ক্যাপ্টেন(অবঃ)মারুফ রাজুঃ করোনা সঙ্কটের ভয়াবহতায় এবার তার নাগরিকদের বাংলাদেশ থেকে সরিয়ে নিচ্ছে কানাডা।
বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত দেশটির নাগরিকসহ প্রায় ৩ হাজার কানাডিয়ান জরুরি ভিত্তিতে ফিরতে চান। তারা এরই মধ্যে দূতাবাসে রেজিস্ট্রেশন বা নিবন্ধিত হয়েছেন।
তবে কূটনৈতিক সূত্র জানিয়েছে আপাতত সাত শত জনকে স্পেশাল ফ্লাইটে পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে কানাডিয়ান দূতাবাস। সে মতে তারা কাতার এয়ারওয়েজের দুটি বোয়িং-৭৭৭ উড়োজাহাজ ভাড়া করেছেন। আজ রাতে একটি এবং আগামী ১৬ই এপ্রিল অপর ফ্লাইটটি ঢাকায় নামানো এবং উড্ডয়নের ক্লিয়ারেন্স দিয়েছে বাংলাদেশ সরকার।
রাত ৮টার দিকে ছেড়ে যাওয়ার প্রস্তুতিতে থাকা আজকের ফ্লাইটে ৩২০-৩৫০ জনের মত কানাডিয়ান যেতে পারেন। এরইমধ্যে তারা বিমানবন্দরের পথে রয়েছেন। দুপুরের পর তাদের বোর্ডিং কার্যক্রম শুরু হবে।
উল্লেখ্য, ঢাকায় আটকে পড়া হাজার হাজার নাগরিককে সরিয়ে নিতে যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, অস্ট্রেলিয়াসহ অরগানাইজেশন ফর ইকোনমিক কোঅপারেশন অ্যান্ড ডেভেলপমেন্টের (ওইসিডি) সদস্য রাষ্ট্রগুলো নিয়মিত ফ্লাইটের সুযোগ চেয়েছিল। তারা ৭ই এপ্রিলের বন্ধ সীমিত পরিসরে রুটিন ফ্লাইট চালুর অনুরোধ করেছিলো। জবাবে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে উদ্ভূত করোনা স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত নিয়মিত ফ্লাইট চলাচলের সম্ভাবনা কম জানিয়ে বিশেষ চার্টার্ড ফ্লাইটে নিজ নিজ নাগরিকদের ফিরিয়ে নেয়ার পরামর্শ দেয়া হয়।
সরকারের ওই বার্তা পাওয়ার পর কানাডা, ব্রিটেন, অস্ট্রেলিয়াসহ বেশ ক'টি দেশ সক্রিয় হয়েছে। ব্রিটেন দুটি স্পেশাল ফ্লাইট পরিচালনায় সরকারের সহযোগিতা চেয়েছে। অস্ট্রেলিয়াও একটি স্পেশাল ফ্লাইটে নাগরিকদের সরিয়ে নাতে চায়। যুক্তরাষ্ট্রসহ অন্যরা আগেই ব্যবস্থা নিয়েছে। সর্বশেষ সোমবার ১৭ শিশুসহ ৩২৮ নাগরিককে তৃতীয় স্পেশাল ফ্লাইটে সরিয়ে নিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।
গত ৩০ মার্চ কাতার এয়ারওয়েজের বোয়িং-৭৭৭ উড়োজাহাজ দিয়ে পরিচালিত প্রথম ফ্লাইটে ২৬৯ জন এবং ৫ই এপ্রিল দ্বিতীয় স্পেশাল ফ্লাইটে ৩২২ নাগরিক, কূটনীতিক ও তাদের পরিবারের সদস্যদের ঢাকা থেকে ফিরিয়ে নেয় যুক্তরাষ্ট্র। সঙ্গে মার্কিন কূটনীতিকদের পোষা ৯টি কুকুর ও একটি বিড়ালকেও ফেরানো হয়। তবে এখানে অবশিষ্ট মার্কিন নাগরিকদের সেবাসহ রুটিন কার্যক্রমে দূতাবাস খোলা থাকছে। রাষ্ট্রদূত রবার্ট মিলারও ঢাকায় রয়েছেন বলে জানানো হয়েছে।
ওদিকে গত শুক্রবার দুপুরে জার্মান সরকারের ভাড়া একটি বিশেষ ফ্লাইটে করোনা পরিস্থিতিতে ঢাকা ছেড়ে যান ইউরোপের ১৫ দেশের ১২৪ নাগরিক। এর মধ্যে ইউরোপীয় ইউনিয়ন ডেলিগেশন কার্যালয়ের কর্মকর্তাসহ ইইউ জোটভুক্ত দেশগুলোর ১১০ নাগরিক এবং পূর্ব ইউরোপের দেশ ইউক্রেনের ১৪ জন নাগরিক ফ্রাঙ্কফুর্টের উদ্দেশ্যে ঢাকা ছেড়ে যান।
এর আগে পৃথক ৪টি বিশেষ ফ্লাইটে ৩২৭ জন জাপানের নাগরিক, মালয়েশিয়ার ২২৫ নাগরিক, ১৩৯ জন ভুটানের নাগরিক এবং ১৭৮ রাশিয়ার নাগরিক বাংলাদেশ ত্যাগ করেন।