ক্যাপ্টেন(অবঃ)মারুফ রাজুঃ রাজধানীর চকবাজারে বুয়েটের শেরে বাংলা হল থেকে আবরার ফাহাদ নামে এক শিক্ষার্থীর মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। পরিবার ও সহপাঠিদের দাবি,ফেসবুকে ভারত বিরোধী পোস্ট দেয়ায় আবরারকে পিটিয়ে হত্যা করেছে ছাত্রলীগ।
আবরার ইলেকট্রিক্যাল ও ইলেকট্রনিকস ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী। তার বাড়ি কুষ্টিয়ায়।
সহপাঠিরা বলছে, গত রাত আটটার দিকে শের-ই বাংলা হলের এক হাজার ১১ নম্বর কক্ষ থেকে কয়েকজন আবরারকে ডেকে নিয়ে যায়। এর পর রাত দুইটা পর্যন্ত তাকে খুঁজে পাওয়া যায়নি। তাদের ধারণা ২ হাজার ১১ নম্বর রুমে নিয়ে তাকে পিটানো হয়। পরে শের ই বাংলা হলের একতলা ও দুই তলার মাঝখানের সিঁড়ি থেকে আবরারের মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
ঐহলে বসবাসরত কয়েকজন ছাত্রের ভাষ্যে জানা যায়,বুয়েট ছাত্রলীগের সহ-সাধারন সম্পাদক আশিকুল ইসলাম বিটুর নেতৃত্বে এই মর্মান্তিক হত্যাকান্ডটি ঘটে।
বাংলাদেশ প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) নিহত শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদ রোববার সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার পর থেকে নিখোঁজ ছিলেন, আর মধ্যরাতে শেরে বাংলা হলে মেলে তার লাশ। আবরার সর্বশেষ বিকেল ৫টা ৩২ মিনিটে ফেসবুকে পোস্ট দিয়েছিলেন।
ধারণা করা হচ্ছে ছাত্রলীগের কর্মীরা তাকে শিবিরকর্মী সন্দেহে পিটিয়ে হত্যা করেছে। শেরে বাংলা হলের দ্বিতীয়তলা থেকে তার লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিকস ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী আবরার ওই হলের আবাসিক শিক্ষার্থী ছিল, তার গ্রামের বাড়ি কুষ্টিয়া।
আবরার তার সর্বশেষ ফেসবুক পোস্টে তিনটি পয়েন্টে ভারত সর্ম্পকে লিখেছিলেন,
৪৭ এ দেশভাগের পর দেশের পশ্চিমাংশেে কোন সমুদ্রবন্দর ছিল না। তৎকালীন সরকার ৬ মাসের জন্য কলকাতা বন্দর ব্যবহারের জন্য ভারতের কাছে অনুরোধ করল। কিন্তু দাদারা নিজেদের রাস্তা নিজেদের মাপার পরামর্শ দিছিলো। বাধ্য হয়ে দুর্ভিক্ষ দমনে উদ্বোধনের আগেই মংলা বন্দর খুলে দেওয়া হয়েছিল। ভাগ্যের নির্মম পরিহাসে আজ ইন্ডিয়াকে সে মংলা বন্দর ব্যবহারের জন্য হাত পাততে হচ্ছে।
কাবেরি নদীর পানি ছাড়াছাড়ি নিয়ে কানাড়ি আর তামিলদের কামড়াকামড়ি কয়েকবছর আগে শিরোনাম হয়েছিল। যে দেশের এক রাজ্যই অন্যকে পানি দিতে চাই না সেখানে আমরা বিনিময় ছাড়া দিনে দেড়লাখ কিউবিক মিটার পানি দিব।
কয়েকবছর আগে নিজেদের সম্পদ রক্ষার দোহাই দিয়ে উত্তরভারত কয়লা-পাথর রপ্তানি বন্ধ করেছে অথচ আমরা তাদের গ্যাস দিব। যেখানে গ্যাসের অভাবে নিজেদের কারখানা বন্ধ করা লাগে সেখানে নিজের সম্পদ দিয়ে বন্ধুর বাতি জ্বালাব।
হয়তো এসুখের খোঁজেই কবি লিখেছেন-
“পরের কারণে স্বার্থ দিয়া বলি
এ জীবন মন সকলি দাও,
তার মত সুখ কোথাও কি আছে
আপনার কথা ভুলিয়া যাও।”
আবরার শেরেবাংলা হলের ১০১১ নম্বর রুমে থাকতেন। তার মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ মর্গে পাঠানো হয়েছে।