ক্যাপ্টেন(অবঃ)মারুফ রাজুঃ ঢাকা থেকে গুম হওয়ার দীর্ঘ ৫৩দিন পর ফটো সাংবাদিক শফিকুল ইসলাম কাজলের খোঁজ মিলেছে যশোহরের বেনাপোল পোর্টে।
তিনি এখন বেনাপোল পোর্ট থানা পুলিশের হেফাজতে আছেন বলে গনমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছেন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মামুন খান।
কাজলের স্ত্রীর জুলিয়া ফেরদৌসী জানান, আজ রবিবার ভোর রাত পৌনে তিনটার দিকে তার ছেলের সঙ্গে তার স্বামীর কথা হয়েছে। বেনাপোল থানার একজন পুলিশ সদস্যের ফোন থেকে তিনি পরিবারের সঙ্গে কথা বলেন।
ভোরে তার ছেলে মনোরম পলক তাকে আনতে বেনাপোলের উদ্দেশে রওনা দিয়েছেন।
মনোরম পলক বলেন, সাংবাদিক কাজল তাকে ফোনে বলেছেন, ‘বাবা আমি জীবিত আছি। তোমরা ভোরের গাড়িতে চলে আসো। আমি এখন বেনাপোলের উদ্দেশে যাচ্ছি, রাস্তায় আছি।’
বেনাপোল রঘুনাথপুর বিজিবি ক্যাম্পের কমান্ডার হাবিলদার আশেক আলী সাংবাদিক শফিকুল ইসলাম কাজলকে পাওয়ার ব্যাপারে প্রথমে নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, ‘সাংবাদিক কাজলকে রাতে টহল দলের বিজিবি সদস্যরা সাদিপুর সীমান্তের একটি মাঠের মধ্যে থেকে উদ্ধার করে। বিজিবি পরে বেনাপোল পোর্ট থানা পুলিশের কাছে তাকে সোপর্দ করে। কাজলের পরিবারের সদস্যরা খবর পেয়ে রাতেই তাকে নিতে বেনাপোলের উদ্দেশে ঢাকা ছেড়েছেন।’
কাজলের স্ত্রী বলেন, ‘তাকে ফিরে পেয়েছি, আমরা অনেক খুশি। একজন মানুষ নিখোঁজ থাকলে যে তার কি ভয়াবহ কষ্ট, সেটা বলে বুঝানো যাবে না। আমরা চাই তিনি নিরাপদে বাড়ি ফিরে আসুক।’
কাজলের বিষয়ে তথ্য জানার জন্য এখন পর্যন্ত কোনো সংবাদকর্মীকে বেনাপোল পোর্ট থানায় প্রবেশ করতে দেওয়া হয়নি। জানা গেছে, মনোরম পলক পৌঁছনোর পরে তার কাছে কাজলকে হস্তান্তর করা হবে এবং সকাল ১১টার দিকে তার সঙ্গে কথা বলার সুযোগ হতে পারে।
গত ১০ মার্চ সন্ধ্যায় রাজধানীর হাতিরপুলের ‘পক্ষকাল’-এর অফিস থেকে বের হন সাংবাদিক শফিকুল ইসলাম কাজল। এরপর থেকে তার কোনো সন্ধান না পেয়ে পরদিন ১১ মার্চ চকবাজার থানায় সাধারণ ডায়েরি করেন তার স্ত্রী জুলিয়া ফেরদৌসি নয়ন। ১৩ মার্চ জাতীয় প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে শফিকুল ইসলাম কাজলকে সুস্থ অবস্থায় ফেরত দেওয়ার দাবি জানায় তার পরিবার।
সাংবাদিক কাজল নিখোঁজ হওয়ার প্রায় এক মাস পর তার ফোন নম্বরটি বেনাপোলে চালু হয়েছিল। তখন কাজল নিখোঁজের বিষয়টির তদন্ত কর্মকর্তা চকবাজার থানার এসআই মুন্সী আবদুল লোকমান বলেছিলেন, ‘নিখোঁজ সাংবাদিক কাজলের ফোন নম্বরটি চালু হয়েছিল। লোকেশন দেখিয়েছে বেনাপোল।’
উল্লেখ্য, মাগুরা-১ আসনের এমপি সাইফুজ্জামান শিখর তার বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করার দুইদিন পরেই তিনি গুম হন। তিনি নিজেকে আধ্যাত্মিক পুরুষ ‘কাজল ফকির’ পরিচয়ে ফেসবুকে লেখালেখি করতেন।