ক্যাপ্টেন(অবঃ)মারুফ রাজুঃ বিদেশে সম্পদ গড়ার ক্ষেত্রে বাংলাদেশের রাজনীতিবিদের চেয়ে সরকারী চাকরিজীবীদেরর সংখ্যা অনেক বেশি বলে মন্তব্য করেছেন অবৈধ হাসিনা সরকারের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. একে আবদুল মোমেন। কানাডার টরোন্টোতে অবস্থানরত বাংলাদেশীদের ওপর গোপনে তথ্য সংগ্রহ করে এ পরিসংখ্যান পেয়েছেন বলে জানান তিনি।
বুধবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে (ডিআরইউ) ‘মিট দ্য রিপোর্টার্স’ অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন। এ সময় মন্ত্রী জানান, বঙ্গবন্ধুর পলাতক পাঁচ খুনির দু’জন আমেরিকা ও কানাডায় অবস্থান করছে। বাকি তিনজনের খোঁজ সরকার জানে না।
ডিআরইউ’র সভাপতি রফিকুল ইসলাম আজাদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানটি পরিচালনা করেন সাধারণ সম্পাদক রিয়াজ চৌধুরী।
এতে বিদেশে অর্থপাচার প্রসঙ্গে মন্ত্রী বলেন, কানাডার টরোন্টোতে থাকা বাংলাদেশিদের বিষয়ে খোঁজ নেয়া হয়েছে। আমার ধারণা ছিল সেখানে রাজনীতিবিদের সংখ্যা বেশি হবে। কিন্তু সংখ্যার দিক থেকে আমাদের সরকারি কর্মচারীর বাড়িঘর সেখানে বেশি আছে এবং তাদের ছেলেমেয়েরা সেখানে থাকে।
তিনি বলেন, আমার কাছে ২৮টি কেস এসেছে। এর মধ্যে রাজনীতিবিদ হলেন চারজন। এছাড়া কিছু আছেন তৈরি পোশাক শিল্পের ব্যবসায়ী। তবে বিভিন্ন মিডিয়ায় হাজার হাজার কোটি টাকা পাচারের যে তথ্য বের হচ্ছে, তার পরিমাণ তত নয় বলেও জানান তিনি। শুধু কানাডা নয়, মালয়েশিয়াতেও একই অবস্থা জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, তথ্য পাওয়া খুব কঠিন। এ জন্য বিদেশি সরকারও কিছুটা দায়ী। যেমন, সুইজারল্যান্ড ট্রান্সপারেন্সির কথা বললেও কে ব্যাংকে টাকা রাখল, সে তথ্য আমাদের দেয় না।
ভারতের সঙ্গে তিস্তা চুক্তির বিষয়ে মন্ত্রী বলেন, হঠাৎ করে এটি সই হবে, আমরা তা মনে করি না। তবে চুক্তি মোটামুটি তৈরি হয়ে আছে। কিন্তু সই হয়নি। ভারত সরকার কখনও বলেনি, এটি সই করবে না। তারা বলছে, তাদের অভ্যন্তরীণ সমস্যার কারণে সই করতে পারছে না। নদী বিষয়ে একটি টেকনিক্যাল কমিটি আগামী মাসে ভারত যাবে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বৈঠকের বিষয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, সম্ভবত ১৭ ডিসেম্বর বৈঠক হতে পারে। এখনও তারিখ ঠিক হয়নি।
যুক্তরাষ্ট্রে জো বাইডেনের জয় প্রসঙ্গে ড. মোমেন বলেন, ডেমোক্রেটিক পার্টির সঙ্গে আমরা আগেও কাজ করেছি। জো বাইডেন খুবই পরিপক্ব রাজনীতিবিদ। নতুন সরকারের সঙ্গে আমাদের কোনো অসুবিধা হবে না। প্রবাসীদেরও সুবিধা হবে।
এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, আমেরিকায় অবস্থানরত বঙ্গবন্ধুর খুনিকে ফেরাতে আশা পেয়েছি। তাদের অ্যাটর্নি জেনারেলকে সব তথ্য পাঠিয়েছি। তারা একটা সিদ্ধান্ত দেবে। কানাডায় আইনজীবী নিয়োগ করা হয়েছে। তবে এখনও সুরাহা হয়নি।
করোনাকালে দেশে ফেরত আসা প্রবাসীর সংখ্যা জানতে চাইলে তিনি বলেন, এ সময়ে এক লাখ ৬০ হাজার প্রবাসী দেশে এসেছেন। অধিকাংশ এসেছেন সৌদি থেকে।
উন্নত দেশের চেয়ে বাংলাদেশের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি ভালো আছে জানিয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, যুক্তরাষ্ট্রে প্রতি বছর প্রচুর বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড হয়। সে তুলনায় বাংলাদেশে অনেক কম। ধর্ষণও আমাদের দেশে প্রতি ১০ লাখে ৯ দশমিক ৮২ শতাংশ। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্রে সেটা আরও বেশি।