এ কে এম শামসুদ্দিনঃ আমরা দেশের বিশিষ্ট নাগরিক, বুদ্ধিজীবী, রাজনৈতিক নেতা ও বিচক্ষণ আইনজীবীদের মুখে প্রায়ই শুনতে পাই, যে ব্যক্তি অপরাধ করেন তার একমাত্র পরিচয় হল তিনি অপরাধী। তার কোনো রাজনৈতিক, ধর্মীয় বা গোষ্ঠীগত পরিচয় নেই। অপরাধী অপরাধীই। সম্প্রতি ঘটে যাওয়া বেশ কয়েকটি নৃশংস হত্যাকাণ্ড ও গণধর্ষণের ঘটনা দেশের মানুষের বিবেককে ব্যাপক নাড়া দিয়ে গেছে।
এসব ঘটনার পর বিশেষ পরিচিত কিছু রাজনৈতিক নেতার মুখে অভিযুক্ত ব্যক্তিদের রাজনৈতিক পরিচয়কে গুরুত্ব না দিয়ে তাদের অপরাধী হিসেবে চিহ্নিত করার আহ্বান জানাতে শুনেছি। কিন্তু সাধারণ মানুষ সে আহ্বানে সাড়া দেয়নি। লক্ষ করেছি, একের পর এক ধারাবাহিক অপরাধ সংঘটিত হওয়ার পর যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগের আঙুল উঠেছে, তাদের রাজনৈতিক পরিচয়ই সবার সামনে মুখ্য হয়ে উঠেছে।
এর মূল কারণ হল, সাম্প্রতিক সময়ে ঘটে যাওয়া অধিকাংশ কুকর্মের সঙ্গে ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক দলের সদস্যদের জড়িত থাকা। এ জন্য অপরাধীকে শুধু অপরাধী হিসেবেই নয়, বরং এসব ব্যক্তির রাজনৈতিক শক্তির প্রভাব খাটানোর বিষয়টি সাধারণ মানুষের কাছে বেশি গুরুত্ব পেয়েছে।
আবার এসব ঘটনার সঙ্গে যে শুধু রাজনৈতিক দলের সদস্যরাই জড়িত থাকে এমন নয়, প্রশাসনের কিছু সুযোগসন্ধানী ব্যক্তিও ক্ষমতাসীন দলের রাজনৈতিক দুর্বলতার সুযোগ নিয়ে বিভিন্ন অপকর্মে লিপ্ত হয়। এসব লোকের ধারণা, তাদের ঘাড়ে চড়ে ক্ষমতায় আসা সরকারের অধীনে যা ইচ্ছা তাই করে পার পাওয়া যায়। কক্সবাজারের টেকনাফ থানার তৎকালীন ওসি শ্রী প্রদীপ কুমার দাশের ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করার ঘটনা এর প্রকৃত উদাহরণ।
এ কথা বলার অপেক্ষা রাখে না যে, প্রশাসনের এসব কর্মকর্তার সব অপকর্মের ভুক্তভোগী হয় এ দেশের সাধারণ মানুষ। অথচ এসব মানুষ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে এমন অনেক ঘটনারই আইনি সহায়তা পান না। মামলা দিতে গেলে মামলা নেয়া হয় না। উচ্চবাচ্য করা তো দূরে থাক, উল্টো নিজের জীবনের ভয় ও পরিবারের অন্য সদস্যদের নিরাপত্তার কথা ভেবে দিনের পর দিন তারা নীরব থেকেন। যারা একটু সাহস করে গলার আওয়াজ উঁচু করার চেষ্টা করেন; সঙ্গে সঙ্গে তাদের টুঁটি টিপে ধরা হয়।
কক্সবাজারের সাংবাদিক ফরিদুল মোস্তফা এমন একটি ঘটনার জেরেই প্রদীপ কুমার দাশের নৃশংস অত্যাচারের শিকার হয়েছেন। এতসব ঘটনার পরও ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ যখন নীরব থাকেন, তখন প্রদীপের মতো দুর্ধর্ষ ব্যক্তিরা আরও বেশি বেপরোয়া হয়ে ওঠে। এক্ষেত্রে দুর্ভোগের শিকার মানুষের তখন কিচ্ছু করার থাকে না। বুকে পাথর চেপে নীরব হয়ে যান। বাংলাদেশের দক্ষিণ-পূর্বে অবস্থিত টেকনাফ জনপদে এতদিন আমরা এমন দৃশ্যই দেখে এসেছি।
তবে স্থানীয় পর্যায়ে কোনো একটা ঘটনাকে কেন্দ্র করে যদি জনবিস্ফোরণ ঘটে, তখন এসব অনাচারের কাহিনী একের পর এক দেশের মানুষের সম্মুখে উন্মোচিত হতে থাকে। সিনহা হত্যাকাণ্ডের ক্ষেত্রেও তাই হয়েছে। সিনহা হত্যার পর প্রদীপের দুই শতাধিক বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড ও নারী নির্যাতনের অবর্ণনীয় কাহিনী ধীরে ধীরে প্রকাশ পায় এবং তা দেশব্যাপী আলোড়ন সৃষ্টি করে। এ কারণেই হয়তো সিনহা হত্যার ঘটনায় এসআই লিয়াকতের নাম যত না উচ্চারিত হয়েছে, তার চেয়ে বেশি আলোচিত হয়েছে দুর্ধর্ষ প্রদীপ কুমার দাশের কুকীর্তির কাহিনী।
