ক্যাপ্টেন(অবঃ)মারুফ রাজুঃ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং অবৈধ হাসিনা সরকারের সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বিএনপিকে সতর্ক করে বলেছেন, আপনারা যদি মনে করেন সহিংসতা সৃষ্টি করে, বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে ঘোলা পানিতে মাছ শিকার করবেন, তাহলে বোকার স্বর্গে আছেন। আন্দোলনের নামে নৈরাজ্য হলে আমরা তার সমুচিত জবাব দেব।
শুক্রবার রাজধানীর কৃষিবিদ ইন্সটিটিউট বাংলাদেশ (কেআইবি) মিলনায়তনে মৎস্যজীবী লীগের জাতীয় সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
ওবায়দুল কাদের বলেন, আজ তারা (বিএনপি) খালেদা জিয়ার মুক্তির কথা বলছেন। আমরা বারবার বলেছি, উনি আদালতের রায়ে দণ্ডিত, সে কারণে জেলে। আপনারা আইনি লড়াই করে তাকে মুক্ত করুন। এতে সরকারের কোনো হস্তক্ষেপ থাকবে না। কিন্তু বিএনপি আদালত মানে না, আইনের শাসন মানে না, বিচার মানে না। তারা খালেদা জিয়ার মুক্তির জন্য আদালতের ওপর চাপ দিতে সেখানে ভাংচুর করেছে। তারা পুলিশের ওপর হামলা করেছে। আদালত প্রাঙ্গণকে রণাঙ্গনে পরিণত করেছিল।
আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের সতর্ক করে দলটির সাধারণ সম্পাদক বলেন, সবাই প্রস্তুত হয়ে যান, এখনও ষড়যন্ত্র চলছে, এখনও চক্রান্ত চলছে। শেখ হাসিনার জনপ্রিয় সরকারকে হটানোর চক্রান্ত চলছে। এ চক্রান্ত রুখতেই হবে।
তিনি বলেন, দেশে এত উন্নয়ন, এত অর্জন, বিএনপি এবং তার দোসররা তা দেখে না। তারা চোখে কালো চশমা পরেছে। কালো চশমা দিয়ে তারা উন্নয়ন দেখতে পায় না।
তিনি আরও বলেন, জনগণ তাদের (বিএনপি) চায় না, আন্দোলন করতে ব্যর্থ, নির্বাচনে ব্যর্থ। এখন তাদের অবলম্বন হচ্ছে প্রেস ব্রিফিং, তাদের অবলম্বন নালিশ। দেশে ঠাঁই না পেয়ে বিদেশিদের কাছে নালিশ আর দ্বারে দ্বারে ধরনা দিচ্ছে।
মৎস্যজীবী লীগের নেতাকর্মীদের অভিনন্দন জানিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, আপনাদের সম্মেলন সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে করার মতোই। সারা দেশ থেকে প্রতিনিধিরা এসেছেন এবং বিপুল উৎসাহ-উদ্দীপনা লক্ষ করা যাচ্ছে। এটা আমি আমাদের নেত্রী, আমাদের অভিভাবক দেশরত্ন শেখ হাসিনাকে জানিয়েছি। আপনাদের স্বতঃস্ফূর্ত উপস্থিতি মৎস্যজীবী লীগকে আগামী দিনে আরও শক্তিশালী করবে, আরও গতিশীল করবে, আরও প্রাণবন্ত করবে।
মৎস্যজীবী লীগের নেতৃত্ব প্রকৃত মৎস্যজীবীদের হাতে থাকার ওপর জোর দিয়ে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, কোনো চাঁদাবাজের দোকান আমরা চাই না। মৎস্যজীবীদের সঙ্গে সম্পর্ক নেই, ঢাকায় বসে বসে একটা কার্ড বানিয়ে জায়গায় জায়গায় দিয়ে চাঁদাবাজি করবে, এমন নেতা আমাদের দরকার নেই। দেখলাম যে মৎস্য উৎপাদনে আমরা তৃতীয় স্থানে। কাজেই এখানে একটা সুন্দর ভালো ক্লিন ইমেজের নেতৃত্ব দরকার।
সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটির আহ্বায়ক নারায়ণ চন্দ্র চন্দের সভাপতিত্বে সম্মেলনে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতাদের মধ্যে আরও বক্তব্য দেন প্রেসিডিয়াম সদস্য মতিয়া চৌধুরী, দফতর সম্পাদক ড. আবদুস সোবহান গোলাপ প্রমুখ।
সাইফুর সভাপতি, আজগর সম্পাদক : প্রথম অধিবেশনের পর ওবায়দুল কাদের মৎস্যজীবী লীগের আগের কমিটি বিলুপ্ত করে কাউন্সিল অধিবেশন শুরুর ঘোষণা দেন। কাউন্সিল অধিবেশনে সভাপতি পদে ৫ জন এবং সাধারণ সম্পাদক পদে ৩৮ জনের নামের প্রস্তাব আসে। আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক প্রার্থীদের নিজেদের মধ্য থেকে নেতৃত্ব নির্বাচনের আহ্বান জানান। কিন্তু তারা নিজেদের মধ্যে সমন্বয়ে ব্যর্থ হলে আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পরামর্শে মৎস্যজীবী লীগের নতুন নেতৃত্বের নাম ঘোষণা করেন ওবায়দুল কাদের।
এর মধ্যে সাইফুর রহমান সভাপতি, শেখ আজগর নস্কর সাধারণ সম্পাদক এবং সাইদুল আলম মানিক কার্যকরী সভাপতি নির্বাচিত হয়েছেন। নতুন কমিটিতে সহসভাপতি হয়েছেন আবুল বাশার, আবদুল গফুর, মোহাম্মদ আলম, বাবুল মিয়া, মীর আসাদুজ্জামান, শাহে আলম মিয়া, নাসরিন সুলতানা। যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হয়েছেন ইঞ্জিনিয়ার আবদুল আলিম, টিপু সুলতান, রফিকুল ইসলাম রফিক।
২০০৪ সালের ২২ মে আওয়ামী মৎস্যজীবী লীগ প্রতিষ্ঠিত হয়। এতদিন আওয়ামী লীগের সমর্থক সংগঠন হিসেবে কাজ করে আসছিল তারা। যে কারণে চারটি সম্মেলন হলেও তা বলতে গেলে আলোচনায় ছিল না। এবারই বড় আকারে সম্মেলন করল সংগঠনটি। এই সম্মেলনের মধ্য দিয়ে মৎস্যজীবী লীগ আওয়ামী লীগের ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনের মর্যাদা পেতে যাচ্ছে বলে জানিয়েছেন সংগঠনটির নেতারা।