মোহাম্মদ আলী বোখারী, টরন্টো থেকে : কানাডার মন্ট্রিয়ল নগরীতে কমপক্ষে তিনটি বাণিজ্যিক আবাসিক সম্পত্তি, যার প্রতিটির মূল্য প্রায় ১.৮ মিলিয়ন ডলার অর্থাৎ সাকুল্যে ৩৫.১ কোটি টাকা, তা এখন বাংলাদেশের শীর্ষ অর্থপাচারকারী প্রশান্ত হালদারের অংশীদারিত্বভুক্ত রুনা কর্পোরেশন (৯২৬৬-৫৫৫৩ ক্যুইবেক ইনক্)-এর মালিকানায় ৭০ দিনের বেশি সময় ধরে বিক্রির বিজ্ঞাপনে স্থান পেয়েছে।
দৃশ্যত ওই সম্পত্তির দলিলে রুনা কর্পোরেশনের প্রেসিডেন্ট মোস্তাক সরকার, যিনি পেশায় অ্যাকাউনটেন্ট এবং ২০০৮ সালে চতুর্থবারের মতো পাপিন্যু আসনে কনজারভেটিভ পার্টি মনোনীত এমপি প্রার্থী হিসেবে দেশটির বর্তমান প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডোর সঙ্গে হেরেছেন, তিনি সেগুলো ২০১৪ সালের ১০ জানুয়ারি কিনেন, অর্থাৎ প্রশান্ত হালদার তার সঙ্গে যোগ দেবার ১০ দিনেরও কম সময়ে ক্রয়কৃত।
ওই সম্পত্তিগুলোর ঠিকানা যথাক্রমে ২৫০৫, ২৫১৫ ও ২৫২৫ সামেন লাভাল, অট্রেস, মন্টিয়ল (সেন্ট লরেন্ট এলাকাধীন)। তবে বিস্ময়করভাবে মোস্তাক সরকার যখন সম্পত্তিগুলো কিনেন, তখন দলিলে রুনা কর্পোরেশনের ঠিকানা ছিল ৫২৪, জ্যঁ ট্যালন ওয়েস্ট, অফিস ৩, মন্ট্রিয়ল, প্রদেশ ক্যুইবেক, এইচ৩এন ১আর৫, কানাডা।
এখন সেটাই তার ‘সরকার ফ্যামিলি হোপ ফাউন্ডেশন’ নামক দাতব্য প্রতিষ্ঠানের ঠিকানা হয়েছে, যা কানাডা সরকারের ‘নট ফর প্রোফিট’ আইনাধীনে ২০১৯ সালের ২৪ মে নিবন্ধিত এবং নিবন্ধন নম্বর ১১৪২৯৬৩-৯।
অর্থাৎ প্রশান্ত হালদার রুনা কর্পোরেশন ত্যাগের ঠিক এক মাস পর সেটির আত্মপ্রকাশ ঘটেছে। সম্প্রতি ওই প্রতিষ্ঠানটি কম্বোডিয়া, ঘানা ও বাংলাদেশে গৃহহীনদের গৃহনির্মাণের অভিলাষে মোট ১৩৫ ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান থেকে ৫৪,৩৭৭ ডলারের ফান্ডরেইজিং করেছে, যার ৩৬,৪৯৬ ডলারই নগদে সংগৃহীত।
ইতিমধ্যে ব্যাংক ঋণ জালিয়াতি, শেয়ার মার্কেটে প্রতারণা এবং ৩৫০০ কোটি টাকা অর্থাৎ ৫৪০ মিলিয়ন ডলার পাচারের বিষয়ে অভিযুক্ত প্রশান্ত হালদারের ইতিবৃত্ত বাংলাদেশের বেশকিছু জাতীয় দৈনিকে প্রকাশ পেয়েছে।
উপরন্তু আদালতের নির্দেশে তার সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত ও সকল ব্যাংক অ্যাকাউন্ট ফ্রিজ হয়েছে।
তবে কী টরন্টোয় প্রবাসীদের দাবির প্রেক্ষিতে সকল আলোচিত ও সংবাদে স্থান পাওয়া অর্থপাচারকারীদের বিরুদ্ধে কানাডার আইন প্রয়োগকারী সংস্থা যথাযথ তদন্তে নামবে, যেখানে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) কর্তৃক কানাডাকে এ বিষয়ে লিগ্যাল মিউচুয়্যাল রিকুয়েস্ট (এলএমআর) পাঠানোর উদ্যোগটি নেয়া হয়েছে?
সূত্রঃ দৈনিক আমাদের অর্থনীতি,দৈনিক আমাদের নতুন সময় এবং Daily Our Time.