DMCA.com Protection Status
title="৭

বাংলাদেশের মানুষ সাগর সাঁতরে ইতালি যাবে, তবু ভারত যাবে নাঃ মুয়াজ্জেম আলী।

ক্যাপ্টেন(অবঃ)মারুফ রাজুঃ  ভারতে কথিত অবৈধ বাংলাদেশী ‘অনুপ্রবেশ’ নিয়ে অবশেষে মুখ খুললেন দেশটিতে নিযুক্ত বাংলাদেশের বিদায়ী হাই কমিশনার সৈয়দ মুয়াজ্জেম আলি।

তিনি বলেন, ‘অনুপ্রবেশের রাজনীতি’র কারণেই ভারতে অবৈধ অভিবাসনের বিষয়টি এতটা আলোচনায় এসেছে। তার মতে, রাজনীতিকরা নিজেদের স্বার্থে একে ব্যবহার করছেন।

এ বিষয়ে যুক্তি দিতে গিয়ে তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের মানুষ ভারতে যাওয়ার বদলে প্রয়োজনে ভূমধ্যসাগর সাতরে পাড়ি দিয়ে ইতালিতে যাবে। আমি তিনজন বাংলাদেশীকে ভারতে দেখেছি। কিন্তু এদের কেউই ৬ মাসের বেশি থাকেনি।’ দিল্লিতে প্রেস ক্লাব অব ইন্ডিয়ায় সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে তাদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন। এ খবর দিয়েছে কলকাতার দ্য টেলিগ্রাফ।

নিজের বক্তব্যের স্বপক্ষে যুক্তি দেখিয়ে হাইকমিশনার আরও বলেন, বাংলাদেশীদের জন্য ভারতে ‘পুল ফ্যাক্টর’ (আকৃষ্ট করার মতো উপাদান) কাজ করে না অত বেশি। কেননা, দুই দেশের মাথাপিছু আয়ে তেমন কোনো পার্থক্য নেই। আর উত্তর-পূর্ব ভারতে মাথাপিছু আয় বাংলাদেশের চেয়ে কম।

 

টেলিগ্রাফ এক্ষেত্রে এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাংকের উপাত্তও উদ্ধৃত করেছে। পত্রিকাটি লিখেছে, ২০১৯ সালে বাংলাদেশের জিডিপি প্রবৃদ্ধির পূর্বাভাষ পরিবর্তন করে ৮ থেকে ৮.১ করেছে এডিবি। অপরদিকে ভারতের ক্ষেত্রে তা ৭.২ শতাংশ থেকে ৬.৫ শতাংশে কমিয়েছে।

নিজের দায়িত্ব পালনকালে এই সংবেদনশীল ইস্যুতে অতটা সরব না থাকলেও, বিদায় বেলায় এই ইস্যুতে খোলামেলা আলাপ করেছেন তিনি। তবে ভারতের নাগরিকপঞ্জি বা এনআরসি নিয়ে সতর্ক ছিলেন তিনি। তার মতে, ‘এনআরসি ভারতের অভ্যন্তরীণ বিষয়। ভারতীয় নেতৃবৃন্দ বারবার আমাদের এই বার্তাই দিয়েছেন। এখানে কী হচ্ছে, সেই ব্যাপারে আমরা সচেতন। আমরা আশা করি, আপনারা এটি সমাধান করতে পারবেন।’

তিনি আরও বলেন, কাশ্মীর ও অয্যোধ্যা রায়ের মতো ইস্যুতে বাংলাদেশীদের প্রতিক্রিয়া ছিল অত্যন্ত নিয়ন্ত্রিত। বাংলাদেশে ধর্মনিরপেক্ষ শক্তি তাই মাথা অটুট রেখেছে এখন পর্যন্ত। কিন্তু আপনাদের সহায়তা আমাদের দরকার। শেখ হাসিনার ওপর বারবার হত্যাচেষ্টা হয়েছে। শান্তি কোনো মূল্য ছাড়া আসে না। রোহিঙ্গা ইস্যুতে ভারতের অবস্থানে ইতিবাচক পরিবর্তনের বিষয়টিও তিনি স্বীকার করেন।

দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের আরেক তিক্ত ইস্যু তিস্তা নিয়ে তিনি বলেন, অভিন্ন সম্পদের ভাগাভাগির ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধকতাই দুই দেশের জন্য সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ। তিস্তা ইস্যু সমাধান হলে ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্কে নাটকীয় পরিবর্তন আসবে বলেও তিনি মন্তব্য করেন। আগামী মাসেই ৫ বছর মেয়াদী দায়িত্বের অবসান হতে চলছে মোয়াজ্জেম আলীর।

Share this post

scroll to top
error: Content is protected !!