ক্যাপ্টেন(অবঃ)মারুফ রাজুঃ মিথ্যা দুর্নীতির মামলায় ফরমায়েসী রায়ে দণ্ডিত বিএনপি চেয়ারপারসন দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার সাময়িক মুক্তির মেয়াদ বৃদ্ধির যে আবেদন তার পরিবার করেছে, সেখানে কী লেখা হয়েছে- তা দেখে এবং তার স্বাস্থ্যের অবস্থা বিবেচনা করে সরকার সিদ্ধান্ত নেবে বলে জানিয়েছেন অবৈধ হাসিনা সরকারের আইনমন্ত্রী আনিসুল হক।
সোমবার সচিবালয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নে তিনি বলেন, “স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আমাকে বলেছেন, তিনি একটি দরখাস্ত পেয়েছেন। যেহেতু আগামী সেপ্টেম্বরের ২৪ তারিখ ছয় মাস (খালেদার সাময়িক মুক্তির মেয়াদ) শেষ হয়ে যাবে, তারা সেটির এক্সটেনশন চেয়েছেন।”
তবে ওই আবেদন এখনও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে আইন মন্ত্রণালয়ে পৌঁছেনি জানিয়ে আইনমন্ত্রী বলেন, “আবেদন পৌঁছালে আমরা বিবেচনা করব।”
এদিন মন্ত্রিসভার বৈঠক শেষে মন্ত্রিসভা কক্ষ ছাড়ার সময় সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন আইনমন্ত্রী। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল এ সময় তার পাশে দাঁড়িয়ে থাকলেও কিছু বলেননি।
খালেদা জিয়ার আবেদন নিয়ে সরকারের মনোভাব কী- এমন প্রশ্নে আনিসুল হক বলেন, “দরখাস্তে কী লিখেছেন সেটি আমি এখনও জানি না। সেক্ষেত্রে আমি কী বিবেচনা করব দরখাস্ত না দেখে? কথা বলাটা আমার ঠিক হবে?
“উনাকে যখন ছয় মাস আগে একবার মাননীয় প্রধানমন্ত্রী মানবিক কারণে মুক্তি দিয়েছিলেন, ছয় মাসের জন্য… আমরা তার স্বাস্থ্যের অবস্থা বিবেচনা করে দরখাস্তে কী লেখা আছে সেসব বিবেচনা করে সিদ্ধান্ত নেব।”
আইনমন্ত্রী বলেন, খালেদা জিয়া জামিনে নেই, কোনো আদালত তাকে জামিন দেয়নি। গত মার্চ মাসে তার পরিবার থেকে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে আবেদন করা হয়েছিল যেন চিকিৎসার জন্য তাকে নির্বাহী আদেশে জেল থেকে মুক্তি দেওয়া হয়।
“প্রধানমন্ত্রী মানবিক দিক বিবেচনা করে আমাদের নির্দেশ দিয়েছিলেন, ফৌজদারি কার্যবিধির ৪০১ (১) ধারায় তার দণ্ডাদেশ স্থগিত করে তাকে ছয় মাসের জন্য মুক্তি দেওয়ার জন্য এবং গত ২৫ মার্চ সেই আদেশে তিনি মুক্তি পেয়েছেন।”
দুর্নীতির দুই মামলায় ১৭ বছরের কারাদণ্ডপ্রাপ্ত সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়াকে সাময়িক মুক্তি দেওয়ার সময় আইন মন্ত্রণালয়ের সুপারিশ বিবেচনায় নিয়েছিল স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
ছয় মাসের ওই মুক্তির মেয়াদ ২৪ সেপ্টেম্বর শেষ হচ্ছে। তার আগেই পরিবারের পক্ষ থেকে সাময়িক মুক্তির মেয়াদ বৃদ্ধির আবেদন করা হয়েছে।
৭৬ বছর বয়সী বেগম খালেদা জিয়া বর্তমানে গুলশানে তার ভাড়া বাসা ‘ফিরোজায়’ রয়েছেন। তিনি আর্থারাইটিস, ডায়াবেটিস, চোখের সমস্যা সহ বার্ধক্যজনিত নানা সমস্যায় ভুগছেন।
২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতির সাজানো মামলায় সাজার কারাজীবন শুরু করেন খালেদা জিয়া। পরে জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় তার সাজার রায় হয়। তার বিরুদ্ধে আরও ৩৪টি মামলা রয়েছে।