ক্যাপ্টেন(অবঃ)মারুফ রাজুঃ নরসিংদীর বেলাব উপজেলা চেয়ারসম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সমসের জামান ভূঁইয়া রিটনের বিরুদ্ধে ভাইস চেয়ারম্যানদের সম্মানী ভাতা, ভ্রমণ ভাতা ও আপ্যায়ন ভাতা আত্মসাতের অভিযোগে গঠিত তদন্ত কমিটি সাক্ষ্যগ্রহণ করেছে।
বৃহস্পতিবার দুপুরে নরসিংদী সার্কিট হাউজে তদন্ত কমিটির প্রধান অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার (যুগ্ম-সচিব) খান মো: নুরুল আমিনের নেতৃত্বে তদন্ত কার্যক্রম অনুষ্ঠিত হয়। তদন্তে সোনালী ব্যাংক ম্যানেজার, অভিযোগকারী, উপজেলা পরিষদের হিসাব রক্ষক ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার সাথে কথা বলা হয়।
ভাইস চেয়ারম্যানের লিখিত অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে, বেলাব উপজেলার পুরুষ ভাইস চেয়ারম্যান মো. মনিরুজ্জামান ভূঁইয়া জাহাঙ্গীর ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান শারমিন আক্তার খালেদা প্রতি মাসের ৩/৪ তারিখে সোনালী ব্যাংক বেলাব শাখা থেকে নিজেদের সম্মানী ভাতা উত্তোলন করেন।
গত বছরের নভেম্বরের মাসিক ভাতা ২৭ হাজার, ভ্রমণ ভাতা ৮ হাজার এবং আপ্যায়ন ভাতা পুরুষ ভাইস চেয়ারম্যানের ৪ হাজার ৪২১ টাকা ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যানের ৪ হাজার ৩৬৬ টাকার চেক যথারীতি অফিস সহকারী তৌফিক আফ্রাদের নিকট চাইলে জানায় উপজেলা চেয়ারম্যান পুরো চেক বই তার কাছ থেকে নিজের হেফাজতে নিয়ে গেছেন।
বিষয়টি নিয়ে চেয়ারম্যানকে জিজ্ঞাসা করলে তিনি এ বিষয়টি এড়িয়ে যান। পরবর্তীতে সোনালী ব্যাংকে গিয়ে জানতে পারি চেয়ারম্যান ৪ ডিসেম্বর সকালে আমাদের টাকা উত্তোলন করে ফেলেছেন। বিষয়টি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে অবহিত করলে তিনিও চেয়ারম্যানকে দ্রুত সুরাহা করার অনুরোধ করেন। কিন্তু দীর্ঘ দুই মাস অতিবাহিত হয়ে গেলেও বিষয়টি কোনো সুরাহা হয়নি। পরে আইনগত সুরাহা চেয়ে মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান শারমিন আক্তার খালেদার প্যাডে দুজনই স্বাক্ষর করে জেলা প্রশাসকের কাছে লিখিত অভিযোগ করেন।
এছাড়া স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী, শিল্পমন্ত্রী, স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের সচিব, বিভাগীয় কমিশনার কাছে অভিযোগের অনুলিপি দেন তারা।মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান শারমিন আক্তার খালেদা বলেন, চেয়ারম্যান আমাদের না জানিয়ে আত্মসাতের উদ্দেশে ব্যাংক থেকে টাকা উত্তোলন করে ফেলেছে। একাধিকবার টাকা চাইলেও সে আমার সন্মানী ভাতা দেয়নি। তাই বাধ্য হয়ে জেলা প্রশাসকের কাছে অভিযোগ দিয়েছি। পরে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়।
এই ধারাবাহিকতায় তদন্ত কমিটির প্রধান অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার (যুগ্ম-সচিব) খান মো: নুরুল আমিন স্যার বিষয়টি তদন্ত করেন এবং আমাদের সাক্ষ্য নেয়।
মাজারের ওরসে খরচের জন্য চেয়ারম্যানকে দেয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে খালেদা বলেন, সে তো আমার কোন আত্মীয় না। আমি কেন তাকে টাকা দিবো ? অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় এখন সে নানা ফন্দি আটছে।
এ বিষয়ে সোনালী ব্যাংকের বেলাব শাখার ব্যবস্থাপক আমিনুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, চেয়ারম্যান সাহেব ভাইস চেয়ারম্যানদের না জানিয়ে টাকাটা উত্তোলন করে ফেলেছেন। তদন্ত কমিটির প্রধান অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার স্যার বিষয়টি আমার কাছে জানতে চেয়েছে, যা হয়েছে আমি তাই উপস্থাপন করেছি।
এদিকে উপজেলা চেয়ারম্যান সমসের জামান ভূঁইয়া রিটন বলেন, অভিযোগের বিষয়ে অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার স্যার আমার কাছে জানতে চাইলে আমি জানিয়েছি, একটি মাজারের ওরসে খরচের জন্য ভাইস চেয়ারম্যানরা আমাকে চেক দিয়েছিল। পরে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে আবার আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ দিয়েছে। এখন আমি কি বলবো???