ক্যাপ্টেন(অবঃ)মারুফ রাজুঃ দিল্লীতে ভয়াবহ সাম্প্রদায়িক সহিংসতায় বিজেপি সরকারের নীরবতা বড়ই লজ্জাজনক বলে মন্তব্য করেছেন কংগ্রেস নেত্রী প্রিয়াঙ্কা গান্ধী।
দ্য ওয়াল জানায়, দিল্লীর সহিংসতা নিয়ে বুধবার দুপুরে সংবাদ সম্মেলন করেন কংগ্রেস সভানেত্রী সোনিয়া গান্ধী। বৈঠক শেষেই নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বাধীন বিজেপি সরকারের বিরুদ্ধে তীব্র প্রতিক্রিয়া জানান প্রিয়াঙ্কা।
কংগ্রেস সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘কপিল মিশ্রর উসকানিমূলক মন্তব্য লজ্জার। কিন্তু তার চেয়েও বড় লজ্জা কেন্দ্রীয় সরকারের নীরবতা।’
দিল্লির প্রতিহিংসার দায় কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে নিতে হবে বলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর অমিত শাহের পদত্যাগ দাবি করেন প্রিয়াঙ্কা।
তিনি বলেন, ‘দিল্লির মানুষের কাছে আমার আবেদন, আপনারা শান্তি বজায় রাখুন। এই হিংসায় আসলে আপনাদের জীবনই সংকটের মধ্যে পড়ছে। এই পরিস্থিতির অবসান হোক।’
দিল্লির কংগ্রেস কর্মীদের উদ্দেশেও প্রিয়াঙ্কার বার্তা, ‘শান্তি প্রতিষ্ঠা করতে যা যা করতে হয় করুন।’
এদিকে টানা চার দিনের এই সহিসংতাকে ‘পরিকল্পিত ষড়যন্ত্র’ আখ্যা দিয়ে সংবাদ সম্মেলনে দাবি করেন কংগ্রেস নেত্রী সোনিয়া গান্ধী।
কংগ্রেস সভানেত্রী বলেন, ‘গত সপ্তাহে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী কোথায় ছিলেন? কী করছিলেন তিনি? পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাচ্ছে দেখেও কেন আগে থেকে সেনা ডাকা হলো না?’
দিল্লির সংঘর্ষের জন্য বিজেপিকে দায়ী করে তিনি বলেন, ‘এই সংঘর্ষের পেছনে পরিকল্পিত ষড়যন্ত্র রয়েছে। দিল্লির ভোটের সময় দেশবাসী সেটা দেখেছে।’
‘অনেক বিজেপি নেতা উসকানিমূলক মন্তব্য করে ভয় ও হিংসার পরিবেশ তৈরি করেছে। এমনকি, গত রবিবারও এক বিজেপি নেতা একই রকম মন্তব্য করেছেন’, যোগ করেন সোনিয়া গান্ধী।
প্রসঙ্গত, ভারতে বিতর্কিত নাগরিকত্ব আইন (সিএএ) বিরোধী বিক্ষোভকে কেন্দ্র করে রাজধানী দিল্লিতে কয়েক দশকের মধ্যে নজিরবিহীন সাম্প্রদায়িক সহিংসতার ঘটনা ঘটেছে। টানা চতুর্থ দিনের সহিংসতায় নিহত বেড়ে ২৩ জনে দাঁড়িয়েছে। আহত হয়েছে দুই শতাধিক।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যমগুলো জানায়, ‘হিন্দুয়োঁ কা হিন্দুস্তান’, ‘জয় শ্রীরাম’- এসব স্লোগান দিয়ে সংখ্যালঘু মুসলিমদের বাড়িঘর, দোকানপাট ও মসজিদে অগ্নিসংযোগ ও লুটপাটের ঘটনা ঘটেছে।
বিবিসি বাংলা জানায়, পুলিশের ভূমিকা নিয়ে বিতর্ক আছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে কিছু ভিডিও ছড়িয়ে পড়েছে, যেখানে দাঙ্গাকারীদের সঙ্গে পুলিশ দাঁড়িয়ে আছে দেখা যাচ্ছে। বিতর্কিত নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন (সিএএ) নিয়ে বিক্ষোভ বন্ধে ক্ষমতাসীন বিজেপি নেতা কপিল মিশ্রার আল্টিমেটামের কয়েক ঘণ্টা পর রবিবার রাজধানী দিল্লিতে সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়ে। সিএএ-বিরোধী বিক্ষোভকারীদের ওপর সশস্ত্র হামলা শুরু করে আইনটির সমর্থকরা।