DMCA.com Protection Status
title="শোকাহত

আওয়ামীতন্ত্র প্রতিহত না করলে গণমাধ্যমের স্বাধীনতা কখনও ফিরবে নাঃ গয়েস্বর রায়।

ক্যাপ্টেন(অবঃ)মারুফ রাজুঃ বিএনপি জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেছেন, দেশে এখন গণতন্ত্র নয়, আওয়ামী-তন্ত্র চলছে।  এই আওয়ামীতন্ত্র প্রতিহত না করতে পারলে গণতন্ত্র ও গণমাধ্যমের স্বাধীনতা কখনোই ফিরে আসবে না। 

তিনি বলেন, সাংবাদিকরা কখনও ক্ষমতার জন্য আন্দোলন করে না।  তারা অন্দোলন করে মানুষের অধিকার, তাদের পেশাগত অধিকার আদায়ের জন্য।  মৌলিক অধিকার আদায়ের লক্ষ্যে সরকার পরিবর্তনের জন্য তারা রাজপথে নামে।

সোমবার দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবের মূল ফটকের সামনে বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন (বিএফইউজে) আয়োজিত এক প্রতীকী অনশন কর্মসূচিতে সংহতি প্রকাশ করে দেয়া বক্তৃতায় তিনি এসব কথা বলেন।  বর্ষিয়ান সম্পাদক আবুল আসাদ, বিএফইউজে’র সাবেক সভাপতি রুহুল আমিন গাজী ও ফটো সাংবাদিক শফিকুল ইসলাম কাজলসহ কারাবন্দি সব সাংবাদিকের মুক্তি দাবি এবং সাগর-রুনিসহ হত্যাকাণ্ডের শিকার সকল সাংবাদিকের খুনীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে এই অনশনের আয়োজন করা হয়।

বিএফইউজের নবনির্বাচিত সভাপতি এম আবদুল্লাহর সভাপতিত্বে এবং সহকারি মহাসচিব শফিউল আলম দোলন ও ডিইউজে নেতা এইচ এম আলামিনের পরিচালনায় এতে জাতীয় প্রেসক্লাব ও বিএফইউজে’র সাবেক সভাপতি শওকত মাহমুদ, দৈনিক নয়াদিগন্ত সম্পাদক আলমগীর মহিউদ্দিন, বিএফইউজের নবনির্বাচিত মহাসচিব নূরুল আমিন রোকন, বিএফইউজে’র সাবেক মহাসচিব এমএ আজিজ ছাড়াও অনশন কর্মসূচিতে সংহতি প্রকাশ করে বক্তব্য রাখেন- বাংলাদেশ লেবার পার্টির চেয়ারম্যান ডা. মুস্তাফিজুর রহমান ইরান, বিএনপির সহ-প্রচার সম্পাদক ও বাংলাদেশ কৃষিবিদ ইন্সটিটিউটের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক কৃষিবিদ শামীমুর রহমান শামীম, ডিআরইউ’র সাবেক সভাপতি ইলিয়াস হোসেইন, সিনিয়র সাংবাদিক ও কলামিস্ট আব্দুল আউয়াল ঠাকুর, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সাবেক সাধারণ সম্পাদক বাকের হোসেন ও জাহাঙ্গীর আলম প্রধান, ডিইউজে সহসভাপতি বাছির জামাল, বিএফইউজে’র সাবেক প্রচার সম্পাদক আসাদুজ্জামান আসাদ, নবনির্বাচিত কমিটির প্রচার সম্পাদক মাহমুদ হাসান, মফস্বল সাংবাদিক এসোসিয়েশনের সভাপতি সাখাওয়াত হোসেন ইবনে মঈন চৌধুরী, নির্বাহী সদস্য একেএম মহসীন, মো. জাকির হোসেন, ডিইউজে’র সাংগঠনিক সম্পাদক দিদারুল আলম দিদার, জনকল্যান সম্পাদক দেওয়ান মাসুদা সুলতানা, দপ্তর সম্পাদক ডিএম আমিরুল ইসলাম অমর, ডিইউজে’র ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক সম্পাদক আবুল কালাম, ডিইউজে’র নির্বাহী সদস্য মো. আব্দুল হালিম, রফিক লিটন, জেসমিন জুঁই, ডিআরইউ’র সাবেক যুগ্ম সম্পাদক তোফাজ্জল হোসেন প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।

