DMCA.com Protection Status
title="৭

বাংলাদেশে জঙ্গিবাদের ঝুঁকি কমেনি : মনিরুল ইসলাম।

ক্যাপ্টেন(অবঃ)মারুফ রাজুঃ বিশ্বের অন্যান্য দেশের তুলনায় জঙ্গিবাদ কিছুটা কমলেও আমাদের দেশে এখনও জঙ্গিবাদের প্রবল ঝুঁকি রয়েছে বলে জানিয়েছেন ডিএমপির কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম (সিটিটিসি) ইউনিটের প্রধান মনিরুল ইসলাম। 

শনিবার (১৯ অক্টোবর) ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ ঝুঁকির কথা বলেন। 

সোশ্যাল অ্যাডভোকেসি অ্যান্ড রিসার্চ ফাউন্ডেশনের (সিসার্ফ) উদ্যোগে ঢাকা পিস টক নামে কর্মসূচি শুরুর বিষয়ে জানাতে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। ইউএসএইড-এর অর্থায়নে এ কর্মসূচিতে সার্বিক সহযোগিতা করবে সিটিটিসি। 

মনিরুল ইসলাম বলেন, সম্প্রতি ধরা পড়া জঙ্গিদের মধ্যে কেউ কেউ আগে থেকেই জড়িত ছিলেন, আবার অনেকে নতুন করে জড়িয়ে পড়েছেন। ইন্টারনেটে জঙ্গিবাদের লোভনীয় ও আকর্ষণীয় বেশকিছু প্যাকেজ দিয়ে আকৃষ্ট করা হয়। এন্টিবডিকম অর্থাৎ যার ভেতরে দেশপ্রেম নেই, মানুষের প্রতি দায়িত্ব বোধ নেই, যার ভেতরে টলারেন্স নেই, মতাদর্শের জায়গায় যে খুবই দুর্বল-ভঙ্গুর এবং ডিসিশন নিতে পারছেন না, পাশাপাশি জীবনের যে বাস্তবতা সেটা মেনে নিতে পারছেন না- এই সব তরুণরাই জঙ্গিবাদে জড়িয়ে পড়ছে। 

ঢাকা পিস টক প্রসঙ্গে মনিরুল ইসলাম বলেন, সন্ত্রাসবাদ একটি বৈশ্বিক সমস্যা। বাংলাদেশ অসাম্প্রদায়িক দেশ হলেও বিভিন্ন সময়ে সন্ত্রাসবাদের ঝুঁকিতে পড়েছে। সহিংস উগ্রবাদ বিরোধী কার্যক্রম একটি দীর্ঘমেয়াদী প্রক্রিয়া। উগ্রবাদ দমনে শুধু পুলিশই নয়, পরিবার-সিভিল সোসাইটিসহ সবার সম্মিলিত প্রয়াস থাকতে হবে। সিটিটিসি উগ্রবাদের সঙ্গে সংশ্লিষ্টদের গ্রেফতার করছে, মামলার তদন্ত করছে। পাশাপাশি উগ্রবাদ প্রতিরোধী উদ্যোগ হিসেবে ঢাকা পিস টক কাজ করবে বলে জানান মনিরুল ইসলাম। 

২৫-৩০ বছর বয়সী যুবকরাই উগ্রবাদে জড়িত হচ্ছে মন্তব্য করে সিটিটিসি ইউনিটের প্রধান বলেন, উগ্রবাদ একটি মতবাদ, এটিকে রুখতে পাল্টা মতবাদ প্রতিষ্ঠিত করতে হবে- যা উগ্রবাদের বিরুদ্ধে অ্যান্টিবডি হিসেবে কাজ করবে। 

ঢাকা পিস টকের মতো কার্যক্রম ঢাকার বাইরে শুরু করা হবে কিনা, জানতে চাইলে মনিরুল ইসলাম বলেন, ঢাকায় সাকসেসফুল হলে দেশের অন্য কোথাও চালুর চিন্তা করা হবে। এ ধরনের কার্যক্রম আয়োজনের প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরে তিনি বলেন, হলি আর্টিজান পরবর্তী সময়ে সচেতনতা বৃদ্ধির জন্য নানা উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল। গত কয়েক বছরে সন্ত্রাসবাদ কমে যাওয়ায় এ কার্যক্রম কমে গেছে। কিন্তু জঙ্গিবাদের ঝুঁকি কমে যায়নি, এটা রিয়েল থ্রেট। এখনও বিচ্ছিন্নভাবে কিছু কর্মসূচি পালিত হচ্ছে। এ বিষয়ে আরও সুসংহতভাবে কাজ করবে ঢাকা পিস টক। 

সেন্টার ফর সোশ্যাল অ্যাডভোকেসি অ্যান্ড রিসার্চ ফাউন্ডেশনের (সিসার্ফ) প্রধান ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক শবনম আজিম বলেন, প্রথমে সমাজের ৩৬ জন বিশিষ্ট নাগরিকের একটি প্যানেল তৈরি করা হবে। এরপর ১২টি ইস্যুতে ডায়ালগে অংশ নেবেন অভিভাবক, শিক্ষক, বিভিন্ন কমিউনিটি সংগঠনের প্রতিনিধি, শিক্ষাবিদ, সরকারি প্রতিনিধি, জনপ্রতিনিধি, আন্তর্জাতিক এনজিও, থিংক ট্যাংক, নারী নেত্রী, সিভিল সোসাইটির সংগঠন, আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী, বিচার বিভাগ, ধর্মভিত্তিক বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান, গণমাধ্যম, আদিবাসী গ্রুপ, তরুণ সমাজ, লেখক, ব্লগারসহ সমাজের বিভিন্ন অংশের প্রতিনিধিরা। 

যেসব বিষয় নিয়ে সেমিনারে আলোচনা হচ্ছে-  মতাদর্শিক সহিংসতা প্রতিরোধে পরিবার ও উন্নত অভিভাবকত্ব, শিক্ষা ব্যবস্থা ও পাঠ্যসূচি পুনর্মূল্যায়নের মাধ্যমে সহিংস উগ্রবাদ প্রতিরোধ, তরুণ সম্প্রদায়ের মধ্যে র‌্যাডিক্যালাইজেশন প্রতিরোধে জাতীয় নীতি প্রণয়ন, উগ্রবাদ প্রতিরোধে নারীর ভূমিকা, উগ্রবাদে জড়িতদের সামাজিক পুনর্বাসন, শান্তির পথে আন্তঃধর্ম সমন্বয়, উগ্রবাদের খবর পরিবেশনে গণমাধ্যমের ভূমিকা, উগ্রবাদ সংক্রান্ত সাম্প্রতিক ঝুঁকি প্রবণতা এবং আগামীতে করণীয়।

Share this post

scroll to top
error: Content is protected !!