ক্যাপ্টেন(অবঃ)মারুফ রাজুঃ রাজধানীর পুরান ঢাকার বংশালের মোগলটুলির একটি স্কুল থেকে শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের নাম পরিবর্তনের প্রতিবাদে এলাকায় প্রচন্ড বিক্ষোভ করেছেন বিএনপির নেতা-কর্মীরা। বিক্ষোভের একপর্যায়ে তাঁরা স্কুলটির নতুন নাম কালি দিয়ে লেপটে দেন।
আজ রোববার দুপুরের দিকে বংশালের মোগলটুলি এলাকায় এই প্রতিবাদী বিক্ষোভ করেন বিএনপির নেতা-কর্মীরা। বিক্ষোভে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের সবশেষ নির্বাচনে বিএনপির মেয়র প্রার্থী ইশরাক হোসেন, বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা হাবিব-উন-নবী খানসহ দুই শতাধিক নেতা-কর্মী অংশ নেন।
এলাকাবাসী ও বিএনপির নেতা-কর্মীদের ভাষ্য, দলটির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের নামে মোগলটুলিতে ২০০৬ সালে স্কুলটি প্রতিষ্ঠা করা হয়। তখন নাম রাখা হয় ‘শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান উচ্চবিদ্যালয়’। ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন (ডিএসসিসি) পরিচালিত স্কুলটির নাম রেখেছিলেন তৎকালীন মেয়র সাদেক হোসেন খোকা। কিছুদিন আগে স্কুলটির নাম পরিবর্তন করা হয়। নতুন নাম রাখা হয় ‘মোগলটুলি উচ্চবিদ্যালয়’।
নাম পরিবর্তনের বিষয়ে ডিএসসিসির মুখপাত্র ও জনসংযোগ কর্মকর্তা মো. আবু নাছের বলেন, দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের সর্বোচ্চ ফোরাম বোর্ড সভায় স্কুলটির নাম পরিবর্তন করা হয়।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, আজ দুপুর পৌনে ১২টার দিকে বংশাল চৌরাস্তায় বিএনপির নেতা-কর্মীরা অবস্থান নেন। দুপুর ১২টার দিকে সেখানে হাজির হন ইশরাক হোসেন ও হাবিব-উন-নবী খান। পরে বিক্ষোভ মিছিল শুরু হয়। বংশাল মোড় থেকে মালিটোলা হয়ে মিছিলটি স্কুলটির সামনে যায়। বিএনপির নেতা-কর্মীরা স্কুলটির প্রধান ফটকের সামনে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ দেখান। তাঁরা একপর্যায়ে স্কুলের প্রধান ফটকে থাকা নতুন নামে কালি লেপটে দেন। এ সময় নেতা-কর্মীরা স্কুলের নাম পরিবর্তনের বিরুদ্ধে নানা স্লোগান দেন।
বিএনপির নেতা-কর্মীরা যখন স্কুলের নতুন নামের ওপর কালি মাখিয়ে দিচ্ছিলেন, তখন পাশেই পুলিশের কয়েকজন সদস্য উপস্থিত ছিলেন।
বিক্ষোভ মিছিল ও স্কুলের নতুন নাম মুছে দেওয়ার পর নবাবপুর রোডের জাবিন টাওয়ারের সামনে সংক্ষিপ্ত সমাবেশ করেন বিএনপির নেতা-কর্মীরা।
সমাবেশে ইশরাক হোসেন বলেন, ‘২০০৬ সালের ২৫ মার্চ আমার বাবা ও তৎকালীন মেয়র সাদেক হোসেন খোকা সিটি করপোরেশনের উদ্যোগে স্কুলটি নির্মাণ করেন।
আজকে ন্যক্কারজনকভাবে স্কুলটির নাম পরিবর্তন করা হয়েছে, যার কোনো প্রয়োজন ছিল না। না এটি ঢাকাবাসীর দাবি ছিল, না অন্য কারও দাবি ছিল।’
ইশরাক আরও বলেন, ‘এই সিটি করপোরেশনে যাঁরা দায়িত্বপ্রাপ্ত, তাঁরা নির্লজ্জ মানসিকতা দেখিয়েছেন। আপনারা সহনশীলতার রাজনীতিতে আসেন।’
সরকারকে প্রতিহিংসার রাজনীতি পরিহার করার আহ্বান জানিয়ে ইশরাক বলেন, নাম পাল্টিয়ে জনগণের মন থেকে জিয়াউর রহমানের নাম মুছে ফেলা যাবে না।
হাবিব-উন-নবী খান বলেন, জিয়াউর রহমানের নামে করা স্কুলের নাম পরিবর্তনের প্রতিবাদে এলাকার মানুষ ফুঁসে উঠেছে। তাদের সঙ্গে নিয়েই আজকের এই প্রতিবাদ।
ইতিহাসের খাতায় যা লেখা হয়েছে, নামফলক পরিবর্তন করে তা পরিবর্তন করা যাবে না।
হাবিব-উন-নবী খান আরও বলেন, ‘আজকে থেকে প্রতিবাদ শুরু হলো। এখন থেকে চলবে। যেখানেই অন্যায়ভাবে নামফলক পরিবর্তন করা হবে, সেখানেই প্রতিবাদ-প্রতিরোধ গড়ে তোলা হবে।’
সরেজমিনে দেখা যায়, স্কুলের প্রধান ফটকে নাম পরিবর্তন করা হলেও তার পাশে থাকা উদ্বোধনী ভিত্তিপ্রস্তরে এখনো ‘শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান উচ্চবিদ্যালয়’ নামের ফলক আছে। ওই ফলকে লেখা রয়েছে, ২০০৬ সালের ২৫ মার্চ স্কুলটির উদ্বোধন করা হয়েছে।