ রোহিঙ্গা শরণার্থীকে সামলাতেই হিমশিম খাচ্ছে বাংলাদেশ।
অন্যদিকে আসামের নাগরিক তালিকা থেকে বাদ পড়াদের নেই বাংলাদেশি নাগরিকত্বও। এ অবস্থায় ভারত যদি তাদের নাগরিকত্ব কেড়ে নেয় তবে ওই মানুষগুলো হয়ে পড়বে রাষ্ট্রহীন, যা আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইন অনুযায়ী অবৈধ।
ফলে অনেকটা বাধ্য হয়ে তালিকা থেকে বাদ পড়াদের নিজ দেশের ভেতরেই বন্দী শিবিরে বা ডিটেনশন ক্যাম্পে রাখবে ভারত। ইতোমধ্যে আসামে এরকম ১০টি বন্দী শিবির নির্মাণ কাজ শুরু হয়েছে। এছাড়া অঞ্চলটিতে অতিরিক্ত পুলিশও মোতায়েন করা হয়েছে।
এক প্রতিবেদনে সংবাদ প্রতিদিন অবশ্য জানিয়েছে, এনআরসির চূড়ান্ত তালিকায় নাম না থাকলেই যে এখনই তাদের ডিটেনশন ক্যাম্পে পাঠানো হবে, তা নয়। রাজ্যজুড়ে এক হাজার ফরেনার্স ট্রাইব্যুনাল খোলা হয়েছে। যেখানে ‘বিদেশি’ হিসেবে চিহ্নিত ব্যক্তিরা গিয়ে নিজেদের নাগরিকত্ব প্রমাণে তথ্য দাখিল করতে পারবেন। এর সময়সীমাও বাড়িয়ে ৬০ দিনের বদলে ১২০ দিন করা হয়েছে।
কিন্তু ফরেনার্স ট্রাইব্যুনাল যে খুব স্বস্তি দিতে পারে, তেমনটা নয়। এভাবে নাগরিকত্ব প্রমাণে অনেক আইনি পদ্ধতি রয়েছে। যাতে প্রচুর অর্থব্যয়ও হওয়ার আশঙ্কাও রয়েছে। তবে আর্থিকভাবে পিছিয়ে পড়া ব্যক্তিদের আইনি সহায়তা দেয়ারও ঘোষণা দিয়েছে রাজ্য সরকার।