ক্যাপ্টেন(অবঃ)মারুফ রাজুঃ বহু অভিযোগে অভিযুক্ত এবং বিতর্কিত ভারতের মাদ্রাজ সিকিউরিটি প্রিন্টার্স নামক ভারতের এই কোম্পানীটি। নিজ দেশ ভারতেই, আধার কার্ড প্রকল্পে আজীবন নিষিদ্ধ। আফ্রিকার দেশ কেনিয়াতে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা ঝুলছে ৯ পরিচালকের বিরুদ্ধে। ঘুষ-অনিয়মের মাধ্যমে কাজ বাগিয়ে নেয়ার অভিযোগ আছে শ্রীলঙ্কাতেও।
অথচ এই বিতর্কিত কোম্পানিটিকেই ১২০ কোটি টাকার ড্রাইভিং লাইসেন্সের স্মার্ট কার্ড প্রকল্পের কাজ দিয়েছে বিআরটিএ। এজন্য চারবার সংশোধন করা হয়েছে দরপত্রের শর্ত।
মাদ্রাজ সিকিউরিটি প্রিন্টার্স-এমএসপি'র কাজের পরিধি বেশ ব্যাপক। অভিযোগ-তারচেয়েও বেশি। ভারতের আধার কার্ড প্রকল্পে কাজ পেয়েছিল এমএসপি। কিন্তু নাগরিকদের তথ্য বিক্রি করে দেয়ার প্রমান পাওয়ার পর আজীবন নিষেধাজ্ঞা জারী হয় তাদের বিরুদ্ধে। বের করে দেয়া হয়েছে তেলেঙ্গানার সামাজিক সুরক্ষা সেবা মিসেভা প্রকল্প থেকেও। ভবিষ্যতেও কোন সরকারী টেন্ডারে অংশ নিতে পারবেনা কোম্পানিটি।
এদের দুর্নাম রয়েছে ভারতের বাইরেও । শ্রীলঙ্কার গণমাধ্যমও কোম্পানিটির বিরুদ্ধে ব্যপক অভিযোগ তুলেছে। কেনিয়াতে দুর্নীতির অভিযোগে মামলা চলছে তাদের বিরুদ্ধে। তাদের নয় জন পরিচালকের বিরুদ্ধে জারি করা হয়েছে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা।
অথচ বিআরটিএ'র দরপত্রের শর্ত ছিলো ৫ বছরের মধ্যে দরদাতার বিরুদ্ধে কোন মামলা থাকা চলবে না। কিন্তু দরপত্র যাচাই কর্তাদের এসব কিছুই চোখে পড়েনি।
গোয়েন্দাবৃত্তিতেও সফল এমএসপি। প্রথম দরপত্রে সর্বনিম্ন দরদাতা প্রতিষ্ঠান ফ্রান্সের সেল্প এসএএস'র দরপত্রের সব তথ্য তারা অনৈতিক ভাবে হাতিয়ে নিয়েছে। বিআরটিএকে চিঠি দিয়ে সেল্পের প্রস্তাবের ঘাটতি সম্পর্কে জানায় এমএসপি। কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে, গোপন দরপত্রের তথ্য এমএসপি জানলো কিভাবে?
বাংলাদেশে ২০১৫ সালে বিএমইটির ইমিগ্রেশন কার্ড সরবরাহের দায়িত্ব পেয়েছিলো ভারতের এই এমএসপি। কিন্তু সে যাত্রায়ও কাজ সম্পন্ন করতে ব্যর্থ হয়েছিলো। তবুও বিআরটিএ বলছে, এমএসপিকে কাজ দেয়া ছাড়া উপায় নেই।
প্রথম দরপত্রে ৩৫ লাখ কার্ড বিতরণের কথা থাকলেও সংশোধিত দরপত্রে তা ৪০ লাখ করা হয়। অভিযোগ আছে, এমএসপি'র অন্যায় প্রভাবেই কার্ড সংখ্যা ৫ লাখ বাড়ানো হয়েছে।