ক্যাপ্টেন(অবঃ)মারুফ রাজুঃ বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে যথাযথ চিকিৎসা না দিয়ে জেলখানায় রেখে সরকার তিলে তিলে মারার ব্যবস্থা করছে বলে অভিযোগ করেছেন দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী।
তিনি বলেছেন, বাংলাদেশে আজ খুনের আসামি জামিন পাচ্ছে, ধর্ষক – শিশুধর্ষক জামিন পাচ্ছে, কিন্তু দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া জামিন পাচ্ছেন না। দেশের মানুষের কাছে এটা এখন দিনের আলোর মতো পরিষ্কার হয়ে গেছে যে, সবাই জামিন পেলেও নির্দোষ বেগম জিয়া জামিন পাবেন না।”
বৃহস্পতিবার দুপুরে জাতীয়তাবাদী প্রজন্ম ৭১ কেন্দ্রীয় কমিটির উদ্যোগে ‘প্রতিহিংসার রাজনীতি ও দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া’ শীর্ষক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে খসরু এই সব কথা বলেন।
আমির খসরু বলেন, “দেশে আজ কোনো বিচার ব্যবস্থা নেই। সরকারের মন্ত্রীরা বলে দেয় মামলার রায় কবে হবে,কি হবে । দশ দিনে বিচার হবে নাকি ১৫ দিনে। এটা কি তারা বলতে পারেন? এর শাস্তি হয়ে যাবে ওর শাস্তি হয়ে যাবে এটাও সরকারের মন্ত্রীরা বলে দেন। দেশের বিচার ব্যবস্থার একটি ধারা আছে ‘ডিউ প্রসেস অফ ল’- এই প্রসেসে কার কী হবে সেটা বিচার বিভাগ সিদ্ধান্ত নেবে। কিন্তু আজ বিচার বিভাগকে সম্পূর্ণরূপে নিয়ন্ত্রণ করছে সরকার।”
বিএনপির এই নীতিনির্ধারক বলেন, “যে দেশে প্রধান বিচারপতিকে বিচারালয় থেকে জোর করে অপসারণ করা হয় এবং মাথায় পিস্তল ঠেকিয়ে দেশত্যাগে বাধ্য করা হয়, যে দেশে তারেক রহমানের পক্ষে রায় দেওয়ার কারণে বিচারপতিকে চাকরিচ্যুত হতে হয়, যে দেশে মন্ত্রীরা কার কী বিচার হবে আগেভাগে বলে দেন- সেখানে সাধারণ মানুষ কীভাবে ন্যায়বিচার আশা করবেন।”
দলের নেতা–কর্মীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, “বেগম খালেদা জিয়া বিচার পাবেন না। আপনাদেরকে প্রস্তুত থাকতে হবে, দেশবাসীকে প্রস্তুত থাকতে হবে। দেশের মালিকানা নিজেদের হাতে তুলে নিতে হবে। আপনারা যখন দেশের মালিকানা আপনাদের হাতে তুলে নিতে পারবেন তখনই ন্যায়বিচার নিশ্চিত হবে।”
বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই সদস্য আরও বলেন, “কোরবানির পর থেকে পেঁয়াজের দাম বাড়তে শুরু করেছে। ৬০ টাকা কেজির পেঁয়াজ দেখতে দেখতে ৭০ টাকা, ৮০ টাকা, ১০০ টাকা হয়ে এখন ১৪০ টাকা। কোথাও কোথাও তার চেয়েও বেশি দাম হাঁকানো হচ্ছে। আপেলের চেয়ে পেঁয়াজের দাম বেশি হয়ে গেছে- এটা তো মশকরা করারই কথা, মশকরা তো হবেই। মশকরা করে অনেকেই বলছে যে, এত দাম দিয়ে খাওয়ার কি দরকার? তাহলে কাল ডিমের দাম বেড়ে গেলে ডিম খাবেন না, তেলের দাম বেড়ে গেলে তেল খাবেন না, চালের দাম বেড়ে গেলে চাল খাবেন না। এর চেয়ে সহজ পন্থা পৃথিবীতে আর কিছু আছে?”
আমির খসরু আরও বলেন, “দেশ কোথায় গিয়ে দাঁড়িয়েছে। জনগণকে কোনো তোয়াক্কা না করেই এসব কাজ করা হচ্ছে। সরকারের মনোভাব হচ্ছে এ রকম- ‘আমি কিংবা আমরা (সরকার) জনগণের তোয়াক্কা করি না, তোমাদের ভোটের দরকার নেই, এক রাত ভোট ডাকাতি করলেই পাঁচ বছর ক্ষমতায় থাকা যায়’। যাদের জনগণের কাছে কোনো জবাবদিহি নেই যারা জনগণের মালিকানা নিয়ে তামাশা করছে তাদের কাছে কে পেঁয়াজ খেতে পারলো আর কে পারল না- এটা নিয়ে কোনো মাথাব্যথা নেই।”
জাতীয়তাবাদী প্রজন্ম ৭১-এর প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ঢালী আমিনুল ইসলাম রিপনের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য দেন বিএনপির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট আবদুস সালাম আজাদ, নির্বাহী কমিটির সদস্য আবু নাসের মোহাম্মদ রহমাতুল্লাহ, নিপুণ রায় চৌধুরী, সাবিরা নাজমুল মুন্নি, তাঁতি দলের যুগ্ম-আহ্বায়ক ড. কাজী মনিরুজ্জামান মনির, কৃষক দল নেতা এম জাহাঙ্গীর আলম, সংগঠনের সহ-সাধারণ সম্পাদক শামিম ভূইয়া প্রমুখ।