ক্যাপ্টেন(অবঃ)মারুফ রাজুঃ চীন এবং ভারতের মাঝে আসন্ন সংঘাতে বিপর্যয়ের আশঙ্কায় থমথমে লাদাখ অঞ্চল। গালওয়ানে চীনা সেনার আগ্রাসী সমরসজ্জায় অশনি সংকেত দেখছেন ভারতের পাহাড়ি অঞ্চলটির বাসিন্দারা। দ্রুত সংঘাতের আবহ না কাটলে চীন ও ভারতের মধ্যে যুদ্ধ এক প্রকার আসন্ন বলেই মনে করছেন প্রতিরক্ষা বিশেষজ্ঞদের একাংশ।
প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা বা লাইন অফ অ্যাকচুয়াল কন্ট্রোল-এর কাছে এবার ১০ হাজার চীনা সেনার প্রস্তুতি আগের বারের চেয়ে সম্পূর্ণ ভিন্ন।
গালওয়ান উপত্যকায় গত দু’সপ্তাহে ১০০টিরও বেশি তাঁবু গেড়েছে পিপলস লিবারেশন আর্মি (PLA)। এরইমধ্যে তারা গালওয়ান উপত্যকাকে নিজেরদের দাবিও করছে। ভাতীয় সেনা সূত্রের বরাত দিয়ে সংবাদ প্রতিদিন জানিয়েছে, প্যাংগং সো আর গালওয়ান উপত্যকায় অতিরিক্ত দু’ থেকে আড়াই হাজার সেনা মোতায়েন করেছে চীন।
গালওয়ানে বেশ কয়েকটি বাঙ্কার তৈরিরও চেষ্টা চালাচ্ছে বেইজিং। প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা বরাবর বিতর্কিত এলাকাগুলোতে সেনা সমাবেশ বাড়িয়েছে ভারতও। ফলে, ২০১৭-র ডোকলাম পরিস্থিতির পর প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখায় ভারত ও চীনের মধ্যে ফের চরম উত্তেজনার সৃষ্টি হয়েছে।
এদিকে, পরিস্থিতি সমাধানের জন্য ভারতকে পতাকা বৈঠকের আহ্বান জানিয়ে পরে প্রত্যাখ্যান করেছে চীন। অন্যদিকে, পিএলএর সাথে ঘনিষ্ঠ চীনের একটি প্রতিরক্ষা ওয়েবসাইট দাবি করেছে, যে পুরো গালওয়ান নদী উপত্যকাটি চীনের একটি অংশ।
ভারতীয় বিশেষজ্ঞদের মতে, আকসাই চীন বহুদিন ধরেই চীনের দখলে। তা সহজে দখলমুক্ত করায় যাবে না। অরুণাচল প্রদেশের বেশকিছু এলাকা নিয়েও চীনের দাবি রয়েছে। কিন্তু এবার চীন বেশি উদ্বিগ্ন গিলগিট-বাল্টিস্তান এলাকা নিয়ে।
কারণ পাকিস্তানঅধিকৃত কাশ্মীরের ওই অংশের উপর দিয়ে গেছে চীন-পাকিস্তান ইকোনমিক করিডর বা CPEC-র একটি বড় অংশ। কাশ্মীরে ৩৭০ রদ হওয়ায় এবং জম্মু, কাশ্মীর ও লাদাখকে তিনটি কেন্দ্রশাসিত এলাকায় পরিণত করার দিল্লির পদক্ষেপের পর থেকেই বেইজিংয়ের উদ্বেগ বেড়েছে।
তাছাড়া, শ্রীলঙ্কার হামবানটোটা ও পাকিস্তানের করাচি বন্দরে বিশাল রণতরী বহর মোতায়েন করে ভারতীয় নৌ-সেনাকে ঘিরে ফেলে ভারত মহাসাগরে নিজের সামরিক প্রভূত্ব গড়ে তুলতে চাইছে কমিউনিস্ট দেশটি। তাই লাদাখকে নিজের হাতে রাখার দরকার বেইজিংয়ের। সেজন্যই এবার যে কোনও ভাবে লাদাখে ঢুকে পড়তে চাইছে চীন।