ক্যাপ্টেন(অবঃ)মারুফ রাজুঃ বাংলাদেশের সামগ্রিক চিকিৎসা ব্যবস্থা, বিশেষ করে সরকারি হাসপাতালগুলোর বর্তমান নাজুক অবস্থা তুলে ধরেছে আর্ন্তজাতিক সংবাদ সংস্থা এএফপি। এ নিয়ে তারা একটি রিপোর্ট প্রকাশ করেছে।
সেখানে বলা হচ্ছে, করোনা ভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়াই করছে বাংলাদেশ। তার পরেও হাসপাতালে করোনা ভাইরাস আক্রান্তদের জন্য প্রস্তুত করা হাজার হাজার বেড খালি পড়ে আছে।
হাসপাতালে রোগীদের যেতে না চাওয়ার কারণ হিসেবে রিপোর্টে বলা হয়েছে, লোকেরা হাসপাতালে গিয়ে চিকিৎসা নিতে আতঙ্কে রয়েছেন। এর কারণ, সেখানকার স্বাস্থ্যসেবার মান।
মেডিকেল চ্যারিটির একজন কর্মকর্তা এএফপিকে বলেছেন, ‘কিছু রোগী ও স্বাস্থ্যকর্মী বলেছেন, রোগীরা হাসপাতালে যাওয়ার চেয়ে বাড়িতেই মরতে পছন্দ করছেন।’
প্রতিবেদনে বলা হয়, সরকারের স্বাস্থ্য বিভাগের জানামতে, ঢাকায় করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত রোগীদের জন্য রয়েছে ছয় হাজার ৩০৫টি বেড। তার মধ্যে প্রায় চার হাজার ৭৫০টি বেড ব্যবহার করা হচ্ছে না।
এছাড়া করোনা মহামারি মোকাবেলায় মাঠপর্যায়ে নতুন দুই হাজার শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতাল গড়ে তোলা হয়েছে। সেখানে ১শ’র মতো রোগী চিকিৎসা নিচ্ছেন।
অপরদিকে করোনা ভাইরাসের হটস্পট হয়ে উঠেছে দ্বিতীয় বৃহত্তম নগরী চট্টগ্রাম। সেখানে হাসপাতালের বেডে অর্ধেকে রোগী চিকিৎসা নিচ্ছেন।
তবে স্বাস্থ্য বিভাগ বলছে, বেশির ভাগ রোগী বাড়িতে বসে চিকিৎসা নিচ্ছেন বলে হাসপাতালগুলোর বেড ফাঁকা রয়েছে।
স্বাস্থ্য বিভাগের উপপ্রধান নাসিমা সুলতানা এএফপিকে বলেছেন, ‘বেশির ভাগ রোগীই হালকা লক্ষণযুক্ত। পর্যাপ্ত টেলিমেডিসিন সেবা দেওয়া হচ্ছে। হাসপাতালের বেড ফাঁকা থাকার একটি কারণ হতে পারে এটি। এছাড়া অতিরিক্ত আক্রান্তের আশঙ্কায় বেড সংখ্যা বাড়ানো হয়েছিল।
তবে স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ও করোনা আক্রান্ত রোগীরা বলছেন, সরকারি হাসপাতালগুলো তাদেরকে কী পরিমাণ সেবা দেবে তা নিয়ে তারা উদ্বিগ্ন।
চট্টগ্রামে এম্বুলেন্স ও দাফন সেবা দিয়ে থাকা আল মানাহিল দাতব্য সংস্থার সিনিয়র এক কর্মকর্তা বলেছেন, ‘তারা আমাদেরকে বলে দিয়েছেন, হাসপাতালে মরার চেয়ে বাসায় গিয়ে মরা ভাল।’
বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা ব্যায় বহন করতে পারেন না অনেকেই।
রিপোর্টে আরো বলা হয়, বাংলাদেশের হাসপাতালগুলোর অবস্থা বেশ নাজুক। এমনকি মহামারি শুরুর আগেও একই অবস্থা ছিলো। অপরদিকে সম্পদশালী বাংলাদেশিরা থাইল্যান্ড বা সিঙ্গাপুরে চেকআপ করাতে যান। কিন্তু মহামরির কারণে আন্তর্জাতিক ফ্লাইট না চলায় তারা দেশ ছাড়তে পারেননি।