ক্যাপ্টেন(অবঃ)মারুফ রাজুঃ হঠাৎ ভারতের পেঁয়াজ আমদানি বন্ধের ফলে দেশের পেয়াজের চাহিদা মেটাতে চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে ৭৯ হাজার ৩৯০ টন পেঁয়াজ আমদানির উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দরের উদ্ভিদ সংগনিরোধ কেন্দ্র থেকে ৩-১৭ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ২১৭টি আমদানি অনুমতিপত্রের (আইপি) বিপরীতে এসব পেঁয়াজ আসছে।
চীন, তুরস্ক, মিশর, মিয়ানমার, পাকিস্তান, নেদারল্যান্ডস ও নিউজিল্যান্ড থেকে পেঁয়াজগুলো আনা হবে জাহাজে।
উদ্ভিদ সংগনিরোধ কেন্দ্রের উপ-পরিচালক ড. মোহাম্মদ আসাদুজ্জামান বুলবুল বৃহস্পতিবার (১৭ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় বাংলানিউজকে জানান, আজ ২১ হাজার ৯১১ টন পেঁয়াজ আমদানির জন্য ৬৭টি আমদানি অনুমতিপত্র ইস্যু করেছি আমরা।
পেঁয়াজ আমদানিতে বাংলাদেশ ব্যাংক ও সরকারের নানা প্রণোদনার কারণে ব্যবসায়ীরা উৎসাহী হচ্ছেন।
একজন আমদানিকারক জানিয়েছেন, পচনশীল পণ্য হওয়ায় যত দ্রুত সম্ভব রেফার কনটেইনারে পেঁয়াজ আনার চেষ্টা চলছে। পরিমাণ বেশি হলে হিমাগার সুবিধা আছে এমন কার্গো জাহাজে চট্টগ্রাম বন্দরে পেঁয়াজ আনা হবে। যদি ‘কস্ট অব ডুয়িং বিজনেস’ অনুকূলে থাকে তবে চাহিদা অনুযায়ী পেঁয়াজ আমদানি অব্যাহত রাখা হবে।
খাতুনগঞ্জে পেঁয়াজ ৫৫-৬০ টাকাঃ
দেশের অন্যতম বড় ভোগ্যপণ্যের পাইকারি বাজার খাতুনগঞ্জের পেঁয়াজের আড়তে সপ্তাহের শেষ দিন বৃহস্পতিবার খুব একটা বেচাকেনা হয়নি। পেঁয়াজে আড়ত ভর্তি থাকলেও বেশিরভাগ সময় অলস সময় কাটিয়েছেন আড়তের কর্মচারীরা।
হামিদুল্লাহ মার্কেট ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ ইদ্রিস জানান, ভারত থেকে রপ্তানি বন্ধের আগে আমদানি করা সবচেয়ে ভালোমানের পেঁয়াজ বৃহস্পতিবার (১৭ সেপ্টেম্বর) সর্বোচ্চ ৬০ টাকা বিক্রি হয়েছে। এ ছাড়া দাগি পেঁয়াজ সর্বনিম্ন ৫৫ টাকা বিক্রি হয়েছে পাইকারিতে। তবে বেচাকেনা ছিল কম।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন আড়তদার জানান, পেঁয়াজ উৎপাদনে বাংলাদেশে যে ঘাটতি তা মূলত ভারত থেকে আমদানি করে পূরণ করতে হয়। ভারত রপ্তানি বন্ধ রাখলে বিকল্প দেশ থেকে মোটা (বড়) পেঁয়াজ আমদানি করা হয়। এসব পেঁয়াজের দামও কম, ঝাঁজও কম। তাই চাহিদাও কম থাকে। তবে সংকটকালে এর বিকল্প নেই। সবচেয়ে বড় কথা, চাষিদের প্রণোদনা দিয়ে পেঁয়াজের উৎপাদন বাড়াতে হবে।
খুচরায় পেঁয়াজ ৬৫-৭০ টাকা
নগরের বিভিন্ন মুদির দোকানে ভারত থেকে আমদানি করা প্রতিকেজি পেঁয়াজ খুচরায় বিক্রি হচ্ছে সর্বোচ্চ ৭০ টাকা। রিকশাভ্যানে, অলিগলিতে বিক্রি হচ্ছে ৬৫ টাকা। কাজীর দেউড়ি সিডিএ মার্কেটের বেশ কয়েকটি মুদি দোকান ঘুরে দেখা গেছে, থরে থরে পেঁয়াজ সাজিয়ে রাখা হয়েছে। প্রতিকেজি ৭০ টাকা দাম চাইছেন বিক্রেতারা। বিক্রেতাদের ধারণা, অতীতে পেঁয়াজ সংকটের সময় সাধারণ ভোক্তারা বেশি বেশি কেনার প্রবণতা থাকলেও এবার কম কিনছেন।
তবে ছোট আকারের দেশি পেঁয়াজ পাওয়া যাচ্ছে কাজীর দেউড়ি কাঁচাবাজারে। বিক্রেতা জানালেন, ছোট আকারের দেশি পেঁয়াজ ৮৫ টাকা, একটু বড় আকারের দেশি পেঁয়াজ ৯০ টাকা। শৌখিন ক্রেতারা বেশি ঝাঁজের এ পেঁয়াজ কিনে থাকেন। তবে পাইকারি বাজার খাতুনগঞ্জে এসব দেশি পেঁয়াজ নেই বললেই চলে। এগুলো অনেক কষ্টে সংগ্রহ করতে হয় বেশি দামে।
শুক্রবার চট্টগ্রামে ২০টি ট্রাকে পেঁয়াজ বেচবে টিসিবিঃ
ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশ (টিসিবি) চট্টগ্রামে শুরুতে ১০টি ট্রাকে পেঁয়াজ, চিনি, মশুর ডাল ও সয়াবিন তেল বিক্রি করলেও মঙ্গল ও বুধবার ১৫টি ট্রাকে বিক্রি করেছে। শুক্রবার (১৮ সেপ্টেম্বর) চট্টগ্রামে ২০টি ট্রাকে পেঁয়াজ বিক্রি করা হবে বলে জানিয়েছেন টিসিবির চট্টগ্রাম আঞ্চলিক প্রধান জামাল উদ্দিন আহমেদ।
তিনি বলেন, এখন প্রতি ট্রাকে ২০০ কেজি করে পেঁয়াজ দেওয়া হচ্ছে। জনপ্রতি ১ কেজি করে পেঁয়াজ দেওয়া হবে।