পরে বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বিএফইইজে সভাপতি এম আব্দুল্লাহ ও মহাসচিব নূরুল আমিন রোকনকে পানি পান করিয়ে অনশন ভঙ্গ করান।

গয়েশ্বর চন্দ্র রায় তাঁর বক্তৃতায় সাংবাদিকদের দাবির প্রতি একাত্মতা প্রকাশ করে বলেন, অবিলম্বে প্রবীণ সম্পাদক আবুল আসাদ, সাংবাদিক রুহুল আমিন গাজী ও ফটো সাংবাদিক কাজলকে মুক্তি দিতে হবে। 

গোটা সাংবাদিক সমাজকে এই দুশাসনের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ হবার আহবান জানিয়ে গয়েস্বর বলেন, অন্যথায় একে একে আপনাদের সবাইকেই এই জুলুম-নির্যাতনের শিকার হতে হবে।  কেউ আপনাদের পাশে দাঁড়া বেনা।  আজ হয়তো কেউ কেউ ক্ষমতাসীনদের সাথে আছেন। কিন্তু এমন একদিন আসবে যখন আপনাদেরও অন্যদিকে যেতে হবে। অতএব এসব বাদ দিয়ে সাংবাদিক নির্যাতনের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধভাবে রুখে দাঁড়ান। 

সরকারের উদ্দেশে তিনি বলেন, সাংবাদিকদের কোনো ত্রুটি হলে প্রেস কাউন্সিলে অভিযোগ দেওয়া যেতে পারে।  থানা পুলিশ করাটা বেআইনি। আসলে সাংবাদিকরা দ্বিধাবিভক্ত হবার কারণেই আজ তাদের ওপরে এই নির্যাতনের মাত্রাটা বেড়ে গেছে।

প্রথম আলো সম্পাদক মতিউর রহমানের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা করার নিন্দা জানিয়ে গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, অন্য সম্পাদকদের এই হত্যা মামলার বিরুদ্ধে অবস্থান না নেয়াটা আরো নিন্দনীয় হয়েছে।  আসলে দেশে এখন শেখ হাসিনাতন্ত্র চলছে।  এই হাসিনাতন্ত্র দেশ থেকে বিতাড়িত না হওয়া পর্যন্ত এই দেশে গণতন্ত্র ফিরে আসবে না।  

সারা দেশের বিভিন্ন স্থানে ক্ষমতাসীনদের দুর্নীতি, লুটপাট আর গণহারে ধর্ষণের ঘটনার উল্লেখ করে তিনি বলেন, এই সরকার স্বাধীনতার চেতনা, দুর্নীতির চেতনা আর যৌন চেতনাকে এক করে ফেলেছে। এদের হাতে আর কিছুই নিরাপদ নয়। সর্বস্তরের মানুষকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে এদেরকে প্রতিহত করতে হবে।


সিনিয়র সাংবাদিক ও জাতীয় প্রেস ক্লাবের সাবেক সভাপতি শওকত মাহমুদ বলেন, দেশে গণতন্ত্র না ফিরে আসলে গণতন্ত্র ফিরে আসবে না। 

তিনি কারাবন্দী সাংবাদিকদের মুক্তি দাবি করে বলেন, সাংবাদিকদের এই দাবির সাথে জাতীয় মুক্তির দাবিকে একীভূত করতে হবে। জাতীয় মুক্তির আন্দোলনে তিনি সকল পেশাজীবীদের ঐক্যবদ্ধ হয়ে রাজপথে নেমে আসার আহবান জানান।

সভাপতির বক্তব্যে এম আবদুল্লাহ বলেন, গত এক যুগে সারাদেশে ৪১ জন সাংবাদিককে হত্যা করা হয়েছে। সর্বশেষ নারায়নগঞ্জে খুন হন ইলিয়াস হোসেন। একটি হত্যাকাণ্ডেরও বিচার হয়নি। তাই আর বসে থাকা যাবে না। অবিলম্বে আবুল আসাদ, রুহুল আমিন গাজী, কাজলসহ সকল কারাবন্দি সাংবাদিককে মুক্তি দিতে হবে। অন্যথায় বিএফইউজে সারাদেশে ধারাবাহিকভাবে রাজপথে আরো কঠিন কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে। 

 

 

facebook sharing button

messenger sharing button

twitter sharing button

pinterest sharing button

linkedin sharing button

print sharing button

Share this post

scroll to top
error: Content is protected !!