ক্যাপ্টেন(অবঃ)মারুফ রাজুঃ বিএনপি’র সিনিয়র যুগ্ন মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, ‘১৯৭৩ সালে শহীদ মিনারে প্রথম ছাত্রী লাঞ্ছিত করে এই ছাত্রলীগ। এর পরে জাহাঙ্গীর নগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রলীগ নেতার ইতিহাস সবাই জানে। এগুলো তথ্যমন্ত্রীর মত মনগড়া কথা নয়, এগুলো ইতিহাস। ওরা (ছাত্রলীগ) মনে করে, যার বাড়িতে সুন্দরী মেয়ে আছে সেটা ছাত্রলীগের সম্পত্তি, যখন ইচ্ছা তখন বের করে নিবে।’
রোববার নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল আয়োজিত সিলেট এমসি কলেজে স্বামীকে বেঁধে গৃহবধুকে গণধর্ষণ এবং খাগড়াছড়িতে পাহাড়ী নারীকে ধর্ষণের প্রতিবাদে মানববন্ধনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
সরকারের উদ্দেশ্যে রিজভী বলেন, ‘আমি বলবো, দেখুন কখন যে রাজনীতির হাওয়া বদলে যায়। রাজনীতির হাওয়া কিন্তু ডেকে শুনে আসে না। আবহাওয়ার যেমন নিশ্চয়তা নাই, সকালে রোদ বিকেলে বৃষ্টি, রাজনীতির হাওয়াও কিন্তু যেকোনো সময় বদলে যেতে পারে। সেই দিনের কথা চিন্তা করুন। আজকে আপনারা যে জঘন্য কাজগুলো করছেন এর কিন্তু প্রতিশোধ জনগণ একদিন ঠিকই নেবে।’
শনিবার বেসরকারি টেলিভিশন আরটিভিতে প্রচারিত একটি নাটকের সমালোচনা করে রিজভী বলেন, ‘সরকার তার অনাচারগুলো ঢাকার জন্য আর তাদের এই হালুয়া-রুটির সামান্য কিছু ভাগ পাওয়ার জন্য কিছু সাংস্কৃতিক পরজীবীরা একটি নাটক করেছে স্বাধীনতার ঘোষক এবং গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের নেত্রী দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে। বিকৃতি রুচিসম্পন্ন একটি নাটক গতকাল আরটিভিতে প্রচারিত হয়েছে, আমরা এটার প্রতিবাদ জানিয়েছি। আমরা বলেছি ইতিহাসকে বিকৃত করে সাংস্কৃতিক ব্যক্তির নামে কয়েকজন পরজীবীরা এই জঘন্য নোংরা কাজ করছে। আজকে আমি ছাত্র ভাইদেরকে সাক্ষী রেখে বলছি, যারা এই সমস্ত জঘন্য বিকৃত ইতিহাস সৃষ্টি করছে তাদের আমরা ব্ল্যাকলিস্ট করছি তাদের জন্য কালো তালিকা করছি।
তিনি বলেন, ‘নিজেদের মনের মতো করে সাজানো আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীকে দিয়ে কতদিন নিজেদেরকে নিরাপদ রাখবেন। আমাদের সাথে জনগণ আছে আমাদের সাথে রিক্সাওয়ালা আছে, আমাদের সাথে শ্রমিক আছে, আমাদের সাথে ছাত্র আছে, আমাদের সাথে শিক্ষক আছে। এদের শক্তিতেই আমরা চলি। এই ইনডিমিনিটি নামের যে নাটকটি রচনা করা হয়েছে- এটা একটি মিথ্যাচারের নাটক আমরা তার তীব্র প্রতিবাদ জানাই।’
বিএনপি ক্ষমতায় আসার জন্য অলিগলিতে পথ খুঁজছে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের এমন বক্তব্যের কড়া সমালোচনা করে বিএনপি’র সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব বলেন, ‘ওবায়দুল কাদের সাহেব অলিগলিতে ঘুরে বেড়ায় যারা নারীর সম্ভ্রমহানি করে যারা ধর্ষক যারা টাকা পাচারকারি।আর এরা সবাই হচ্ছে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা, আওয়ামী লীগের এমপিরা, ছাত্রলীগ, যুবলীগের নেতাকর্মীরা। কাদের সাহেব অলিগলি আপনারা চেনেন। আমরা চিনি রাজপথ, আমরা জানি এই অবৈধ সরকারকে গলায় গামছা দিয়ে রাস্তায় নামাতে হবে তার জন্য আমরা বুকের শার্ট খুলে দিয়ে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীরগুলিকে বরণ করে আমরা রাস্তায় আছি দিনের সূর্যের আলোতে এই রাস্তায় আছি। আপনাদের মত রাতের অন্ধকারে তরুণীদেরকে সম্ভ্রমহানি করা টাকা পাচার করা এ ধরনের কাজের সাথে কখনোই বিএনপি ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা জড়িত ছিল না।
ছাত্রদলের সভাপতি ফজলুর রহমান খোকনের সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হোসেন শ্যামলের সঞ্চালনায় মানববন্ধনে বিএনপি’র প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানী, নির্বাহী কমিটির সদস্য আকরামুল হাসান মিন্টু, ছাত্রদলের সিনিয়র সহ-সভাপতি কাজী রওনুকুল ইসলাম শ্রাবন, সাংগঠনিক সম্পাদক সাইফ মাহমুদ জুয়েল, সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আমিনুল ইসলাম আমিন, সহ-সভাপতি আশরাফুল আলম লিঙ্কন, হাফিজুর রহমান হাফিজ, মামুন খান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
