ক্যাপ্টেন(অবঃ)মারুফ রাজুঃ ব্যাংকের সাড়ে তিন হাজার কোটি টাকা আত্মসাৎ করে কানাডায় পালিয়ে যাওয়া এনআরবি গ্লোবাল ব্যাংক ও রিলায়েন্স ফাইন্যান্স লিমিটেডের সাবেক এমডি (ব্যবস্থাপনা পরিচালক) পি কে হালদার (প্রশান্ত কুমার হালদার) দেশে ফিরে নিরাপদ আইনি হেফাজতে যেতে হাইকোর্টে আবেদন করেছেন।
আবেদনের ওপর শুনানি নিয়ে আদালত আদেশে বলেছেন, দেশে ফিরলে তাকে আইনি হেফাজতে যেতে হবে। এরপর বিনিয়োগকারীদের অর্থ কীভাবে ফেরত দেওয়া যায় সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত হবে। পি কে হালদার কবে কীভাবে কোন ফ্লাইটে দেশে ফিরবেন সে বিষয়ে বিস্তারিত জানাতে তার প্রতিষ্ঠানের আইনজীবীদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
সোমবার বিচারপতি মুহাম্মদ খুরশীদ আলম সরকারের একক হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন। শুনানিতে পি কে হালদারের প্রতিষ্ঠান ইন্টারন্যাশনাল লিজিং অ্যান্ড ফাইন্যান্স সার্ভিস লিমিটেডের পক্ষে ছিলেন ব্যারিস্টার মাহফুজুর রহমান মিলন। দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) পক্ষে ছিলেন আইনজীবী মো. খুরশীদ আলম খান। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল মুরাদ রেজা।
দুদকের আইনজীবী জানান, পি কে হালদার দেশে ফিরে নিরাপদে আইনি হেফাজতে যেতে চান বলে হাইকোর্টে একটি আবেদন জমা দেওয়া হয়। বিনিয়োগকারীদের অর্থ পরিশোধ করতেই তার এ উদ্যোগ বলে আবেদনে উল্লেখ করা হয়। সেটি উপস্থাপন করার পর তিনি (পি কে হালদার) কবে, কখন কোন ফ্লাইটে আসতে চান সে সব বিষয়ে আদালত জানতে চেয়েছেন। এরপর এ বিষয়ে আদেশ দেবেন আদালত। হাইকোর্ট আরও বলেছেন পি কে হালদার দেশে ফিরলে তাকে আইনি হেফাজতে যেতে হবে।
পি কে হালদার প্রথমে রিলায়েন্স ফাইন্যান্স ও পরে এনআরবি গ্লোবাল ব্যাংকের এমডি হিসেবে দায়িত্ব পালনকালে ব্যাংকবহির্ভূত আরও চারটি আর্থিক প্রতিষ্ঠান নিজ কর্তৃত্বে ও নিয়ন্ত্রণে নেন। এসব প্রতিষ্ঠান থেকে ঋণের নামে সাড়ে ৩ হাজার কোটি টাকা লোপাটের অভিযোগ উঠে পি কে হালদার ও তার সহযোগীদের বিরুদ্ধে। এর একটি ইন্টারন্যাশনাল লিজিং অ্যান্ড ফাইন্যান্স সার্ভিস লিমিটেড। অবৈধ ব্যবসা ও কার্যক্রমের মাধ্যমে পৌনে ৩০০ কোটি টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে পি কে হালদারের বিরুদ্ধে গত ৮ জানুয়ারি মামলা করে দুদক। অভিযোগ ওঠার পরপরই কানাডায় চলে যান পি কে হালদার। এর আগে গত ২১ জানুয়ারি পিকে হালদার ও তার পরিবারের কয়েকজন সদস্যসহ ২০ জনের ব্যাংক হিসাব ও পাসপোর্ট জব্দের নির্দেশ দেয় হাইকোর্ট। পরে হাইকোর্টের এই আদেশ আপিল বিভাগেও বহাল থাকে।