ক্যাপ্টেন(অবঃ)মারুফ রাজুঃ চট্টগ্রামে মাত্র এক সপ্তাহের মধ্যে বিশ হাজার বস্তা করোনা ত্রাণের চাউল বস্তা পাল্টিয়ে খোলাবাজারে বিক্রি করে দেয়া হয়েছে।
শুধুমাত্র একটি গুদামে অভিযান চালিয়ে পুলিশ বিক্রয় নিষিদ্ধ ১৬ মণ চাল উদ্ধার করেছে। ২১ বস্তাভর্তি এসব চাল বিক্রির জন্য তৈরি করা হচ্ছিল।
অবশ্য পুলিশ ওই গুদাম থেকে ‘শেখ হাসিনার বাংলাদেশ, ক্ষুধা হবে নিরুদ্দেশ’ লেখা ১৫ শত খালি বস্তা উদ্ধার করেছে। এসময় উক্ত গুদাম সিল করে দেয়া হয়। গ্রেপ্তার করা হয় এক কর্মচারীকে। গুদামের কর্মচারীরা পুলিশের কাছে স্বীকার করে যে, গত এক সপ্তাহে এ ধরনের বিশ হাজার বস্তা চাল খালি করে বস্তা পাল্টিয়ে বাজারে বিক্রি করা হয়েছে। খাদ্য অধিদপ্তরের এসব চাল সরকারি গুদাম থেকে কি করে ঈদগাঁ এলাকার একটি গুদামে পৌঁছলো তা নিয়ে তদন্ত শুরু হয়েছে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্র জানায়, খাদ্য অধিদপ্তরের বিপুল পরিমাণ ত্রাণের চাল বস্তা পাল্টিয়ে বাজারজাত করা হচ্ছে। এমন খবরের ভিত্তিতে ডিসি(পশ্চিম) মোহাম্মদ ফারুকুল হকের নির্দেশে সহকারী পুলিশ কমিশনার শ্রীমা চাকমা একদল পুলিশ নিয়ে অভিযানে যান।
গতকাল বিকেলে নগরীর ডবলমুরিং থানার ঝর্ণাপাড়া এলাকায় মুনমুন কমিউনিটি সেন্টারের গলিতে বিসিকের ভাড়া দেয়া একটি গুদামে এ অভিযান চালানো হয়। বিসিক থেকে ভাড়া নিয়ে পাহাড়তলীর চাল ব্যবসায়ী মোহাম্মদ ফারুক গুদামটি ব্যবহার করছিলেন। খাদ্য অধিদপ্তরের তালিকাভুক্ত ঠিকাদার মোহাম্মদ ফারুকের প্রতিষ্ঠানের নাম ফারুক ট্রেডার্স। এ গুদাম থেকে উক্ত চাল উদ্ধার করা হয়। প্রতি বস্তায় ত্রিশ কেজি চাল রয়েছে। উক্ত বস্তা থেকে চালগুলো নিয়ে নুরজাহান ব্রান্ডের বস্তায় ৫০কেজি করে বাজারজাত করা হচ্ছিল।
এঘটনায় ফারুক ট্রেডার্সের কর্মচারী আরাফাত মোস্তফাকে ঘটনাস্থল থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। পুলিশের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তিনি স্বীকার করেন, গত এক সপ্তাহে এ গুদামে এধরনের বিশ হাজার বস্তা চাল বস্তা পাল্টিয়ে বাজারজাত করা হয়েছে। এসব চাল সরকারের ত্রাণের উল্লেখ করে পুলিশ জানায়, সংঘবদ্ধ একটি চক্র বিশ হাজার বস্তা চাল বিক্রি করে দিয়েছে। পুলিশ চক্রটিকে ধরার জন্য অভিযান শুরু করেছে।
নগর পুলিশের ডিসি(পশ্চিম ) মোহাম্মদ ফারুকুল হক বলেন, ’বস্তা পাল্টিয়ে বাজারজাত করার সময় ২১ বস্তা বিক্রয় নিষিদ্ধ সরকারি চাল আমরা পেয়েছি। প্রতি বস্তায় ৩০ কেজি করে ৬৩০ কেজি চাল পাওয়া গেছে। প্রত্যেক বস্তায় খাদ্য অধিদফতরের সিল আছে। কয়েকজন শ্রমিক খাদ্য অধিদফতরের সিল লাগানো বস্তা থেকে চালগুলো বের করে সাধারণ বস্তায় ভরছিল। আমরা দেড় হাজার খালি বস্তাও উদ্ধার করেছি।
মোহাম্মদ ফারুকুল হক জানান, করোনা নিয়ে ব্যস্ত থাকায় বিষয়টি নিয়ে এখনও ব্যাপকভাবে কাজ শুরু করা সম্ভব হয়নি। তবে কাল (আজ) থেকে বিষয়টি নিয়ে কাজ করবো।
ডবলমুরিং থানার ওসি (তদন্ত) মোহাম্মদ জহির হোসেন বলেন, এব্যাপারে একটি মামলার প্রক্রিয়া চলছে।
সূত্রঃ দৈনিক আজাদী।