ক্যাপ্টেন(অবঃ)মারুফ রাজুঃ আজ ১৪ই সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠিতব্য বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের জাতীয় কাউন্সিলের ওপর আদালতের স্থগিতাদেশের ঘটনাকে ‘নজিরবিহীন’ উল্লেখ করে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর দাবী করেছেন, ছাত্রদলের বিষয়ে এখন পর্যন্ত যা কিছু হয়েছে, তার আইনসম্মতভাবেই হয়েছে। আর ছাত্রদলের সিদ্ধান্ত ছাত্রদলই নেবে, এখন যারা দায়িত্বে আছে তারাই বলবে।
শুক্রবার রাতে দলের দলের স্থায়ী কমিটির সদস্যদের সঙ্গে সিনিয়র আইনজীবীদের বৈঠকের পর বিএনপি মহাসচিব এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, ‘ছাত্রদলের বিষয়ে সিদ্ধান্ত চেয়ারম্যান অর্থাৎ ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানই নিয়েছেন। আমাদের গঠনতন্ত্র অনুযায়ী ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানই পারেন এই সিদ্ধান্ত নিতে, তিনি নিয়েছেন। এটা সম্পূর্ণ লিগ্যাল। এখন পর্যন্ত যা হয়েছে কোনোটাই বেআইনি হয়নি, সবকিছুই আইনসম্মত হয়েছে।’
ছাত্রদলের কাউন্সিলের বিষয় কী হবে- সাংবাদিকদের এ প্রশ্নের উত্তরে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘এটি ছাত্রদলের বিষয়। ছাত্রদলের বিষয়ে তারা আলোচনা করছে। তাদের (ছাত্রদল) সিদ্ধান্ত তারা নেবে। আমরা (বিএনপি) এর সঙ্গে কোনোমতেই জড়িত নয়।’
একই সঙ্গে বিএনপিকে পক্ষ করে আদালত যে কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়েছে তার জবাব দেয়া হবে বলে জানান ফখরুল।
তিনি বলেন, ‘আমাদের বিরুদ্ধে যেমন আমাদেরকে পক্ষ করা হয়েছে। আমরা আমাদের উত্তরগুলো আদালতের কাছে যথা সময়ে দেব। সেই ব্যবস্থা নেব। জবাবগুলো দিব। তবে ছাত্রদলের সিদ্ধান্ত ছাত্রদলই নেবে, এখন যারা দায়িত্বে আছে তারাই বলবে।’
আগামী ১৪ সেপ্টেম্বর জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদে ভোটগ্রহণের কথা ছিল। সব প্রস্তুতি শেষ পর্যায়ে কাউন্সিলর কার্ড বিতরণের সময়কালে ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় কমিটির বিদায়ী ধর্মবিষয়ক সম্পাদক আমান উল্লাহর একটি আবেদনে বৃহস্পতিবার ঢাকার জ্যেষ্ঠ সহকারি জজ নুসরাত জাহান কাউন্সিলের স্থগিতাদেশ দেন।
আদালত এই কাউন্সিলের অস্থায়ী স্থগিতাদেশ দেয়ার পাশাপাশি কেন্দ্রীয় সম্মেলন করার প্রশ্নে কারণ দশানোর নোটিশও দিয়েছেন। বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী ও নির্বাচন পরিচালনা কমিটির আহবায়ক খায়রুল কবির খোকনসহ ১০ বিবাদীকে ১০ দিনের নোটিশের জবাব দিতে বলা হয়েছে।
সাংবাদিকদের এক প্রশের জবাবে বিএনপি মহাসচিব পাল্টা প্রশ্ন রেখে বলেন, ‘গতকাল (বৃহস্পতিবার) রাতে সবার অগোচরেই আদালতের এই স্থগিতাদেশ এসেছে। যেটা দ্যা প্রেসেস ইনসেলফ মিস্টিরিয়াস। বুঝা যায় এখানে সরাসরি সরকারের হস্তক্ষেপ আছে, হস্তক্ষেপ আছে বলেই এই স্থগিতাদেশ দেয়া হয়েছে।’
মহাসচিব বলেন, ‘বাংলাদেশে বর্তমান সরকার যারা আছেন যারা নির্বাচিত সরকার নয়, তাদের জবাবদিহিতা নেই তারা কী চান? তারা বাংলাদেশে গণতন্ত্রের কী গণতন্ত্রের একটা ন্যূনতম যে পরিস্থিতি-পরিবেশ থাকুক, না সেটা তারা চান না। দুঃখজনকভাবে তারা ব্যবহার করছেন আদালতকে। যেটা কখনোই কোনো গণতান্ত্রিক কোনো রাষ্ট্রের জন্য, জাতির ভবিষ্যতের জন্য শুভ হতে পারে না।’
মির্জা ফখরুল অভিযোগ করে বলেন, ‘আজকে বর্তমান সরকার যে একটা রাজনৈতিক সংস্কৃতি তৈরি করছেন, এই সংস্কৃতি অত্যন্ত ভয়াবহ। আদালতকে দিয়ে রাজনীতিকে নিয়ন্ত্রণ করা। যেটা আমি মনে করি যে, অত্যন্ত ভয়াবহ একটা বিষয়।’
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘ছাত্রদল একটা গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে তারা পরবর্তি নেতৃত্ব নির্ধারণ করতে যাচ্ছে কাউন্সিলের মাধ্যমে। এটাকে আবসেট করা জন্যে …। আজকে কাউন্সিল স্থগিত করার মানে কী? এই যে আদালতকে প্রশ্নবিদ্ধ করা, আদালতকে দলীয়করণের দিকে নিয়ে যাওয়া- এটা দেশের জন্য ও জাতির জন্য শুভ কোনো কিছু বয়ে আনতে পারে না।’
এর আগে গুলশানে চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে জ্যেষ্ঠ নেতাদের বৈঠক হয়। বৈঠকে বিএনপির মহাসচিব ছাড়া স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, মওদুদ আহমদ, জমিরউদ্দিন সরকার, মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, নজরুল ইসলাম ও আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী উপস্থিত ছিলেন।
দলের আইনজীবীদের মধ্যে ছিলেন জয়নাল আবেদীন, এজে মোহাম্মদ আলী, নিতাই রায় চৌধুরী, মাহবুবউদ্দিন খোকন, মাসুদ আহমেদ তালুকদার, কায়সার কামাল, আসাদুজ্জামান আসাদ, ওমর ফারুক ফারুকী, জয়নাল আবেদীন মেজবাহ এবং সাবেক ছাত্র নেতাদের মধ্যে শামসুজ্জামান দুদু, ফজলুল হক মিলন, খায়রুল কবির খোকন, শহিদউদ্দিন চৌধুরী এ্যানি, কামরুজ্জামান রতন, আজিজুল বারী হেলাল, শফিউল বারী বাবু, সুলতান সালাহউদ্দিন টুকু, আমিরুল ইসলাম খান আলিম, আবদুল কাদের ভুঁইয়া জুয়েল, রাজিব আহসান ও আকরাম