ক্যাপ্টেন(অবঃ)মারুফ রাজুঃ পাকিস্তানে ইমরান খান সরকারের সঙ্গে সিন্ধু প্রাদেশিক সরকারের দ্বন্দ্ব চরম রূপ নিয়েছে। কেন্দ্রীয় সরকারের নির্দেশনা মানছে না প্রাদেশিক পুলিশ।
সরকারবিরোধী আন্দোলনের মধ্যে এ ঘটনা ইমরান প্রশাসনকে আরও চাপের মুখে ফেলেছে।
ডন জানিয়েছে, সোমবার গ্রেফতার হন নওয়াজ শরিফের জামাতা ও পাকিস্তান মুসলিম লীগের প্রধান মোহাম্মদ সফদার। এ সময় অভিযোগ উঠে, তাকে গ্রেফতার করতে চায়নি সিন্ধু পুলিশ।
আধা সামরিক বাহিনী পাক রেঞ্জার্সের সদস্যরা সিন্ধু পুলিশ প্রধান মুশতাক মহরকে উঠিয়ে নিয়ে তাকে গ্রেফতারের ব্যাপারে রাজি করায়।
এ নিয়ে মুখোমুখি অবস্থানে চলে আসে ইসলামাবাদ-করাচি। পুলিশ প্রধানকে ‘অপহরণের’ বিষয়ে দ্রুত তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন সেনাপ্রধান কামার জাভেদ বাজওয়া।
ঘটনার প্রতিবাদে গণছুটিতে যাওয়ার প্রস্তুতি শুরু করেছিলেন আইজি মোশতাক মেহরসহ সিন্ধুর পুলিশ কর্মকর্তারা।
প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের পদত্যাগ দাবি এবং পাকিস্তানের রাজনীতিকে সেনাবাহিনীর হস্তক্ষেপের অভিযোগ তুলে এর প্রতিবাদে দেশজুড়ে প্রতিবাদ বিক্ষোভের ডাক দিয়েছে পিএমএল-এন এবং অন্য ৮টি বিরোধীদলীয় জোট।
যেসব নেতা প্রতিবাদ বিক্ষোভ করছিলেন তার মধ্যে মুহাম্মদ সফদার অন্যতম। সফদারকে গ্রেফতারের জন্য চাপ সৃষ্টি করতে তাকে অপহরণ করা হয়েছিল বলে জল্পনা চরমে উঠেছে।
এমনকি সেনা ও পুলিশের মধ্যে একটি সূত্রের বরাতে গোলাগুলির খবরও প্রকাশিত হয়েছে একটি আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যমে।
দাবি করা হয়েছে, এতে মারা গেছেন ১০ পুলিশ সদস্য। যদিও প্রশাসনের তরফে এ বিষয়ে কিছু বলা হয়নি।
এ বিষয়ে পদক্ষেপ নিতে পুলিশের ওপর চাপ বাড়ছিল। সোমবার এ নিয়ে সংবাদ সম্মেলন করেছেন মুহাম্মদ সফদারের স্ত্রী ও নওয়াজ শরীফের কন্যা, পিএমএলএনের নেত্রী মরিয়ম নওয়াজ।
তিনি বলেছেন, পুলিশপ্রধানের ফোন জব্দ করা হয়। তাকে নিয়ে যাওয়া হয় সেক্টর কমান্ডারের অফিসে। তাকে গ্রেফতারি পরোয়ানায় স্বাক্ষর করতে বাধ্য করা হয়।
এ বিষয়ে তদন্ত করতে সেনাবাহিনী এবং গোয়েন্দা প্রধানদের প্রতি প্রকাশ্যে আহ্বান জানান পাকিস্তান পিপলস পার্টির সভাপতি বিলাওয়াল ভুট্টো জারদারি।
তিনি অভিযোগ করেন, এ ঘটনা লাল রেখা অতিক্রম করেছে। অন্যদিকে পুলিশ কর্মকর্তা মেহেরকে অপহরণের প্রতিবাদে মঙ্গলবার কর্মবিরতি পালন করেছেন সিন্ধু প্রদেশের বিপুল সংখ্যক পুলিশ সদস্য।
বুধবার সিন্ধু প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী মুরাদ আলী শাহ বলেছেন, ‘রাজ্যের পুলিশ খুব কঠিন সময় পার করছে। এ সময় রাজ্য সরকার সিন্ধু পুলিশের পাশে আছে।
বুধবার পুলিশের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের আশ্বস্ত করে তিনি বলেছেন, ‘সরকার কোনো অবস্থাতেই এই বাহিনীকে করুণ পরিণতি হতে দেবে না। বর্তমানে পুলিশ শান্তি প্রতিষ্ঠায় চরম আত্মত্যাগ করে যাচ্ছে।’
সূত্রঃ দৈনিক যুগান্তর।