ক্যাপ্টেন(অবঃ)মারুফ রাজুঃ অবিশ্বাস্য হলেও সত্য যে, ‘ভারতীয় ঐতিহ্য এবং সংস্কৃতির চর্চা ও অশ্লীল পাঠ্যপুস্তক পড়ানোর’ গুরুতর অভিযোগ উঠেছে রাজধানীর উত্তরার দিল্লী পাবলিক স্কুল -এসটিএস নামক ইংলিশ মিডিয়াম স্কুলের বিরুদ্ধে।জানা যায় দিল্লী পাবলিক স্কুল টি এসটিএস গ্রুপের একটি প্রতিষ্ঠান।
আর সেসব অভিযোগের ভিত্তিতে স্কুলটির ভারতীয় অধ্যক্ষ হার্ষ ওয়ালকে তলব করেছেন হাইকোর্ট।
অভিযোগ রয়েছে, ডিপিএস-এসটিএস ইংলিশ মিডিয়াম নামক স্কুলটিতে ভারতের জাতীয় সংগীত জন গণ মন, জাতীয় ফল আম, জাতীয় পশু বাঘ, জাতীয় ফুল পদ্ম, জাতীয় পাখি ময়ূর, জাতির পিতা মহাত্মা গান্ধী ইত্যাদি শেখানো হচ্ছে শিক্ষার্থীদের।
শুধুই তাই নয়; স্কুলটির অষ্টম শ্রেণিতে ‘The Perks of Being a Wallflower’ বইয়ে অপ্রকাশযোগ্য অশ্লীলতার বিষয়ে শিক্ষার্থীদের জ্ঞান দেয়া হচ্ছে।
এ ছাড়া ওই স্কুলের শিক্ষকরা বাংলাদেশের শিক্ষার্থীদের ভারতের বিভিন্ন উৎসব, জাতীয় দিবস, বিভিন্ন প্রদেশের নাম ও রাজধানীর নাম, বিভিন্ন দর্শনীয় স্থানের নাম শেখাচ্ছেন।
এমন সব গুরুতর অভিযোগ এনে ব্যারিস্টার অনিক আর হক, ব্যারিস্টার ওমর ফারুক, শফিউল আযমসহ ১৫ অভিভাবকের পক্ষে গত ১৩ নভেম্বর স্কুলের অধ্যক্ষকে আদালত অবমাননার নোটিশ দেন। কিন্তু সে নোটিশের কোনো তোয়াক্কাই করেননি অধ্যক্ষ হর্ষওয়াল।
নোটিশের জবাব না পেয়ে আদালত অবমাননার মামলা করেন ব্যারিস্টার অনিক আর হক।
সেই মামলার শুনানিতে ওই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের অধ্যক্ষ হর্ষওয়ালকে তলব করেছেন হাইকোর্ট। আগামী ১৩ জানুয়ারি তাকে সশরীরে হাজির হয়ে এসব বিষয়ে ব্যাখ্যা দিতে নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
একই সঙ্গে ওই স্কুলে দেশীয় সংস্কৃতির চর্চা না করায় তার বিরুদ্ধে কেন আদালত অবমাননার দায়ে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন আদালত।
বৃহস্পতিবার শেখ হাসান আরিফ ও বিচারপতি মো. মাহমুদ হাসান তালুকদারের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এসব আদেশ দেন।
আদালতে আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার অনিক আর হক। অন্যদিকে ডিপিএস-এসটিএস স্কুলের পক্ষে ছিলেন ব্যারিস্টার ওমর সাদাত।
শুনানি শেষ মামলার বাদী অনিক আর হক সাংবাদিকদের বলেন, হাইকোর্টের রায় অমান্য করে উত্তরার ডিপিএস-এসটিএস ইংলিশ মিডিয়াম স্কুলে ভারতীয় সংস্কৃতি চর্চা ও ভারতীয় বিভিন্ন দিবস, ব্যক্তি সম্পর্কে শিক্ষার্থীদের পড়াচ্ছেন। এ ছাড়া স্কুলটির অষ্টম শ্রেণিতে ‘The Perks of Being a Wallflower’ বইয়ে অপ্রকাশযোগ্য অশ্লীলতার বিষয়ে শিক্ষার্থীদের পড়িয়ে যাচ্ছেন।
সে বিষয়ে ব্যাখ্যা দিতে আগামী ১৩ জানুয়ারি অভিযুক্ত অধ্যক্ষকে তলব করেছেন আদালত।
প্রসঙ্গত ২০১৭ সালের ২৫ মে ইংলিশ মিডিয়াম স্কুলগুলো বাংলা ভাষা ও দেশীয় সংস্কৃতি চর্চার ওপর জোর দিতে রায় দেন হাইকোর্ট। এ ছাড়া ইংলিশ মিডিয়াম স্কুলগুলোতে স্বাধীনতা দিবস ও বিজয় দিবসসহ সব জাতীয় দিবস যথাযথ মর্যাদার সঙ্গে পালনের নির্দেশ দেয়া হয়। পাশাপাশি রবীন্দ্র-নজরুল, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানসহ স্বাধীনতায় আত্মদানকারীদের জীবনী নিয়ে অনুষ্ঠান করতেও রায়ে নির্দেশ দেয়া হয়।