DMCA.com Protection Status
title="৭

দেশনায়ক তারেক রহমানের সভাপতিত্বে বিএনপি স্থায়ী কমিটির গুরুত্বপূর্ন ভার্চুয়াল সভা অনুষ্ঠিত।

  ক্যাপ্টেন(অবঃ)মারুফ রাজুঃ  বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির এক গুরুত্বপূর্ন ভার্চুয়াল সভা গত ৫.১২.২০২০ তারিখে বিকাল ৪.৩০ মি: অনুষ্ঠিত হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান দেশনায়ক তারেক রহমান।

সভায় উপস্থিত ছিলেন যথাক্রমে —

১।  ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন।

২।  ব্যারিস্টার মওদুদ আহমেদ।

৩।  ব্যারিস্টার জমির উদ্দিন সরকার।

৪।  মির্জা আব্বাস।

৫।  বাবু গয়েশ্বর চন্দ্র রায়।

৬।  ড. আব্দুল মঈন খান।

৭।  মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। (দলীয় মহাসচিব)

৮।  জনাব আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী।

৯।  বেগম সেলিমা রহমান।

১০।  জনাব ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু।

সভায় আলোচ্য বিষয় সমূহ আলোচনা করা হয় এবং আলোচনা শেষে নিন্মে বর্ণিত সিদ্ধান্ত সমূহ গৃহীত হয়ঃ

১।  সভায় ২৯ নভেম্বর ২০২০ তারিখ জাতীয় স্থায়ী কমিটির সভায় গৃহীত সিদ্ধান্ত সমূহ পাঠ করা হয় এবং সর্বসম্মতিক্রমে পঠিত সিদ্ধান্ত সমূহ অনুমোদিত হয়।

২।  সভায় আগামী ১৬ ডিসেম্বর মহান বিজয় দিবস এবং ১৪ ডিসেম্বর শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস যথাযোগ্য মর্যাদার সঙ্গে পালন করবার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। তবে বৈশ্বিক  মহামারী নবেল কোভিড-১৯ করোনা ভাইরাসের দ্বিতীয় দফায় আরও মারাত্মক রূপে সংক্রমনের ফলে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নির্দেশনা অনুযায়ী জনসমাবেশ পরিহার করে সকল কর্মসূচি গ্রহণের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।

৩।  মহান বিজয়ের মাসে সভা, সমাবেশে নিষেধাজ্ঞা প্রদান করে ঢাকা মহানগর পুলিশ যে নির্দেশ জারি করেছে তা মুক্তিযুদ্ধের চেতনার ওপর আবারও কালিমা লেপন করেছে। নিজেদের হীন রাজনৈতিক উদ্দেশ্য চরিতার্থ করবার জন্য এবং একদলীয় শাসন ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করবার চক্রান্তে এই ধরনের নির্দেশ প্রদান করে জনগণের নূন্যতম গণতান্ত্রিক অধিকার হরণ করা হয়েছে বলে অভিমত পোষন করা হয়। সভা এই ধরনের নির্দেশ গণতান্ত্রিক পরিসরকে আরও সংকুচিত করবে বলে আশংকা প্রকাশ করে এবং এই ধরনের স্বৈরাচারী কর্মকান্ড থেকে বিরত থাকবার আহ্বান জানায়।

৪।  দ্বিতীয় পর্যায়ে ৬১টি পৌরসভা নির্বাচন প্রসঙ্গে আলোচনা হয়। দলীয় সাংগঠনিক ও রাজনৈতিক কর্মকান্ড অব্যাহত রাখার স্বার্থে স্থানীয় সরকার নির্বাচনে অংশগ্রহনের সিদ্ধান্ত বহাল রাখা হয়।

৫।  আওয়ামী লীগের অনির্বাচিত সরকার ক্ষমতা দখলের পর থেকে প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধাদের বাদ দিয়ে ভূয়া মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকাভুক্ত করার কাজ শুরু করেছে। গণমাধ্যমে প্রকাশিত ২১ হাজার ভুয়া মুক্তিযোদ্ধার অন্তর্ভুক্তি এবং গত ৫ বছরে প্রায় ১৫০০ কোটি টাকা লুঠপাটের সংবাদে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ ও তীব্র নিন্দা জানায়। প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকাভুক্ত করার জন্য নিরপেক্ষতা নিশ্চিত করে সম্পূর্ণ নিরপেক্ষ সংস্থা কর্তৃক একটি সঠিক তালিকা প্রস্তুতের আহ্বান জানানো হয়।

৬।  সভা মিয়ানমার থেকে আগত রোহিঙ্গা শরণার্থীদের ভাসান চরে স্থানান্তরের সরকারি সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে। বিশেষ করে জাতিসংঘ এবং অন্যান্য আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর আপত্তির মুখে এই স্থানান্তরের সিদ্ধান্ত ও তা বাস্তবায়নের এই প্রক্রিয়াকে আত্মহননের প্রক্রিয়া হিসাবে অভিহিত করা হয়। এর ফলে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের সম্মান ও নিরাপত্তার সাথে প্রত্যাবর্তনের দাবি দুর্বল হবে বলে সভা মনে করে। সভা পর্যবেক্ষণ করেছে যে, বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকার রোহিঙ্গা প্রত্যাবর্তনের বিষয়ে তাদের আন্তরিকতা ও সদিচ্ছা প্রমাণে ব্যর্থ হয়েছে। দীর্ঘ দিনেও এই সমস্যাটিকে কার্যকারিভাবে আন্তর্জাতিকীকরন করতে সরকার চরমভাবে ব্যর্থ হয়েছে। ফলশ্রুতিতে প্রত্যাবর্তন প্রক্রিয়া শুধু বিলম্বিত নয়-অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। ভাসান চরে স্থায়ী বসবাসের ব্যবস্থা মিয়ানমারের অবস্থান দৃঢ় করবে বলে মনে করে এবং বাংলাদেশের অবস্থান আরও দুর্বল হয়ে পড়ছে।

