ক্যাপ্টেন(অবঃ)মারুফ রাজুঃ সম্প্রতি ছাত্রলীগের হাতে নিহত বাংলাদেশ প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) শিক্ষার্থী শহীদ আবরার ফাহাদের ছোট ভাই আবরার ফাইয়াজ নিরাপত্তাজনিত কারনে ঢাকা কলেজ ছেড়েছে। মঙ্গলবার (১৫ অক্টোবর) দুপুরে ঢাকা কলেজ থেকে ছাড়পত্র নিয়েছে সে। পরে সে কুষ্টিয়া সরকারি কলেজে ভর্তি হবে। সন্ধ্যায় আবরারের বাবা বরকত উল্লাহ এসব তথ্য জানান।
বরকত উল্লাহ বলেন, ‘আবরার ফাইয়াজ ঢাকা কলেজের একাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থী ছিল। এখন সে ছাড়পত্র নিয়ে কুষ্টিয়া সরকারি কলেজে বিজ্ঞান বিভাগে ভর্তি হবে। এ বিষয়ে ঢাকা কলেজ এবং ঢাকা শিক্ষা বোর্ড সম্মতি দিয়েছে। ইতোমধ্যে আমরা কুষ্টিয়া সরকারি কলেজ কর্তৃপক্ষের সঙ্গেও যোগাযোগ করেছি। এখন শুধু যশোর বোর্ডের অনুমতি পেলে ফাইয়াজকে ভর্তি করা হবে। আগামী শনিবার কলেজে ভর্তির জন্য যাবো।’
কুষ্টিয়া সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ কাজী মনজুর কাদির জানান, কুষ্টিয়া সরকারি কলেজে বিজ্ঞান বিভাগে আসন শূন্য। তারপরও কুষ্টিয়া-৩ আসনের সংসদ সদস্য মাহবুব-উল আলম হানিফ ও জেলা প্রশাসক (ডিসি) মো. আসলাম হোসেনের সুপারিশে ফাইয়াজ আসা মাত্রই ভর্তি করানো হবে। এ নিয়ে যশোর বোর্ডের চেয়ারম্যানের সঙ্গেও কথা হয়েছে।
এর আগে ফাইয়াজ সাংবাদিকদের বলে, ‘ঢাকায় আর যাওয়া হবে না। মানে কলেজে আর ফেরা হবে না। ভাইয়া আমাকে ঢাকায় নিয়ে গিয়েছিলেন। তিনি আমার সম্পূর্ণ টেক কেয়ার করতেন। ভাইয়া নেই, সেখানে এখন কার ভরসায় আমি থাকবো?
এ বিষয়ে ঢাকা কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক নেহাল আহমেদ বলেন, নিরাপত্তার অভাবে ‘ফাইয়াজ ঢাকা কলেজে লেখাপড়া করবেন না এমন তথ্য সঠিক নয়। আবরার ফাইয়াজ তার শোকাহত মায়ের পাশে থাকতে কুষ্টিয়ায় যাওয়ার জন্য কলেজ থেকে ছাড়পত্র নিয়েছে। সে তার লিখিত আবেদনে বলেছে, ‘আমার ভাইয়ের অকাল মৃত্যুর শোকে অসুস্থ হয়ে যাওয়ায় আম্মুর পাশে থাকার জন্য আমার কলেজ থেকে ছাড়পত্র প্রয়োজন।’
ঢাকা কলেজের নিরাপত্তার বিষয়ে অধ্যাপক নেহাল আহমেদ বলেন, ‘ঢাকা কলেজের নিরাপত্তা নিয়ে কোনও প্রশ্ন নেই। আর সেই ধরনের কোনও পরিবেশও নেই এখানে। ফাইয়াজের ছাড়পত্র নেওয়া পারিবারিক ইমোশনের বিষয়। কলেজের নিরাপত্তার বিষয় নয়। তার সিট হোস্টেল সুপারের রুমের পাশে।’
উল্লেখ্য, গত ৬ অক্টোবর রাত ৩টার দিকে বুয়েটের শেরেবাংলা হল থেকে ইলেক্ট্রিক অ্যান্ড ইলেক্ট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র আবরার ফাহাদের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। বুয়েট ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা তাকে পিটিয়ে হত্যা করেছে অভিযোগে পরদিন চকবাজার থানায় তার বাবা বরকত উল্লাহ বাদী হয়ে হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলার ১৯ আসামিকেই গ্রেফতার করা হয়েছে। আর এরা সকলেই ছাত্রলীগ বুয়েট শাখার সক্রিয় সদস্য।