DMCA.com Protection Status
title="৭

২৫ ফেব্রুয়ারীর ট্র্যাজেডি থেকে বেগম জিয়ার কারাদন্ড


অলিউল্লাহ নোমানঃ  ওমরা থেকে ফিরে মনে করেছিলাম পিলখানা হত্যাকান্ড নিয়ে লিখব। কিন্তু ইস্যুর পর ইস্যু। পাপিয়া, এনু-রুপম হট ইস্যু। ২৫ ফেব্রুয়ারীকে সামনে রেখে সরকার ইস্যু গুলো দিয়েছে। কোন গণমাধ্যমে ২৫ ফেব্রয়ারী নিয়ে তেমন কোন নিউজ দেখতে পাইনি। ইতিহাসের এই জঘন্যতম ঘটনাকে গণমাধ্যম গুলো সচেতন ভাবেই এড়িয়ে গেছে।

 

২৫ ফেব্রুয়ারী পিলখানা ট্র্র্যাজেডি আমরা ষ্মরণ করতাম। এখন আমরাও সেভাবে করি না। ৫৭জন সেনা অফিসারসহ ৭৪ জন খুন হয়েছিলেন পিলখানায়। অতীতে বড় বড় যুদ্ধেও একসাথে এত সেনা অফিসার নিহত হওয়ার নজির নেই। পিলখানা ট্র্যাজেডি দিয়ে মূল অভিযানের শুরু করেছিল আধিপত্যবাদীরা। শেষ এখনো হয়নি! এই অভিযানের ধারাবাহিকতা অব্যাহত রয়েছে। ধাপে ধাপে তাদের অভিযানের চরিত্র পাল্টিয়েছে মাত্র। পিলখানায় সেনা অফিসারদের মারা হয়েছে গুলি করে, বেয়নেট দিয়ে খুচিয়ে। তাদের পরিবারে নারী সদস্যদের ওপর চালানো হয়েছিল নারকীয় বিভৎসতা। ৭১ সালের পাক বাহিনীর অত্যাচারও হার মেনেছে পিলখানায়। এর মাধ্যমে একটি বাহিনীকে শেষ করা হয়েছে। বিডিআর আর নেই। নতুন বাহিনী গড়া হয়েছে। নাম বিজিবি!

রাজনৈতিক মঞ্চে এসে চরিত্র বদল করেছে এ অভিযান। শাহাবগে কথিত গণজাগরণ তৈরি করে রাজনৈতিক নেতাদের ফাঁসি জায়েজ করে নিয়েছে। এর আগে নির্বিঘ্নে প্রথমে ফাঁসি দেয়া হয়েছে ৫ সেনা কর্মকর্তাকে। যদিও তখন কেউ কেউ হাফছেড়ে বলেছিলেন, জাতি দায়মুক্তি লাভ করেছে! কিন্তু পরবর্তীতে কি ঘটবে সেটা কেউ তখন হয়ত: চিন্তাও করেনি। ৫ সেনা অফিসারের ফাঁসির মাধ্যমে অনেকেই জাতির দায়মুক্তির পথ দেখেছেন তখন!

শাহবাগরে নাটকীয় উত্থানের মাধ্যমে সাজানো নাটকের বিচারে ফাঁসি হয়েছে অনেক রাজনীতিকের। এ গুলো কোটাই বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়। সবই পিলখানার ধারাবাহিকতা! এর ধারবাহিকতায় সর্বশেষ শিকার হলেন বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়া। পিলখানার ধারাবাতিকতায়ই বেগম জিয়ার কারাদন্ড! সাজানো চকেই বেগম খালেদা জিয়াকে আটকের পথ প্রশস্ত করা হয়েছিল। কারো হয়ত: ভাবনায়ও ছিল না এমনটা। এমন একজন জনপ্রিয় নেত্রীকে এভাবে কারাগারে ধুকে ধুকে দিন কাটাতে হবে। মুক্তির জন্য দুয়ারে দুয়ারে হাটতে হবে। কেই হয়ত: ভাবেননি কখনো! এই অভাবনীয় বিষয়টি আজ বাস্তব।

পিলখানা ট্র্যাজেডি নির্বিঘ্নে অতিক্রমের পর বেগম খালেদা জিয়া পর্যন্ত পদক্ষেপ গুলো সহজ হয়ে গেছে। কেউ বিশ্বাস করুন আর নাই করুণ, পিলখানা ছিল প্রথম রাতে বিড়াল মারা ঘটনা! প্রথম রাতেই বিড়াল মেরে হজম করার সুযোগ পেয়েছে নির্বিঘ্নে। এরপর তাদের আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি। সাজনো কর্মসূচি একের পর এক তারা বাস্তবায়ন করছে মসৃণ পথে।

২০১২ সালের ডিসেম্বরে লন্ডরের শেষ দিকে লন্ডনে নির্বাসিত জীবন শুরু হয়েছিল। তাই ২০১৩-১৪ সালের ফেব্রুয়ারী আমার কাছে অনেক ষ্মরণীয়। লন্ডনে ২৫ ফেব্রুয়ারী এলেকই অনেক ষ্মরণ সভার আয়োজন হত। এমনকি সুদূর মানচেষ্টার থেকে আসতে হয়েছে ফেব্রুয়ারীর ষ্মরণসভা অনুষ্ঠানে যোগ দিতে। বিভিন্ন সংগঠন এই ষ্মরণ সভা গুলোর আয়োজন করত। একদিনে ৩টি সংগঠনের ষ্মরণসভাও হয়েছে। ২০১৫ সাল পর্যন্ত এই ধারাবাহিকতা অব্যাহত ছিল। এক পর্যায়ে ষ্মরণ সভা গুলো রাগব বোয়ালের পেটে ঢুকে যায়। তাই কেউ আর দায়িত্ব নিয়ে কারো বিরাগভাজন হতে চায় না এখন। এ গুলো করা মানে জালিম সরকারের কু দৃষ্ঠিতে পড়া। তারপর আবার নিজেদের রাগব বোয়ালদের বাঁকাচোখে পড়া। তাই হয়ত: এবার ২৫ ফেব্রুয়ারী কোন অনুষ্ঠানের আয়োজন কেউ করেনি লন্ডনে! এখন আর দায়িত্ব নিয়ে কেউ ২৫ ফেব্রুয়ারী শোকসভা বা ষ্মরণ সভার আয়োজন করেও না।

কিন্তু, এই ২৫ ফেব্রুয়ারীর ধারাবাহিকতায়ই বেগম খালেদা জিয়া কারাগারে, এটা সবাইকে ষ্মরণ রাখতে হবে।

বলতে পারেন এটা আবার কিভাবে!

বেগম খালেদা জিয়ার জন্য সেনাবাহিনীর বিদ্রোহ হবে। সেটা রুদ্ধ করে দিয়েছে ২৫ ফেব্রুয়ারী! রাজনৈতিক বিপ্লবের পথে হাটবে দেশ। এই পথ বন্ধ করে দিয়েছে একের পর এক সাজানো বিচারে ফাঁসির মঞ্চ গুলো। এসবই ছিল বেগম খালেদা জিয়াকে আটকের পূর্ব প্রস্তুতি!

 

 লেখকঃ  অলিউল্লাহ নোমান,সিনিয়র সাংবাদিক,দৈনিক আমার দেশ।

 

Share this post

scroll to top
error: Content is protected !!