সভা জাতিসংঘ, ইউরোপিয়ন ও অন্যান্য আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর উদ্বেগ গুরুত্ব অনুধাব করে, রোহিঙ্গা শরণার্থীদের মিয়ানমারে প্রত্যাবর্তনের স্বার্থে এই স্থানান্তর প্রক্রিয়া অবিলম্বে বন্ধ করে মিয়ানমারের ওপর আন্তর্জাতিক চাপ বৃদ্ধি করার জন্য কূটনৈতিক উদ্যোগ বৃদ্ধি করার জন্য সরকারকে আহ্বান জানায়। সভা মনে করে স্থানান্তরের প্রক্রিয়া-মিয়ানমারের স্বার্থ পূরন করতে সাহায্য করবে এবং এই সমস্যা বাংলাদেশের সার্বভৌমত্বকে বিপন্ন করবে অন্যদিকে বাংলাদেশের পরিবেশ, অর্থনীতি ও রাজনীতিকে দীর্ঘস্থায়ী নেতিবাচক প্রভাব বিস্তার করবে।

সভায় অবিলম্বে এই প্রক্রিয়া বন্ধ করে জাতিসংঘের মাধ্যমে রোহিঙ্গা প্রত্যাবর্তনের উদ্যোগ আরও শক্তিশালী করার আহ্বান জানানো হয়।

৭।  আগামী ৬ ডিসেম্বর স্বৈরাচার এরশাদের পতন ও গণতন্ত্র দিবস যথাযোগ্যভাবে পালনের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।

৮।  আগামী ১০ ডিসেম্বর বিশ্ব মানবাধিকার দিবস পালনের জন্য দলের মানবাধিকার বিষয়ক সেল গৃহীত কর্মসূচি যথাযথভাবে পালনের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।

৯।  চট্টগ্রামে দক্ষিণ চট্টগ্রাম সাংগঠনিক জেলার সাতকানিয়া উপজেলায় ৬টি ইউনিয়ন সমন্বয়ে একটি পৃথক সাংগঠনিক ইউনিট প্রতিষ্ঠার প্রস্তাব গৃহীত হয় এবং সংশ্লিষ্ট অঞ্চলের নেতৃবৃন্দের সঙ্গে আলোচনা সাপেক্ষে ইউনিটের নামকরনের প্রস্তাব গৃহীত হয়।

১০।  সভায় ৫/১২/২০ তারিখে কুষ্টিয়ায় আওয়ামী যুবলীগের সন্ত্রাসীদের দ্বারা কুষ্টিয়া জেলা বিএনপি কার্যালয় ভাঙচুর এবং পরবর্তীতে কুষ্টিয়া জেলা বিএনপি’র সাধারণ সম্পাদক জনাব সোহরাব হোসেন এবং ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনায় তীব্র ঘৃনা ও নিন্দা প্রকাশ করা হয়।

সভা মনে করে আওয়ামী লীগ জনগণ হতে বিচ্ছিন্ন হয়ে ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য এই ঘৃন্য সন্ত্রাসী কার্যকলাপে লিপ্ত হয়েছে। মধ্যযুগীয় সন্ত্রাসের মাধ্যমে গণতন্ত্রকে হত্যা করে একদলীয় শাসন প্রতিষ্ঠা করার হীন ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়েছে। জনগণের মৌলিক অধিকার হরণ করে, কথা বলার অধিকার, ধর্মীয় বিশ্বাসকে আঘাত করা, গণতন্ত্রকে ধ্বংস করে নিজেদের অপকর্মকে আড়াল করবার জন্য এবং দুর্নীতি, করোনা ভাইরাস নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থতা, জনগণের জীবন ও জীবিকার নিশ্চয়তা বিধানে ব্যর্থতার কারণে সৃষ্ট জন অসন্তোষকে ভিন্নখাতে প্রবাহিত করার জন্য ঔপনেবিশক পন্থায় হিংসা ও সাম্প্রদায়িকতার উস্কানি দিয়ে জনগণকে বিভ্রান্ত করার হীন অপচেষ্টা চালাচ্ছে। সভা মনে করে আওয়ামী লীগের এইসব পুরোনো অপ-কৌশলে জনগণকে বিভ্রান্ত করা যাবে না। গণতান্ত্রিক অধিকার ফিরে পাওয়ার জন্য বাংলাদেশের সকল দেশপ্রেমিক মানুষকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানানো হয় এবং অবিলম্বে কুষ্টিয়ায় বিএনপি কার্যালয় ভাঙচুর এবং কুষ্টিয়া বিএনপি’র সাধারণ সম্পাদকের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলা ভাঙচুর ও অগ্নি সংযোগের ঘটনার সাথে জড়িত দুবৃত্তদের গ্রেফতার এবং আইনের আওতায় নিয়ে আনার দাবি জানান।

 

Share this post

scroll to top
error: Content is protected !!