ক্যাপ্টেন(অবঃ)মারুফ রাজুঃ বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে টার্গেট করে ১৫ আগস্টের মতো আরেকটা নারকীয় ঘটনা ঘটানোর ষড়যন্ত্র হচ্ছে বলে আশংকা করেছেন নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের বিনা ভোটের আওয়ামী সংসদ সদস্য শামীম ওসমান।
তিনি বলেছেন, শকুনরা সুযোগ খুঁজছে আরেকটি ১৫ আগস্ট করার জন্য। যদি হয় সেটা হবে শেখ হাসিনাকে টার্গেট করে।
সবাইকে সচেতন হওয়ার আহ্বান জানিয়ে শামীম ওসমান বলেন, শেখ হাসিনার কিছু হলে বাংলাদেশ আর ঘুরে দাঁড়াতে পারবে কিনা আমার যথেষ্ট সন্দেহ আছে।
শনিবার দুপুরে বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবর্ষ উপলক্ষে নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলা কার্যালয়ে ‘বঙ্গবন্ধু উন্নয়ন দর্শন’ শীর্ষক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ সব কথা বলেন।
সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নাহিদা বারিকের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য রাখেন জেলা প্রশাসক জসিম উদ্দিন, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুল হাই, সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট আবু হাসনাত শহীদ বাদলসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ।
শিশু থেকে শেখ মুজিবের বঙ্গবন্ধু হয়ে ওঠার ইতিহাস নতুন প্রজন্মকে শেখাতে শিক্ষকদের প্রতি তাগিদ দিয়ে শামীম ওসমান বলেন, আমরা কেবল রাজাকার আর আল-বদর বলে চিৎকার করছি। রাজাকার ও আল-বদরেরও একটা নীতি ছিল কারণ ওরা পাকিস্তানে বিশ্বাস করত। কিন্তু আমার প্রশ্ন হল রাজাকার বেশি ভয়ঙ্কর নাকি খন্দকার মোশতাকরা?
পাকিস্তানি বাহিনী বঙ্গবন্ধুকে স্পর্শ করতে না পারলেও বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যার করতে পেছন থেকে দরজাটা খুলে দিয়েছিল এই মোশতাকই। বঙ্গবন্ধু কন্যা বেঁচে না থাকলে হয়তো আজ বঙ্গবন্ধু রাষ্ট্রদ্রোহী হতেন আর মুক্তিযোদ্ধাদের রাজাকার হিসেবে সাজা পেতে হতো।
শামীম ওসমান আরও বলেন, যারা প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধা তেমন অনেকের ঘরে ভাত নেই। কিন্তু মুক্তিযুদ্ধ করেন নাই, মুক্তিযুদ্ধের নাম করে ‘৭১-এর পরে লুটতরাজ করে সম্পদের পাহাড় বানিয়েছেন যারা, বঙ্গবন্ধুর হত্যার পেছনে তাদেরও হাত রয়েছে।
খবর নিন, ‘৭১-এর আগে কার সম্পদ কেমন ছিল পরে সম্পদ কেমন হল। সত্য কথা বলতে শিখুন। রাজনীতি করতে এসেছি। যদি সত্য কথা বলতে না পারি তাহলে এই রাজনীতি করে লাভ কি? গণতন্ত্রের মানে সংখ্যা গরিষ্ঠতা নয়। ন্যায্য কথাই হচ্ছে গণতন্ত্র।
বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন, যদি একজন মানুষও হয় সে যদি ন্যায্য কথা বলে আমরা তা মেনে নিব। বঙ্গবন্ধু ছিলেন একজন, তিনি কোনো পন্থী ছিলেন না। তিনি জনগণের পন্থী হয়ে কথা বলেছিলেন। ১৯৯৬ সাল থেকে কিন্তু শেখ হাসিনা আওয়ামী লীগ থেকে বের হয়ে এসেছেন।
১৯৬৬ তে যেমন বঙ্গবন্ধু আওয়ামী লীগ থেকে বের হয়ে এসে হয়েছিলেন জাতির পিতা, তেমনি শেখ হাসিনা কিন্তু আজকে আওয়ামী লীগের নেত্রী না। তিনি এখন জাতির নেত্রী। এখন তাকে আওয়ামী লীগের প্রয়োজন না, প্রয়োজন হচ্ছে এই দেশের।
কিন্তু যে দেশে খন্দকার মোশতাকদের জন্ম হয়, মীর জাফররা জন্ম নেয়, সে দেশে আমার কেমন জানি ভয় হয়। সবাই সচেতন হউন। সজাগ হউন। আপনি যেমন শীতের সকালে জাতির পিতার জন্মশতবার্ষিকী করছেন। তেমনি আপনার মাথার উপর কিন্তু শকুনরা ঘুরছে আরেকটা ১৫ আগস্ট ঘটানোর জন্য।
আরেকটা ১৫ আগস্ট যদি হয়, সেটা হবে শেখ হাসিনাকে টার্গেট করে। বাংলাদেশ আর ঘুরে দাঁড়ানোর ক্ষমতা থাকবে কিনা, আমার যথেষ্ট সন্দেহ আছে।
এর আগে সদর উপজেলা কার্যালয় থেকে বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী, শিক্ষক ও অভিভাবকদের বর্ণাঢ্য র্যালি বের হয়ে ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ লিংক রোডের শিবু মার্কেট ঘুরে উপজেলা কার্যালয়ে গিয়ে শেষ হয়।