ক্যাপ্টেন(অবঃ)মারুফ রাজুঃ যশোরে চিকিৎসক ও নার্সের চরম অবহেলায় এক পুলিশ কর্মকর্তার স্বামীর মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। ওসি পদমর্যদার ওই নারীর পুলিশ কর্তার অভিযোগ অক্সিজেনসহ ওষুধপত্র সময় মতো না দেয়ায় তার স্বামীর মৃত্যু হয়েছে। তিনি এ ঘটনায় অভিযুক্তদের শাস্তি দাবি করেছেন। অবশ্য হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের দাবি রোগী ভর্তির পর চিকিৎসকগণ চিকিৎসাপত্র দিয়েছেন। তবে খুব বেশি সময় পাওয়া যায়নি যে কারণে তিনি মারা গেছেন।
নড়াইলের নড়াগাতি থানার ওসি ইনসপেক্টর রোকসানা খাতুন জানান, তার স্বামী আহসানুল ইসলাম বাংলাদেশে রেলওয়েতে কর্মরত। তিনি যশোর কোতোয়ালি থানার স্টাফ কোয়ার্টারে থাকেন। আজ সকাল সাড়ে ৬টার দিকে হঠাৎ করে তার বুকে ব্যথা ও দম বন্ধ হয়ে যাচ্ছিল। এসময় তিনি যশোর কোতোয়ালী থানার ওসিকে ফোন দিয়ে তার স্বামীকে হাসপাতালে পাঠান।
যশোর জেনারেল হাসপাতালের জরুরি বিভাগ তাকে ভর্তি নিয়ে করোনারি কেয়ার ইউনিটের সিসিইউ ওয়ার্ডে পাঠায়। সেইসময় দায়িত্ব পালনকারী চিকিৎসক তার ওষুধ লিখে পায়ের কাছে স্লিপ রেখে চলে যান। শ্বাসকষ্ট হলেও তাকে অক্সিজেন দেয়া হয়নি। এসময় তার স্বামী ফোন করে চিকিৎসা অবহেলার কথা জানান। তিনি ফোনে জানান আমাকে শোয়ায়ে রেখেছে কেউ নাই। করোনা মনে করে আমাকে কেউ চিকিৎসা দেবে না মনে হয়।
তিনি আরো জানান, পরে ফোন দিলে তার স্বামী ফোন রিসিভ করেনি। পাশের বেডের রোগীর স্বজনরা ফোন ধরে চিকিৎসার অবহেলার কথা জানান এবং বলেন রোগীর অবস্থা খুব খারাপ। ওষুধ আনতে হবে। এসময় পাশের বেডের রোগীর স্বজনদের তিনি ওষুধ কিনে আনতেও অনুরোধ করেন। পরে পুলিশ সুপার তাকে তার স্বামীর মৃত্যুর খবর জানান।
ইনসপেক্টর রোকসানা খাতুন অভিযোগ করেন, পুলিশ এ দুযোর্গে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে মানুষের পাশে রয়েছে। আর একজন পুলিশ সদস্যের স্বজনের পাশে দাঁড়ালো না চিকিৎসকরা। তিনি চিকিৎসা অবহেলায় স্বামীর মৃত্যু দাবি করে দায়িত্ব অবহেলাকারীদের শাস্তির দাবি জানান। তিনি বলেন, আমার সন্তানদের এতিম করে দিলো চিকিৎসকরা। প্রধানমন্ত্রী ছাড়া এদের শাস্তি দেবার কেউ নেই। আমি প্রধানমন্ত্রীর কাছে শাস্তি দাবি করছি।
অবশ্য হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের দাবি রোগী ভর্তির পর চিকিৎসকগণ চিকিৎসাপত্র দিয়েছেন। তবে খুব বেশি সময় পাওয়া যায়নি যে কারণে তিনি মারা গেছেন।
হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক দিলিপ কুমার রায় বলেন, করোনারি কেয়ার ইউনিটে ভর্তির পর চিকিৎসক তাকে দেখে চিকিৎসাপত্র দেন। হাসপাতাল থেকে যা সরবরাহ করার তা রোগীকে দেয়া হয়। কিন্তু বাইরে থেকে ওষুধ আনতে হবে রোগীর পাশে তার কোন লোক না থাকায় সেটা আনা হয়নি। তাছাড়া রোগী মাত্র ১০মিনিট সময় দিয়েছে। ফলে তাকে বাঁচানো সম্ভব হয়নি। পুলিশের উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ দায়িত্বরত চিকিৎসকের সাথে কথা বলেছেন তারা সন্তুষ্টচিত্তে ফিরে গেছেন।
অক্সিজেন কেন দেয়া হয়নি এমন প্রশ্নের জবাবে হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক বলেন, অক্সিজেন দেবার দায়িত্ব নার্সের। কেন তাকে অক্সিজেন দেয়া হয়নি তা এখনও সংশ্লিষ্ট বিভাগের চিকিৎসকরা তাকে জানাননি।