কিন্তু আশ্চর্যের সঙ্গে লক্ষ করেছি, এতদিন সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের ভেতর যারা প্রদীপকে লালন-পালন করে এসেছেন তাদের কেউ কেউ লিয়াকতের চেয়ে প্রদীপের নাম কেন বেশি আলোচিত হচ্ছে সে প্রশ্নও তুলেছেন! তবে সবচেয়ে স্পর্শকাতর বিষয় হল, ইদানীং এক শ্রেণির মানুষ সিনহা হত্যাকাণ্ডে জড়িত প্রদীপ কুমার দাশের ধর্মীয় পরিচয়কে উল্লেখ করে সব ঘটনাটিকে সাম্প্রদায়িকতার রঙে প্রলেপ দেয়ার চেষ্টা করছে।
সন্দেহ নেই, সাম্প্রতিককালে সংঘটিত বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের ঘটনাগুলোর মধ্যে সিনহা হত্যাকাণ্ডের ঘটনাটি দেশব্যাপী আলোড়ন সৃষ্টি করেছে সবচেয়ে বেশি। বহুল আলোচিত এ ঘটনা সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত ও কর্মরত সদস্যদের ভেতর ব্যাপক অসন্তোষের সৃষ্টি করেছে। অপরদিকে বিগত বছরগুলোয় এক শ্রেণির পুলিশের অবাধ চাঁদাবাজি, রাহাজানি, হয়রানি এবং সামান্য উছিলায় বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় দেশের সাধারণ মানুষের ভেতর অনেক আগে থেকেই অসন্তোষ দানা বেঁধেছিল।
সিনহা হত্যাকাণ্ড যেন সেই অসন্তোষের আগুনে ঘি ঢেলে দেয়ার কাজটিই করেছে। এ কারণে এর প্রতিক্রিয়া হয়েছে ব্যাপক। সিনহা একজন অবসরপ্রাপ্ত সেনাসদস্য এবং তার হত্যাকাণ্ডের পর সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত ও কর্মরত সদস্যরা ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচারের জন্য খুব দ্রুতই শক্ত অবস্থান গ্রহণ করেছেন, একইসঙ্গে দেশব্যাপী পুলিশের বেপরোয়া আচরণে অতিষ্ঠ ও বিক্ষুব্ধ মানুষও গুম, খুন ও বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের সুবিচারের আশায় সিনহা হত্যাকাণ্ডের ঘটনাকে কেন্দ্র করে সৃষ্ট প্লাটফর্মকে ব্যবহার করার চেষ্টা করেছে। তাতে দোষের কিছু দেখি না।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এবং দেশের প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রনিক সংবাদমাধ্যমগুলোও এ বিষয়ে জোরালো ভূমিকা পালন করছে। এরই ধারাবাহিকতায় প্রদীপের কুকীর্তির কিচ্ছা-কাহিনী প্রকাশ হলে তা দেশের মানুষের বিবেককে প্রচণ্ডভাবে নাড়া দেয়।
সিনহা হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হওয়ার পর এ ঘটনাটিকে একটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা হিসেবে চিহ্নিত করার চেষ্টা করা হলেও প্রদীপের অধীনে ধারাবাহিক বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের ঘটনাগুলোকে বিচ্ছিন্ন ঘটনা হিসেবে দেখার কোনো সুযোগ নেই। সিনহা হত্যাকাণ্ডের সময় পারিপার্শ্বিক পরিস্থিতি ও প্রত্যক্ষ সাক্ষীদের সাক্ষ্য বিবেচনা করে দেখা গেছে, প্রদীপ এ হত্যাকাণ্ডের অন্যতম ইন্ধনদাতা। লিয়াকত গুলি করেছে ঠিকই কিন্তু লিয়াকতের সরাসরি ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা হিসেবে প্রদীপ তার দায় এড়াতে পারেন না।
তাছাড়া সে মুহূর্তে প্রদীপের চলাফেরা, গুরুত্বপূর্ণ স্থান ও ব্যক্তিদের সঙ্গে সেল ফোনে যোগাযোগ করা, লিয়াকত কর্তৃক সিনহাকে গুলি করার ১৫-২০ মিনিটের মধ্যে ঘটনাস্থলে এসে হাজির হওয়া এবং মারাত্মকভাবে আহত সিনহার দেহের ওপর বর্বরোচিত আচরণ এ হত্যাকাণ্ডে তার সম্পৃক্ততাকে আরও স্পষ্ট করে তুলেছে। এ সবকিছু মিলে সাধারণ মানুষের মনে যে প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে তার প্রতিফলন আমরা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দেখেছি।
