DMCA.com Protection Status
title="শোকাহত

এবার ওসামা বিন লাদেনকে শহীদ আখ্যা দিলেন পাক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান।

ক্যাপ্টেন(অবঃ)মারুফ রাজুঃ  পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান বৃহস্পতিবার সংসদে দেওয়া এক ভাষণে সাবেক আল কায়েদা নেতা ওসামা বিন লাদেনকে ‌‌‘শহীদ’ হিসেবে আখ্যায়িত করার পর ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়েছেন।

দেশটির বিরোধী দলগুলো ইমরান খানের তীব্র সমালোচনা করেছে বলে জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।

ইসলামাবাদ এবং ওয়াশিংটনের সম্পর্কের অবনতি বিষয়ে পাকিস্তানের সংসদে কথা বলার সময় এই মন্তব্য করেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী।

Corona Awareness

00:00

00:08 / 01:13

মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সম্প্রতি তাদের এক প্রতিবেদনে পাকিস্তানকে ‘আঞ্চলিকভাবে সক্রিয় সন্ত্রাসী গোষ্ঠী’র জন্য নিরাপদ আশ্রয়স্থল’ হিসেবে উল্লেখ করার পর ওই প্রতিবেদনের বিরুদ্ধে একটি বিবৃতি প্রকাশ করে পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ওই বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়, ‘এই অঞ্চলে আল কায়েদার শক্তি অনেক কমেছে বলে প্রতিবেদনে স্বীকার করা হলেও, আল কায়েদাকে ধ্বংস করার পেছনে পাকিস্তানের উল্লেখযোগ্য ভূমিকাকে উপেক্ষা করা হয়েছে প্রতিবেদনে।’

কী বলেছেন ইমরান খান?

মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের প্রতিবেদনের প্রতিক্রিয়ায় জবাবে পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিবৃতির প্রেক্ষিতে বৃহস্পতিবার সংসদে ওসামা বিন লাদেনের প্রসঙ্গ তোলেন প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান।

তিনি বলেন, ‘আমরা যেভাবে সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধে তাদের (যুক্তরাষ্ট্রকে) নিঃশর্ত ভাবে সমর্থন দিয়েছি এবং তার বিনিময়ে আমার দেশকে যে পরিমাণ অপমান সহ্য করতে হয়েছে, আমার মনে হয় না সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধে সমর্থন দিয়ে আর কোনো দেশকে কখনো এতটা অপমানিত হতে হয়েছে।’

মার্কিন বাহিনী পাকিস্তানের কর্তৃপক্ষকে না জানিয়ে পাকিস্তানের  মাটিতেওসামা বিন লাদেনের বিরুদ্ধে অভিযান চালানোয় ক্ষোভ প্রকাশ করেন ইমরান খান। তিনি বলেন, ‘তারা অ্যাবোটাবাদে এসে ওসামা বিন লাদেনকে হত্যা করে, শহীদ করে দেয়।’

ইমরান খান বলেন, ‘আমাদের মিত্র আমাদের অজ্ঞাতে আমাদের দেশের ভেতরে ঢুকে একজনকে মেরে ফেলে এবং আমাদেরকেই জানায় না। আর এরপর পুরো পৃথিবীর মানুষ আমাদের সম্পর্কে নেতিবাচক মন্তব্য করেছে। সে সময় বিশ্বের যত দেশে পাকিস্তানিরা ছিল, তাদের সবাইকে ভোগান্তি পোহাতে হয়েছে।’

রয়টার্সের খবর অনুযায়ী, ইমরান খানের এই মন্তব্যের পর সংসদেই তার সমালোচনা করেন বিরোধী দল পিএমএল (এন) এর সিনিয়র নেতা ও দেশটির সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী খাজা আসিফ।

ওসামা বিন লাদেনকে ‘চরম সন্ত্রাসী’ হিসেবে উল্লেখ করে খাজা আসিফ সংসদে তার বক্তব্যে বলেন, ‘সে (ওসামা বিন লাদেন) আমার দেশকে ধ্বংস করেছে আর তিনি (ইমরান খান) তাকে শহীদ বলছেন।’

পাকিস্তানের পিপলস পার্টির নেতা বিলাওয়াল ভুট্টো জারদারি-যার দল ২০১১ সালে অ্যাবোটাবাদ অভিযানের সময় ক্ষমতায় ছিল-ইমরান খানের বিরুদ্ধে সহিংস সন্ত্রাসবাদের প্রশংসা করার অভিযোগ তুলেছেন

তবে ইমরান খানের বক্তব্য এবং বিরোধী দলের সমালোচনা সম্পর্কে জানতে চাওয়া হলে পাকিস্তান সরকারের মুখপাত্র রয়টার্সের কাছে কোনো মন্তব্য করেননি। ২০০১ সালে নিউইয়র্কে টুইন টাওয়ার হামলার মূল অভিযুক্ত ওসামা বিন লাদেন পাকিস্তানের অ্যাবোটাবাদ শহরে মার্কিন বাহিনীর হামলায় মারা যায় ২০১১ সালে।

ওই সময় আফগানিস্তান থেকে মার্কিন বাহিনীর হেলিকপ্টার পাকিস্তানের ভেতরে ঢুকে অভিযান চালালেও সে সম্পর্কে পাকিস্তান সরকার জানতো না।

গণমাধ্যমে যেভাবে উঠে এসেছে ইমরান খানের মন্তব্য

লাদেন সম্পর্কে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রীর এই মন্তব্যের খবর প্রকাশ করেছে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের গণমাধ্যম। তবে সবচেয়ে বেশি সমালোচনা তৈরি হয়েছে ভারতের সংবাদ মাধ্যমগুলোতে। ভারতের অধিকাংশ নিউজ ওয়েবসাইট, পত্রিকা ও টেলিভিশন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রীর এই মন্তব্যের সমালোচনা করে খবর প্রকাশ করেছে।

তবে ভারত ছাড়াও ব্রিটেন, আমেরিকা, অস্ট্রেলিয়ার কয়েকটি সংবাদ মাধ্যমেও ইমরান খানের এই মন্তব্যের সমালোচনা করে খবর প্রকাশ করা হয়েছে।

অন্যদিকে, ইমরান খানের ওই মন্তব্যের পক্ষে যুক্তি দেখিয়ে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রীর রাজনৈতিক যোগাযোগ বিষয়ক বিশেষ সহকারী শাহবাজ গিলের করা একটি টু্‌ইট পাকিস্তানের পত্রিকা ডন তাদের রিপোর্টে ব্যবহার করেছে ।

ইমরান খানের মন্তব্যকে অপ্রয়োজনীয়ভাবে বিতর্কিত করা হচ্ছে বলে শাহবাজ গিল ওই টুইটে উল্লেখ করে বলেন যে, ইমরান খান একবার ওসামা বিন লাদেনকে শহীদ বললেও তার বক্তব্যে দু'বার 'হত্যা' শব্দটি ব্যবহার করেছেন।

Share this post

scroll to top
error: Content is protected !!