ক্যাপ্টেন(অবঃ)মারুফ রাজুঃ চীন থেকে বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়া ভয়াবহ করোনা ভাইরাস এখন একটি মহা আতংকের নাম। এর ফলশ্রুতিতে অপ্রচলিত বন্য প্রানী খাওয়ার উপর নিষেধাজ্ঞা জারী হলে এখনও বন্ধ হয়নি এই অভ্যাস।
কোন প্রাণী থেকে মানুষের শরীরে এই ভাইরাস ছড়িয়েছে, তা এখনও পরিষ্কার হওয়া সম্ভব হয়নি। বাদুড়, সাপ ও বনরুই থেকে এই প্রাদুর্ভাব- এমনটিই সন্দেহ করা হচ্ছে।
তবে চীন স্বীকার করেছে, লাভজনক বন্যপ্রাণী ফার্মগুলো নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আসা উচিত, যাতে ভবিষ্যতে এখান থেকে আর কোনো ভাইরাস ছড়াতে না পারে।
নভেম্বরে চীনে যখন করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব দেখা দেয়, দেশটির বিভিন্ন স্থানে তখন সংক্রমণ বাড়বে সন্দেহে বন্ধ করে দেয়া হয় বন্যপ্রাণীর ব্যবসা। পাশাপাশি খাবার হিসেবে বন্যপ্রাণী পরিবেশনেও আসে নিষেধাজ্ঞা। মহামারি রোধ করতে চীন তার আকর্ষণীয় বন্যপ্রাণী শিল্পের লাগাম টেনে ধরার সিদ্ধান্ত নেয়।
এ লক্ষ্যে ফেব্রুয়ারিতে ‘বাস্তুসংস্থান, বৈজ্ঞানিক ও সামাজিক অবস্থার জন্য গুরুত্বপূর্ণ স্থল বন্যপ্রাণী’র সব ধরনের পালন ও খাদ্য হিসেবে ভোগ করার ওপর নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়।
চীনে খাদ্য হিসেবে বন্যপ্রাণী গ্রহণের সংস্কৃতি বহু পুরনো। এছাড়াও ওষুধ, পোশাক, অলঙ্কার তৈরিসহ বিভিন্ন কাজে বন্যপ্রাণী ব্যবহার করা হয়।
এর পরিপ্রেক্ষিতে চীনে বন্যপ্রাণীকে খাদ্য হিসেবে ব্যবহারে নিষেধাজ্ঞা কার্যকর কঠিন হবে বলে মনে করা হচ্ছে।
এর আগেও চীনে এমন ধরনের নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছিল। ২০০৩ সালে সার্স ভাইরাস সংক্রমণের পরিপ্রেক্ষিতে চীনে ভাইরাস সংক্রমণের সন্দেহে খাটাশ পালায় নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়। একইসঙ্গে সেসময় বিপুলসংখ্যক খাটাশ নিধন করা হয় দেশটিতে। এছাড়া সংক্ষিপ্ত সময়ের জন্য চীনের গুয়াংজু প্রদেশে সে সময় সাপ কেনা-বেচা নিষিদ্ধ করা হয়।
চীনের বাজারে খাঁচায় বন্দী এক খাটাশজনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এ নিষেধাজ্ঞার মাধ্যমে চীনে বন্যপ্রাণী থেকে ভাইরাস সংক্রমণ থেকে রক্ষায় প্রথম পদক্ষেপ নেওয়া হলো। তবে বেইজিংকে এ নিষেধাজ্ঞার ফাঁকির জায়গাগুলো চিহ্নিত করে তা বন্ধ করতে হবে এবং বন্যপ্রাণীকে খাদ্য হিসেবে গ্রহণে চীনের সাধারণ সাংস্কৃতিক দৃষ্টিভঙ্গিকে পরিবর্তন করতে হবে।
নভেম্বরে চীনের হুবেই প্রদেশের উহান থেকে প্রথম ছড়িয়ে পড়ে করোনা ভাইরাস। ধারনা করা হয়, উহানের মাছ বাজার থেকেই এ ভাইরাসের উৎপত্তি।