এর মধ্যে কিছু কিছু বিষয় অতিরঞ্জিত হওয়ার সম্ভাবনা উড়িয়ে দেয়া যায় না। কেউ কেউ হয়তো প্রদীপের ধর্মীয় পরিচয় উল্লেখ করে ইঙ্গিতপূর্ণ পোস্টও দিয়েছেন। তবে এসব ছিল মানুষের পুঞ্জীভূত ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ মাত্র। সিনহাকে লিয়াকত গুলি করলেও প্রদীপকে নিয়ে বেশি আলোচনার আরও একটি কারণ হল, পুলিশে চাকরিকালীন প্রদীপের কুকর্মের লম্বা রেকর্ড, তার বিরুদ্ধে অভিযোগের পাহাড় থাকলেও কোনো কার্যকর ব্যবস্থা না নেয়া এবং সর্বশেষ সিনহা হত্যাকাণ্ডে তার রহস্যজনক আচরণ।
প্রদীপ বাংলাদেশের দক্ষিণ-পূর্বের জনপদে যে ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছিল তা কারও অজানা ছিল না। কর্তৃপক্ষের চোখের সামনে সে নির্দ্বিধায় এসব নৈরাজ্য চালিয়ে গেছে। সিনহা হত্যার পর প্রতিবাদ ও ক্ষোভ প্রকাশের যে প্লাটফরম তৈরি হয়েছে, ভুক্তভোগী মানুষ যেন সে প্লাটফরমটি ব্যবহার করে তাদের এতদিনের চাপা ক্ষোভ প্রকাশ করেছে। এসব কিছু মিলিয়েই লিয়াকতের চেয়ে প্রদীপের নামটি উচ্চারিত হয়েছে বেশি। কিন্তু অত্যন্ত পরিতাপের বিষয়, একটি কায়েমি স্বার্থগোষ্ঠী এ অতি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়টি সচেতনভাবে এড়িয়ে প্রদীপের অপরাধ কর্মকে ধামাচাপা দেয়া ও সিনহা হত্যা মামলাকে প্রভাবিত করার প্রয়াসে সাম্প্রদায়িকতার গন্ধ খুঁজে বেড়াচ্ছেন।
সিনহা হত্যা মামলার তদন্ত প্রায় শেষ পর্যায়ে। শোনা যাচ্ছে, কিছুদিনের মধ্যেই চার্জশিট দেয়া হবে। বিচারকাজও হয়তো শুরু হয়ে যাবে। এরই মধ্যে প্রদীপ ও লিয়াকতের পক্ষে আইনজীবীও নিয়োগ দেয়া হয়ে গেছে। সিনহা হত্যা মামলাটি এমনই স্পর্শকাতর বিষয়ে পরিণত হয়েছে যে, অভিযুক্তদের পক্ষে কারা এসে পাশে দাঁড়াল, তাদের হয়ে কোন কোন আইনজীবী আইনি লড়াই লড়ছেন, দেশবাসী যেন তা নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করে চলেছে। কেউ কেউ হয়তো নিন্দা প্রকাশও করেছেন।
তবে দেশের সংবিধানে প্রদত্ত ক্ষমতাবলে দেশের যে কোনো ব্যক্তি, তিনি যত বড় অপরাধই করে থাকুন না কেন, তার আইনি সহায়তা পাওয়ার অধিকার আছে। তবে এ কথাও ঠিক, ক্ষমার অযোগ্য কোনো অপরাধীর পাশে যখন কেউ এসে দাঁড়ান, তখন দেশের মানুষ তা ভালো চোখে দেখে না; পাশে না দাঁড়ালেই বরং খুশি হন। যেমন সিলেটের এমসি কলেজ প্রাঙ্গণে গণধর্ষণের মামলায় অভিযুক্তদের পক্ষে আইনি লড়াইয়ে আইনজীবীরা বয়কট করায় দেশের মানুষ একযোগে তাদের অভিনন্দন জানিয়েছে।
কয়েকদিন আগে একটি অনলাইন পত্রিকায় প্রদীপের পক্ষে নিয়োগপ্রাপ্ত একজন আইনজীবীর একটি সাক্ষাৎকার প্রচারিত হয়েছে, যা এখনও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ঘুরে বেড়াচ্ছে। সাক্ষাৎকারটি বেশ তাৎপর্যপূর্ণ। সাক্ষাৎকারে এ আইনজীবী বেশকিছু স্পর্শকাতর বিষয় উত্থাপন করেছেন, যা ইতোমধ্যে অনেকের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে। উল্লিখিত এ আইনজীবী একজন মুক্তিযোদ্ধা, মানবাধিকার আন্দোলনের নেতা এবং সংখ্যালঘু একটি ধর্মভিত্তিক সংগঠনের সাধারণ সম্পাদকও।
সাক্ষাৎকার গ্রহণকারী তাকে প্রদীপের পক্ষে কেন আইনি লড়াই লড়তে যাচ্ছেন, জিজ্ঞেস করলে তিনি একটি দীর্ঘ বক্তব্য দেন। তার বক্তব্য অনুযায়ী, সিনহা হত্যাকাণ্ড মামলার প্রধান আসামি লিয়াকতকে পাশ কাটিয়ে প্রদীপের বিরুদ্ধে চারদিকে যে অভিযোগের ঝড় উঠেছে তাতে তিনি সাম্প্রদায়িকতার গন্ধ পেয়েছেন!
