ক্যাপ্টেন(অবঃ)মারুফ রাজুঃ অর্থ ও মানবপাচারের গুরুতর অভিযোগে কুয়েতে গ্রেপ্তার লক্ষ্মীপুর-২ আসনের এমপি কাজী শহিদ ইসলাম পাপুলের মামলায় দেশটিতে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত এসএম আবুল কালামকেও অভিযুক্ত করা হতে পারে বলে জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম পর্যবেক্ষণকারী লন্ডনভিত্তিক সংস্থা দ্য মিডল ইস্ট মনিটর।
এই মামলার বিস্তারিত তথ্যের উদ্ধৃতি দিয়ে শুক্রবার (১০ জুলাই) 'বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূতের বিরুদ্ধে মানবপাচারের মামলা করতে পারে কুয়েত' শিরোনামে প্রকাশিত প্রতিবেদনটিতে বলা হয়েছে, ঘটনাপ্রবাহ দেখে মনে হচ্ছে, এই স্ক্যান্ডাল শুধু একজন এমপির নৈতিক স্খলনের বিচ্ছিন্ন কোন ঘটনা নয়। ধারণা করা হচ্ছে, কুয়েতে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূতও অপরাধ জগতের সাথে জড়িয়ে পড়েছেন।
বিভিন্ন অভিযোগে এমপি শহীদুল ইসলাম পাপুল আটক হবার পর বাংলাদেশের অবৈধ হাসিনা সরকারের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আবদুল মোমেন মানবপাচারে জড়িত থাকার অভিযোগে রাষ্ট্রদূত এসএম আবুল কালামকে সতর্ক করতে বাধ্য হন। সম্প্রতি মোমেন বলেছেন রাষ্ট্রদুতের বিরুদ্ধে কুয়েত অভিযোগ দায়ের করলে বাংলাদেশও তাকে কোন ছাড় দেবে না।
‘মানি লন্ডারিং এবং মানবপাচারের বিরুদ্ধে আমাদের সরকার জিরো টলারেন্স নীতি মেনে চলে। যে দলই করুক না কেন তাকে শাস্তি পেতেই হবে’, মোমেন বলেছেন।
রাষ্ট্রদূত কালামের নিয়োগের মেয়াদ এ মাসেই শেষ হচ্ছে, যার মানে তিনি বাংলাদেশে ফিরতে যাচ্ছেন। এ বিষয়ে মোমেন বলেন, ‘কুয়েতে আমরা আমাদের পরবর্তী রাষ্ট্রদূত চূড়ান্ত করে ফেলেছি।’
প্রসঙ্গত, অর্থ ও মানবপাচারের অভিযোগে গ্রেপ্তার এমপি শহিদ ইসলাম পাপুল কুয়েতের নাগরিকত্ব পাননি বলে জানিয়েছে উপসাগরীয় দেশটির স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। সাধারণ শ্রমিক হিসাবে কুয়েত গিয়ে বিশাল সাম্রাজ্য গড়া পাপুল ২০১৮ সালে আওয়ামী লীগ সমর্থিত স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। শুধু তাই নয়, নিজের স্ত্রী সেলিনা ইসলামকেও সংরক্ষিত আসনে সংসদ সদস্য করে আনেন তিনি।
মারাফি কুয়েতিয়া কোম্পানির অন্যতম মালিক পাপুলকে গত ৬ জুন রাতে কুয়েতের মুশরিফ এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। পাচারের শিকার পাঁচ বাংলাদেশির অভিযোগের ভিত্তিতে মানবপাচার, অর্থপাচার ও ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানের কর্মীদের শোষণের অভিযোগ আনা হয় তার বিরুদ্ধে। প্রবাসী উদ্যোক্তাদের প্রতিষ্ঠিত এনআরবি কমার্শিয়াল ব্যাংকেও পাপুলের বড় অঙ্কের শেয়ার রয়েছে। কুয়েতে গ্রেপ্তার হওয়ার পর তাকে ওই ব্যাংকের ভাইস চেয়ারম্যানের পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়।
পাপুল ও তার কোম্পানির ব্যাংক হিসাব ইতিমধ্যে জব্দ করেছে কুয়েত কর্তৃপক্ষ। বাংলাদেশেও তার বিষয়ে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ।
চলতি সপ্তাহে বুধবার জাতীয় সংসদে অনির্ধারিত আলোচনায় পাপুল প্রসঙ্গ এলে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সে কুয়েতের নাগরিক কী না… সেটা কিন্তু কুয়েতের সাথে আমরা কথা বলছি, সেটা দেখব। আর যদি এটা হয়, তাহলে তার ওই সিট হয়ত খালি করিয়ে দিতে হবে। কারণ যেটা আইনে আছে সেটা হবে। তার বিরুদ্ধে আমরা এখানেও তদন্ত করছি।
সূত্রঃ পূর্বপশ্চিমবিডি/এসএস