ক্যাপ্টেন(অবঃ)মারুফ রাজুঃ ১৩ বছর পুর্বে ১/১১ এর কখ্যাত মঈনুদ্দীন-ফখরুদ্দীন সরকারের আমলে দায়েক করা ভিত্তিহীন মামলায় শুল্কমুক্ত গাড়ি এনে তা বিক্রি করে আত্মসাতের ঘটনার মামলায় বিএনপির সংসদ সদস্য (এমপি) হারুনুর রশিদসহ তিনজনকে কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত।
ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৪ এর বিচারক শেখ নাজমুল আলম সোমবার দুপুরে এ রায় ঘোষণা করেন।
বিএনপি নেতা হারুনুর রশীদ বর্নাঢ্য রাজনৈতিক ক্যারিয়ারের অধিকারী।।তিনি এপর্যন্ত ৪বার জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। বর্তমান ভোট ডাকাতি সংসদে নির্বাচিত হলেও প্রথমে সংসদ সদস্য হিসাবে শপথ নিতে অস্বিকৃতি জানান। পরবর্তিতে দলীয় ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান দেশনায়ক তারেক রহমানের সিদ্ধান্তে তিনি সহ বিএনপির ৬ জন এমপি শপথ নেন।তিনি হাসিনার এই অবৈধ সংসদে সকল বাধা-বিপত্তির মাঝেও দলের ও গনতন্ত্রের পক্ষে জোরালো বক্তব্য রেখে আলোচনায় আসেন। তাঁর এই ভুমিকার কারনেই তাঁকে এই বহু পুরানো বিতর্কিত মামলায় ফরমায়েসী রায়ে ৫ বৎসরের কারাদন্ড দেয়া হলো বলে রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের ধারনা।
এই মামলায় বিএনপির এমপি হারুনুর রশিদকে পাঁচ বছর কারাদণ্ড এবং ৫০ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে। সাবেক এনটিভি এমডি ব্যবসায়ী এনায়েতুর রহমানকে দুই বছর এবং ১ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে। গাড়ি ব্যবসায়ী ইশতিয়াক সাদেককে তিন বছর কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে এবং জরিমানা করা হয়েছে ৪০ লাখ টাকা। হারুনুর রশিদ ছাড়া বাকিরা পলাতক রয়েছেন।
ঢাকার মহানগর দায়রা জজ আদালতের হাজতখানার দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা পুলিশ পরিদর্শক মইনুল ইসলাম জানান, রায় ঘোষণার পর দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি হারুনুর রশিদকে আদালতের হাজতখানায় রাখা হয়েছে।
মামলার কাগজপত্রের তথ্য বলছে, ২০০১-২০০৬ মেয়াদে এমপি থাকা অবস্থায় শুল্ক মুক্ত গাড়ি এনে তা বিক্রির অভিযোগে বিএনপির হারুনসহ তিনজনের বিরুদ্ধে তেজগাঁও থানায় মামলা হয় ১/১১এর বিতর্কিত মঈনুদ্দীন-ফখরুদ্দীন সরকারের আমলে ২০০৭ সালের ১৭ মার্চ। মামলার বাদী ছিলেন পুলিশের উপপরিদর্শক ইউনুস আলী। উল্লেখ্য এই কুখ্যাত তত্বাবধায়ক সরকারের সময়ে বিরোধী দল গুলোর নেতা কর্মীদের বিরুদ্ধে হাজার হাজার মামলা দায়ের করা হয়। পরবর্তিতে ২০০৮ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এসে শেখ হাসিনা সহ তাদের লোকজনের প্রায় সকল মামলা খারিজ করে দিলেও বিএনপি-জামাতের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধের মামলাগুলো বজায় রাখা হয়। সাবেক প্রধান মন্ত্রী এবং বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া ঐসময়ে করা একটি মিথ্যা মামলায় হাসিনার ফরমায়েসী রায়ে আজ ২১মাস যাবৎ কারাগারে রয়েছেন।
হারুনুর রশীদের বিরুদ্ধে এই মামলাটি তদন্ত করে এমপি হারুনসহ তিনজনের বিরুদ্ধে ওই বছরের ১৮ জুলাই আদালতে অভিযোগপত্র দেন দুদকের সহকারী পরিচালক মোনায়েম হোসেন। আদালত অভিযোগপত্র আমলে নিয়ে হারুনসহ তিনজনের বিরুদ্ধে ২০০৭ সালের ২০ আগস্ট বিচার শুরু করেন আদালত। পর্ববর্তিতে প্রমানের অভিযোগে মামলাটি আর চলেনি বলে জানা যায়। এর পর হঠাৎ করে প্রায় বৎসর পর মামলাটিকে সামনে নিয়ে রায় ঘোষনা করা হলো।