প্রদত্ত সাক্ষাৎকারে তার বিপরীতধর্মী বক্তব্যও শোনা যায়। তিনি নিজেকে মানবাধিকার লড়াইয়ের একজন যোদ্ধা হিসেবে দাবি করলেও দুই শতাধিক বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড ও নারী ধর্ষণের মতো মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগে অভিযুক্ত প্রদীপের পক্ষে আইনি লড়াই করা নীতিগত দিক থেকে কতটুকু যুক্তিসঙ্গত বলে তাকে প্রশ্ন করা হলে তিনি সংবিধানের ৩১ ধারা উল্লেখ করে কোনো নাগরিকের আইনি সহায়তা প্রদানে একজন আইনজীবী হিসেবে তার অবস্থানকে যুক্তিসঙ্গত বলে দাবি করেন।
একইসঙ্গে তিনি, দেশের যে কোনো বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের বিরুদ্ধাচরণ করারও দাবি করেন। তিনি নিজেকে মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে পরিচয় দিতে স্বচ্ছন্দ বোধ করেন; অথচ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের হোয়াইট হাউসে প্রিয়া সাহা নামক একজন মহিলা যখন ধর্মীয় বিশ্বাসের কথা উল্লেখ করে দেশবিরোধী বক্তব্য দিয়েছিলেন, তখন তিনি প্রতিবাদ না করে নীরব ছিলেন এবং সেই বক্তব্যকে প্রিয়া সাহার ব্যক্তিগত বক্তব্য বলে দায়িত্ব এড়িয়ে গিয়েছিলেন।
এ পরস্পরবিরোধী বক্তব্য ও অবস্থান তার মতো একজন বিশিষ্টজনের কাছে প্রত্যাশিত নয়। প্রদীপের বিরুদ্ধে আনা গুরুতর অভিযোগগুলো বিবেচনায় না নিয়ে তিনি প্রদীপের ধর্মীয় পরিচয়কে কেন সামনে নিয়ে এলেন এ বিষয়টি অনেকের কাছেই রহস্যজনক মনে হয়েছে। বিশেষ করে সিনহা হত্যাকাণ্ড ঘিরে সাম্প্রদায়িকতার যে ধোয়া তোলার চেষ্টা করা হচ্ছে, তা ন্যায়বিচারের পক্ষে কতটুকু সহায়ক হবে সে প্রশ্ন তো তোলাই যায়।
আইন তার নিজস্ব গতিতে চলবে এটাই প্রত্যাশা। কিন্তু পানি ঘোলা করে সেখানে মাছ শিকারের চেষ্টা করলে সেটাকে দুরভিসন্ধি বলাই যায়। কেউ যখন ন্যায়নীতি বিসর্জন দিয়ে, নিজ পেশার দোহাই দিয়ে কোনো স্বার্থ হাসিলের চেষ্টা করেন তখন এর পেছনে তার আসল উদ্দেশ্য নিয়ে মানুষ সন্দেহ প্রকাশ করতেই পারে। এ জন্যই হয়তো আশঙ্কা জাগে, তাহলে কি সিনহা হত্যা মামলাটিকে ভিন্ন খাতে নেয়ার চেষ্টা চলছে?
একেএম শামসুদ্দিন : অবসরপ্রাপ্ত সেনা কর্মকর্তা