ক্যাপ্টেন(অবঃ)মারুফ রাজুঃ করোনাকালীন সময়ে গত ঈদুল ফিতরে সারাদেশে হতদরিদ্র পরিবারগুলোকে এককালীন আড়াই হাজার টাকা করে দেবার ঘোষনা দিয়েছিল অবৈধ হাসিনা সরকার। ওই সহায়তা পাওয়ার কথা ছিল সারাদেশের ৫০ লাখ হত দরিদ্র পরিবারের। তবে এই ঈদ সহায়তা নিয়ে আওয়ামী লীগের নেতাদের সীমাহীন দুর্নীতির ফলে এই টাকার অনেকাংশই হত দরিদ্রদের হাতে না পৌছে তাদের নিজেদের পকেটই ভারী হয়েছিলো।
এবার কোরবানির ঈদে হাসিনা সরকারের পক্ষ থেকে একটি দরিদ্র পরিবারকে দেওয়া হবে ১০ কেজি করে চাল। মোট ১ কোটি ৬ লাখ পরিবার এই সহায়তা পাবে। ইতিমধ্যেই এ চাল ছাড় করা হয়েছে। সরকারের মানবিক সহায়তা হিসেবে এই চাল বিতরণও করা শুরু হয়েছে। দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।
তবে এই চাল বিতরন এবং দরিদ্র পরিবার বাছাইয়ের দ্বায়িত্ব আওয়ামী লীগে নেতা-কর্মীদের হাতে থাকায় এনিয়ে ব্যাপক দুর্নীতির আশংকা রয়েছে জনমনে।
সূত্র জানিয়েছে, কোরবানির উপলক্ষে সরকারের পক্ষ থেকে এক কোটি ৬ লাখ পরিবারকে ১০ কেজি হারে চাল বিতরণে সরকারের প্রয়োজন হবে ১ লাখ ৬ হাজার মেট্রিক টন চাল। ইতিমধ্যেই সেই চাল খাদ্য মন্ত্রণালয় থেকে বরাদ্দ করা হয়েছে। যা পর্যায়ক্রমে বিভিন্ন এলাকার জন্য ছাড় করা হয়েছে। কোরবানির আগেই ক্ষতিগ্রস্ত ও দরিদ্র পরিবার শনাক্ত করে তাদের হাতে সরকারের এই সহায়তা পৌঁছে দিতে জেলা প্রশাসকদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি সরকারের অন্যান্য সকল প্রকার (বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের জন্য ত্রাণসহ) সহায়তা অব্যাহত থাকবে।
অর্থ মন্ত্রণালয়ের একটি সূত্র জানিয়েছে রোজার ঈদের সময় ৫০ লাখ পরিবারকে নগদ আড়াই হাজার টাকা করে দেওয়ার কার্যক্রমটা প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে মনিটর করা হয়েছিলো। তবে কোরবানির সময় দেওয়া চাল সহায়তা বিতরণ কার্যক্রম জেলা প্রশাসনের তত্ত্বাবধানে হলেও মনিটর করবে ত্রাণ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালয়।
এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ডা. এনামুর রহমান জানিয়েছেন, বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের জন্য সরকারের ত্রাণ সহায়তার বাইরে অতিরিক্ত সহায়তা হিসেবে দেশের ১ কোটি ৬ লাখ পরিবারের প্রতিটি পরিবারকে ১০ কেজি করে চাল দেওয়া হচ্ছে। তবে সরকারের পক্ষ থেকে বিভিন্ন কর্মসূচির আওতায় অন্যান্য সকল সহায়তাও অব্যাহত থাকবে।
কোরবানি উপলক্ষে দেশের এক কোটি ৬ লাখ গরীব পরিবারের জন্য দেওয়া সহায়তা প্রসঙ্গে জানতে চাইলে পিরোজপুর জেলার স্বরূপকাঠি উপজেলার ২নং সোহাগদল ইউনিয়ন পরিষদের আওয়ামী চেয়ারম্যান আব্দুর রশিদ জানিয়েছেন, সরকারের পক্ষ থেকে এ ধরনের সহায়তার সংবাদ জেনেছি। আশা করছি আজকালের মধ্যে বরাদ্দ পেয়ে যাব। বরাদ্দ পেলেই বিতরণ শুরু করা যাবে। তিনি জানান, এই সহায়তা পাওয়ার জন্য দরিদ্র পরিবারগুলোকে ইতিমধ্যেই চিহ্নিত করা হয়েছে।
পটুয়াখালী জেলার গলাচিপা উপজেলার আওয়ামী চেয়ারম্যান মোহম্মদ শাহীন জানিয়েছেন, বরাদ্দ পেয়েছি। অন্যান্য সহায়তার সঙ্গে কোরবানি উপলক্ষে দেওয়া সহায়তা বাবদ চালও দিচ্ছি। অন্যান্য কর্মসূচির আওতায় সরকারের দেওয়া সহায়তায় নগদ অর্থের সঙ্গে চালও দেওয়া হচ্ছে।