ক্যাপ্টেন(অবঃ)মারুফ রাজুঃ পেঁয়াজ ইস্যুতে বাংলাদেশকে আগাম কোন তথ্য না দিয়ে হঠাৎ করে রপ্তানি বন্ধ করে দেয়ার ঘোষণায় ভারতের পক্ষ থেকে দুঃখ প্রকাশ করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশের অবৈধ হাসিনা সরকারের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. একে আবদুল মোমেন।
তুরস্ক সফর শেষে দেশে ফিরে বৃহস্পতিবার (১৭ সেপ্টেম্বর) দুপুরে নিজ মন্ত্রণালয়ে সময় সংবাদকে একথা জানান তিনি।
হঠাৎ করে পেঁয়াজ রপ্তানি বন্ধের বিষয়ে বাংলাদেশের পাঠানো চিঠির কোন জবাব এসেছে কিনা?- এ বিষয়ে জানতে চাইলে মন্ত্রী বলেন, শুনেছি বিষয়টি নিয়ে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় অনুতপ্ত। কারণ তারাও জানতো না হঠাৎ করে এটা বন্ধ হয়েছে। আমাদের দুই দেশের মধ্যে একটা সমঝোতা ছিলো, এ ধরনের সিদ্ধান্ত নেয়ার আগে আমাদের জানাবে। কিন্তু তাদের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ও বিষয়টি জানতো না।
তার তুরস্ক সফরকালীন দেশটির সাথে পেঁয়াজ আমদানি নিয়ে কোন আলোচনা হয়েছে কিনা প্রশ্ন করলে মন্ত্রী জানান, সরকারীভাবে আলোচনা হয় নি। তবে সেখান থেকে তিনি বাণিজ্যমন্ত্রীকে টেলিফোন করে জানতে চেয়েছিলেন, তুরস্কের সাথে এ বিষয়ে আলোচনা করবেন কিনা?
বাণিজ্যমন্ত্রীর সম্মতিতে তিনি দেশটির বাংলাদেশ মিশনকে নির্দেশ দিয়েছেন, এর আগের বছর তুরস্কের যাদের কাছ থেকে পেঁয়াজ কেনা হয়েছে, তাদের সাথে এবারও আলোচনা করার নির্দেশ দেন তিনি।
এর আগে গত মঙ্গলবার পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলমও দুই দেশের অলিখিত সমঝোতার কথা উল্লেখ করে সাংবাদিকদের প্রত্যাশা জানিয়েছিলেন ভারত রপ্তানি নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করবে।
এ বিষয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে ঢাকাস্থ ভারতীয় হাই কমিশনকেও একটি চিঠি দেয়া হয়। চিঠিতে লেখা হয়, ১৪ সেপ্টেম্বর ভারতের বাণিজ্য ও শিল্প মন্ত্রণালয় পেঁয়াজ রফতানি বিষয়ে হঠাৎ করে যে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে, সে বিষয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করছে বাংলাদেশ। বিষয়টি বাংলাদেশের বাজারে নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছে।
বাংলাদেশ সম্মানের সঙ্গে জানাতে চায় যে, চলতি বছরের ১৫-১৬ জানুয়ারি দুইদিনব্যাপী বাংলাদেশ-ভারত বাণিজ্য সচিব পর্যায়ের যে বৈঠক হয়েছিল, সেই বৈঠকে নিত্য প্রয়োজনীয় খাদ্য পণ্যের ওপর নিষেধাজ্ঞা না দেওয়ার জন্য বাংলাদেশ ভারতকে অনুরোধ করেছিল।
বাংলাদেশ আরও অনুরোধ করেছিল যে, নিত্য প্রয়োজনীয় খাদ্য পণ্যের ওপর যদি নিষেধাজ্ঞা দিতেই হয়, তাহলে বাংলাদেশকে যেন আগাম জানানো হয়। এই বিষয়টি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গত বছর অক্টোবরে ভারতে ভিভিআইপি সফরেও তুলেছিলেন এবং তখনও অনুরোধ করা হয়েছিল যে, এমন ঘটনা ঘটলে তা যেন আগাম জানানো হয়।
চিঠিতে ভারতকে মনে করিয়ে দেয়া হয়, দুই বন্ধুপ্রতিম দেশের মধ্যে গত ২০১৯ এবং ২০২০ সালে যে কথা এবং সমঝোতা হয়েছিল, ভারত সরকারের ১৪ সেপ্টেম্বরের ঘোষণা, সেই কথা এবং সমঝোতার প্রতি যথাযথ সম্মান দেখাতে পারেনি।
দুই দেশের সম্পর্কের মধ্যে এখন যে সোনালি অধ্যায় বিরাজ করছে, বাংলাদেশ সেই সম্পর্কের খাতিরে হাইকমিশনের মাধ্যমে ভারতের যথাযথ কর্তৃপক্ষের কাছে বাংলাদেশে আবার পেঁয়াজ রফতানি চালুর অনুরোধ জানাচ্ছে।