ক্যাপ্টেন(অবঃ)মারুফ রাজুঃ মেয়েটির নাম ছিলো প্রজ্ঞা দেবনাথ। তিনি ছিলেন ভারতের নাগরিক। সংস্কৃত পড়াকালীন পরিবার থেকে উধাও হয়ে যান। এখন তিনি ইসলামী জঙ্গি দলের নেত্রী।
সম্প্রতি ভারত থেকে বাংলাদেশে জঙ্গি কার্যক্রম চালাতে এসে তিনি গ্রেফতার হয়েছেন। বৃহস্পতিবার ঢাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করে বাংলাদেশের কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম (সিটিটিসি) ইউনিট।
ভারতের সংবাদমাধ্যম আনন্দবাজারের প্রতিবেদনে বলা হয়, সংস্কৃত নিয়ে ভারতের ধনিয়াখালি কলেজে পড়ছিলেন গীতা দেবনাথ। ২০১৬ সালের ২৪ সেপ্টেম্বর কলকাতা যাওয়ার কথা বলে বাড়ি থেকে বেড় হন।এরপর থেকে উধাও হয়ে যান তিনি।নিখোঁজের বেশ কয়েক দিন পর পরিবারের কাছে ফোন আসে অচেনা নম্বর থেকে। মাকে জানান, তিনি ইসলাম গ্রহণ করেছেন। বিয়েও করেছেন মুসলমান এক ছেলেকে। নামও পরিবর্তন করেছেন।
কিন্তু মেয়ে যে জঙ্গি দলে নাম লিখিয়েছে, তা ঘুণাক্ষরেও বুঝতে পারেননি বাবা-মা, আত্মীয়-স্বজন থেকে শুরু করে পাড়া-প্রতিবেশীরাও।
শনিবার সকালে পত্রিকায় মেয়ের ছবি দেখে চিনতে পারেন মা গীতা দেবনাথ।
আনন্দবাজারকে তিনি বলেন, ‘পড়াশোনায় খারাপ ছিলো না মেয়ে। মাধ্যমিক এবং উচ্চমাধ্যমিকে ভালোই করেছিলো। সংস্কৃত নিয়ে ভর্তি হয়েছিলো ধনিয়াখালি কলেজে। তবে পড়া শেষ করার আগেই বাড়ি থেকে পালিয়ে যায় প্রজ্ঞা।’
বাবা প্রদীপ দেবনাথ দিনমজুরের কাজ করেন। মা গীতা বাড়িতেই সেলাই করে ফেরি করেন জামাকাপড়।
বাংলাদেশ পুলিশের বরাত দিয়ে আনন্দবাজার জানায়, প্রজ্ঞা নবম শ্রেণিতে পড়ার সময় ২০০৯ সালে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেন।
প্রজ্ঞার এখন নাম আয়েশা জান্নাত মোহনা (২৫)। তিনি নব্য জেএমবির মহিলা শাখার প্রধান। আগে থাকতেন হুগলি জেলার ধনিয়াখালির কেশবপুর গ্রামে।
চলতি বছরের ৮ ফেব্রুয়ারি মতিঝিল থেকে জেএমবির নারী শাখার প্রধান আসমাকে সিটিটিসি গ্রেফতার করে। এরপর থেকে নারী শাখার দায়িত্ব পান আয়েশা।
সিটিটিসির সহকারী কমিশনার শেখ ইমরান হোসেন বলেন, আয়েশা ভারতীয় নাগরিক। সনাতন ধর্মাবলম্বী এই নারী অনলাইনে জেএমবির কর্মকাণ্ডে আকৃষ্ট হয়ে ধর্মান্তরিত হন। তার কাছ থেকে ভারতীয় পাসপোর্ট উদ্ধার করা হয়েছে।
তিনি দীর্ঘদিন ধরে গোপনে বিভিন্ন মাদ্রাসায় শিক্ষকতার কাজ করছিলেন। শিক্ষকতার আড়ালে অনলাইনে জঙ্গি কার্যক্রমে নারীদের রিক্রুটমেন্ট করতেন।
সিটিটিসির উপকমিশনার সাইফুল ইসলাম বলেন, আয়েশা ২০১৬ সাল থেকে ভারতীয় পাসপোর্ট নিয়ে বাংলাদেশে যাতায়াত করতেন। গত বছরের সেপ্টেম্বরে কেরানীগঞ্জ থেকে একটি জন্ম নিবন্ধন সনদ নেন।যেটা দিয়ে একটি ভুয়া এনআইডি কার্ড তৈরি করেন।
প্রবাসী এক বাংলাদেশি নাগরিককে অনলাইনে বিয়ে করে বাংলাদেশের নাগরিকত্ব নেওয়ার জন্য ভুয়া কাগজপত্র তৈরি করেন। যা দিয়ে নাগরিকত্ব নেওয়ার চিন্তা ভাবনা ছিলো তার।
সূত্রঃআনন্দবাজার পত্রিকা।